-->
শিরোনাম

দ্বিতীয় দিনেও ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়

নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বিতীয় দিনেও ট্রেনে শিডিউল বিপর্যয়

পরিবারের সঙ্গে ঈদ করার জন্য বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীর মানুষ। বুধবার ভোর থেকে রেলযোগে ঘরে ফেরার আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। ঈদ যাত্রার প্রথম দিনের মত দ্বিতীয় দিন বৃহস্পতিবারও রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশনে অতিরিক্ত যাত্রীদের অতটা ভিড় দেখা যায়নি। তবে প্রথম দিনের মতো ২য় দিনেও বেশ কিছু শিডিউল বিপর্যয় হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইনে এবং কাউন্টারে টিকিট না পাওয়ায় অনেক যাত্রীকে টিকিট ছাড়াই ট্রেনে ভ্রমন করতে দেখা গেছে। এবছর রেল কর্তৃপক্ষ স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করছে না।

যাত্রীরা বলছেন, অনলাইন কিংবা কাউন্টার থেকে সরাসরি তাদের টিকিট কাটতে এবার অনেক ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে। তবে সড়কপথের বিকল্প হিসেবে রেলপথে ভোগান্তি কম। নির্ধারিত সময়ে ট্রেন স্টেশন ছেড়ে গেলে যাত্রাপথে কোনো সমস্যা হবে না, এমনটাই আশা করছেন যাত্রীরা।

ঈদযাত্রার দ্বিতীয় দিন সকালের দিকের ট্রেন ধরতে অনেক আগেই কমলাপুর স্টেশনে চলে এসেছেন যাত্রীরা। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের তথ্য মতে, এবারের ঈদযাত্রায় প্রতিদিন ৫৩ হাজার যাত্রী ট্রেনে রাজধানী ঢাকা থেকে দেশের বিভিন্ন এলাকার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। এর মধ্যে শুধু আন্তঃনগর ট্রেনে আসন থাকবে ২৭ হাজারের বেশি।

সকাল থেকে যতগুলো ট্রেন কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে গেছে, সবগুলো ট্রেনেই ছিল পরিপূর্ণ যাত্রী। তবে বেশ কিছু যাত্রীকে টিকিট ছাড়া ট্রেনে উঠতে দেখা গেছে। এসব স্ট্যান্ডিং যাত্রী জানান, ট্রেনের টিকিট না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই টিকিট ছাড়া ট্রেনে যাত্রা করছেন। এসময় অনেক যাত্রীকে ট্রেনের দ্বায়িত্বে থাকা টিটির কাছ থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিতে দেখা গেছে।

স্ট্যান্ডিং টিকিটের ব্যাপারে বাংলাদেশ রেলওয়ে স্টেশন মেনেজার মোহাম্মদ মাসুদ সারওয়ার জানান, কাউন্টারে এখন পর্যন্ত স্ট্যান্ডিং টিকিট বিক্রি করছি না। তবে আমরা যাত্রীদের অনুরোধ করব বিনা টিকিটে যেন যাত্রা না করেন।

মো. হানিফ রাজশাহী যাচ্ছিলেন বনলতা এক্সপ্রেসে করে। ট্রেনটি ২ নং প্লাটফর্ম থেকে দুপুর ১ টা ৩০ মিনিটে ছেড়ে যায়। যাওয়ার আগে কথা হয় তার সঙ্গে। তিনি বলেন, অনলাইনে টিকিট কাটতে ব্যর্থ হওয়ায় বিনা টিকিটেই ট্রেনে উঠে পড়েছেন। ঈদে বাড়ি তো যাওয়া লাগবে। পরবর্তীতে টিটির কাছ থেকে ৩৯৫ টাকায় স্ট্যান্ডিং টিকিট ক্রয় করেছেন।

ঈদযাত্রায় কেন ট্রেনকে বেছে নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ ভোরের আকাশকে বলেন, ‘আরামদায়ক বলে ট্রেনে যাওয়া। ট্রেন ছাড়া বাসে যাতায়াত করলে জ্যামের কারণে রজশাহী পৌঁছাতে ১৮ থেকে ২০ ঘণ্টার মতো লেগে যায়।’

গতকালও তিনটি ট্রেন দেরি করেছে বলে জানিয়েছে কমলাপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ।

কর্তৃপক্ষ বলছে, দ্বিতীয় দিন ১১৮টি ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে ঢাকার স্টেশন থেকে ছেড়ে যাবে এবং আসবে। চিলাহাটিগামী নীলসাগর এক্সপ্রেসের বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে স্টেশন ছাড়ার কথা ছিল। সেটি দুই ঘণ্টা ১০ মিনিট দেরি করে স্টেশন ছেড়েছে সকাল ৮টা ৫০ মিনিটে।

এছাড়া চট্টগ্রামগামী কর্ণফুলী কমিউটার ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনের দুই নম্বর প্ল্যাটফর্ম থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। কিন্তু, ওই ট্রেনটি ১ ঘণ্টা ৫ মিনিট দেরি করে স্টেশন ছেড়ে যায় সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে।

কমলাপুর রেলস্টেশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনটি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে স্টেশন ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, নির্ধারিত সময়ের চেয়ে দুই ঘণ্টা দেরি করে স্টেশনে আসে রংপুর এক্সপ্রেস। এ কারণে অন্য গন্তব্যের বিকল্প একটি ট্রেনে করে রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রীদের পাঠানো হয়। কোন ট্রেন দেরিতে আসা, দেরি করে ছাড়া এসব কারণে প্ল্যাটফর্মে অপেক্ষারত যাত্রীদের জন্য পর্যাপ্ত বসার জায়গার ও ফ্যানের সংকট দেখা গেছে। এর ফলে গরমে অপেক্ষারত যাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিশেষ করে যারা নারী ও শিশুদের সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন, তাদের ভোগান্তি সবচেয়ে বেশি।

মন্তব্য

Beta version