-->
শিরোনাম

ট্রেনে উপচেপড়া ভিড়, সিডিউল বিপর্যয়

ইফ্ফাত শরীফ
ট্রেনে উপচেপড়া ভিড়, সিডিউল বিপর্যয়
কমলাপুর স্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়

কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে তৃতীয় দিনের মতো ঢাকা ছেড়েছেন যাত্রীরা। তিনটি ট্রেন স্টেশনে আসতে বিলম্ব হয়েছে। ঈদযাত্রার প্রথম দুই দিন অনেকটা স্বাভাবিক থাকলেও গতকাল শুক্রবার উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে স্টেশনে।

আগের দিন বৃহস্পতিবার শেষ কর্মদিবস ছিল। গতকাল থেকে ছুটি শুরু হওয়ায় বাড়ির পথে পাড়ি দিয়েছেন হাজারো মানুষ। প্ল্যাটফরমে দাঁড়ানোর মতো ঠাঁই ছিল না।

শুক্রবার কমলাপুর স্টেশনে সরেজমিন দেখা যায়, সকাল থেকেই রেলস্টেশনে বাড়তে থাকে মানুষের চাপ। গেটে টিকিট চেক করে স্টেশনের ভেতরে প্রবেশ করতে দিচ্ছেন নিরাপত্তা প্রহরীরা। আবার

অনেকে নির্ধারিত সময়ের আগেই স্টেশনে এসে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছেন। যানজট ও ট্রেন ধরতে না পারার আশঙ্কা থেকেই অনেক আগে স্টেশনের উদ্দেশে রওনা হন যাত্রীরা।

যাদের বাসা দূরে, তারা আগেই রওনা দিয়েছেন। আর যাদের কাছাকাছি এলাকা তারাও নির্ধারিত সময়ের আগেই রওনা দিয়েছেন স্টেশনে। সিলেট গামি কালকিনি এক্সপ্রেসের যাত্রী নোভেল নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই স্টেশন এসেছেন।

ট্রেন বিকেল ৩টারর দিকে ছাড়ার কথা থাকলেও তিনি নির্ধারিত সময়ের ১ ঘণ্টা আগে এসেছেন। তিনি ভোরের আকাশকে জানান, যানজটের কারণে ট্রেন যেন মিস না হয়, তাই অনেক আগেই চলে এসেছেন স্টেশনে।

এদিন সকাল থেকে যতগুলো ট্রেন কমলাপুর রেলস্টেশন ছেড়ে গেছে, সবগুলো ট্রেনেই ছিল পরিপূর্ণ যাত্রী। তবে বেশকিছু যাত্রীকে টিকিট ছাড়া ট্রেনে উঠতে দেখা গেছে। এসব স্ট্যান্ডিং যাত্রীরা জানান ট্রেনের টিকিট না পাওয়ায় বাধ্য হয়েই টিকিট ছাড়া ট্রেনে যাতায়ত করছেন।

এ সময় অনেক যাত্রীকে ট্রেনের দায়িত্বে থাকা টিটির কাছ থেকে স্ট্যান্ডিং টিকিট নিতে দেখা গেছে। এদিকে স্ট্যান্ডিং টিকিটের বিষয়ে কমলাপুর রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার মো. আমিনুল হক বলেন, গত কয়েকদিনের তুলনায় শুক্রবারে যাত্রীর চাপ বেড়েছে।

সকাল থেকে সবগুলো ট্রেন সময়মতো ছেড়ে গেছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীর চাপ আরো বাড়বে। যারা টিকিট কাটতে পারেননি, তাদের কিছু আন্তঃনগর ট্রেনের স্ট্যান্ডিং টিকিট দেওয়া হচ্ছে, যাতে সবাই বাড়ি ফিরতে পারে।

মো. আমান উল্লাহ রাজশাহী কমিউটারে করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ যাচ্ছেন। ট্রেনটি দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে ৭নং প্ল্যাটফরম থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ২ ঘণ্টা ২০ মিনিট দেরিতে কমলাপুর থেকে রওনা করে।

গরম টিকিট ভোগান্তি সিডিওল বিপর্যয় সব মিলিয়ে ঈদযাত্রা কেমন হচ্ছে- এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘প্রায় ৯ ঘণ্টা কষ্ট করে টিকিট কাটলাম। এখনো দেখি ট্রেন লেট। বাচ্চাদের নিয়ে কোনোমতে বাড়ি পৌঁছাতে পারলেই হয়।

পরিবারের সবাইকে নিয়ে ঈদ করব- এইটাই বড় আনন্দের।’ স্পেশাল ট্রেন চলাচলের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত স্টেশন ম্যানেজার আমিনুল হক বলেন, ‘আজকে তৃতীয় দিনের মতো ঈদযাত্রা করছেন মানুষ। আজ (শুক্রবার) সারা দিনে ১২২টি ট্রেন ঢাকা স্টেশন থেকে আসবে এবং যাবে।

এর মাঝে চারটি স্পেশাল ট্রেন আছে। ট্রেনগুলোর একটি ঢাকা-খুলনা-ঢাকা এবং অন্যটি ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা রুটে চলাচল করছে। ঈদের দিন কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সবচেয়ে বড় ঈদ জামাতে মানুষের উপস্থিতি জন্য আরো দুই জোড়া স্পেশাল ট্রেন চলাচল করবে।

একটি হচ্ছে ভৈরব থেকে কিশোরগঞ্জ, আরেকটি হচ্ছে ময়মনসিংহ থেকে কিশোরগঞ্জ। এ ট্রেন শুধু ঈদের দিনই চলাচল করবে।’

শুক্রবার কমলাপুর স্টেশনে তিনটি ট্রেন আসতে এবং ছাড়তে দেরি হয়। দেরি হওয়ার বিষয়ে আমিনুল বলেন, ‘তিনটি ট্রেন (নীলসাগর এক্সপ্রেস, সুন্দরবন এক্সপ্রেস, রাজশাহী কমিউটার) স্টেশনে আসতে বিলম্ব করলেও আমরা দ্রুত চেষ্টায় আধাঘণ্টায় সেগুলোকে গন্তব্যে ছেড়ে দিতে পেরেছি।

আমরা চেষ্টা করেছি কীভাবে এবং কত দ্রুত ঢাকা থেকে ট্রেনগুলোকে ছেড়ে দেওয়া যায়।’ দেরির কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘দেড়ি হওয়া ট্রেনগুলোর যাত্রাপথ অনেক দূর হওয়ায় যাত্রী ওঠানামা ও বিরতিতে কিছু সময় অতিরিক্ত ব্যয় হওয়ায় এ সমস্যা হয়েছে।

আমরা চেষ্টা করছি, কীভাবে এ সময় কমিয়ে আনা যায়। বঙ্গবন্ধু সেতু এক লেন হওয়ায় সেখানে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে। একটি ট্রেনের সময় এগিয়ে আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, গতকাল নীলসাগর ট্রেনটি ২ ঘণ্টা লেট ছিল। আমরা আজকে সেটিকে ১ ঘণ্টায় নামিয়ে নিয়ে এসেছি।

মন্তব্য

Beta version