নির্মাণের পাঁচ বছরেই ফাটল ধরেছে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ দুটি সংস্থা এনজিও ব্যুরো ও পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কার্যালয় ভবনে। রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ লোকেশন ও উচ্চ প্রশাসনিক এলাকা শেরে বাংলানগরের অবস্থিত পাঁচতলা এ ভবনের কমপক্ষে তিনটি তলাতে এ ধরনের ফাটল ধরেছে।
ভবনটি ২০১৭ সালের ১৮ জুন বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থাসমূহের (এনজিও) নিয়ন্ত্রক সংস্থা এনজিও ব্যুরোর কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সংস্থাটির প্রধান কার্যালয় ছিল সেগুনবাগিচার মৎস্য ভবনে। ভবনটির তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম তলাতে সংস্থাটির কার্যালয় অবস্থিত। একই সময়ে ভবনটির দ্বিতীয় তলাতে প্রধান কার্যালয় স্থাপন করে সরকারের আরো এশটি গুরুত্বপূর্ণ সংস্থা পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি)। দুটি সংস্থাই সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অধীন। ভবনটির চতুর্থ, তৃতীয় ও বেজমেন্টের ছাদে ফাটল দেখা দিয়েছে। চতুর্থ তলার লাইব্রেরি ও মাঝের ফ্লোরে ফাটলগুলো ক্রমান্বয়ে বড় হচ্ছে।
ভবনের এনজিওবিষয়ক ব্যুরোতে ৬৭ জন এবং পিপিপির প্রধান কার্যালয়ের দুটি অফিসই গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীর অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা মনিটরিং করেন। এখানে সারাদেশের এনজিওর কর্মকর্তারা যেমন আসেন। আসেন সরকারের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) প্রজেক্টের সাথে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও দেশি-বিদেশে উদ্যোক্তারা। সেদিক থেকে ভবনটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ফাটলের কারণে কর্মকর্তাদের মাঝে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। ফাটল নিয়ে কর্মকর্তাদের মধ্যে ভীতি কাজ করলেও অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের ভয়ে তারা মুখ খুলতে পারছেন না। কিন্তু ভবনের ফাটল বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শঙ্কা বাড়ছে বলে জানালেন এই ভবনের সংশ্লিষ্ট ফ্লোরে কর্মরত কর্মচারীরা।
ভবনে দায়িত্বরত একজন দায়িত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ভোরের আকাশকে জানান, ২০১৭ সালে ভবনটি প্রধানমন্ত্রী অথবা প্রধানমন্ত্রীর অফিস সংশ্লিষ্ট ঊর্র্ধ্বতন কর্মকর্তাকে দিয়ে উদ্বোধন করিয়ে নিয়ে ভবনের কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। পরবর্তীতে আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ছাড়াই ভবনে কার্যক্রম শুরু হয়। ভবনের সামনের সড়ক ভাঙাচুরা, আশপাশের নির্মাণাধীন ও জরাজীর্ণ ভবন থাকার কারণে সরকারের ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তাকে উদ্বোধনের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ভবনের কোথাও উদ্বোধন ভিত্তিরপ্রস্তর দেখা যায়নি। বর্তমানে অফিস ভবনটি আশপাশে সুরম্য ভবনের পাশাপাশি প্রশস্ত সড়কের প্রস্তাব করা হয়েছে। পরিণত হয়েছে আধুনিক স্থাপনাসমৃদ্ধ একটি অভিজাত এলাকাতে। এনজিও ব্যুরো কার্যালয়ের বাহিরাবরণেও সেই আভিজাত্যের ছাপ রয়ে গেছে। কিন্তু ভেতরে ফাটল শঙ্কা তৈরি করেছে।
বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে এনজিও ব্যুরোর প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত উপপরিচালক (সাধারণ) মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ভোরের আকাশকে বলেন, ভবনের কর্মরত কর্মীদের শঙ্কা থাকা স্বাভাবিক। বিষয়টি আমরা আন্তরিকতার সাথে বিবেচনা করছি। ফাটলটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য কমিটি গঠন করা হবে। কমিটি তদন্ত করে দেখবে এ ফাটল কী ধরনের সমস্যা তৈরি করতে পারে, ফাটল সংস্কারযোগ্য, ফাটল ভবনের কাঠামোর উপরি অংশে বড় কোনো সমস্যা নয়, সংস্কার করা সম্ভব? নাকি এ ফাটল আদৌ কোনো সমস্যা হবে না।
মন্তব্য