সিরাজগঞ্জের মালেক মিয়া। ঢাকার একটি গার্মেন্টসে চাকুরী করেন। গতকাল পেয়েছেন ঈদের ছুটি। পরিবারের সঙ্গে ঈদের ছুটি কাটাতে গতকাল রাতে রওনা দিয়েছেন তিনি। ভোরের আকাশকে তিনি বলেন, 'ঈদ বলে কথা, বাড়িতে না গেলে কি হয়? নবীনগর থেকে চন্দ্রা পর্যন্ত আসতে সকাল হয়ে গেছে। সাভার থেকে সিরাজগঞ্জ মর্ডান মোড়ে আসতে ৪০০-৫০০ টাকা ভাড়া লাগতো। ঈদ উপলক্ষে সেই ভাড়া ১৫০০ টাকা নিয়েছে। ঈদ এলেই ভাড়া বাড়িয়ে দেয় মালিকরা।'
তিনি আরো বলেন, 'বাড়ি কখন যেতে পারবো তা জানি না । চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।'
সুজন নামে রাজশাহীগামী এক যাত্রী বলেন, 'টাঙ্গাইল থেকে রাজশাহীর ভাড়া ৩৫০ টাকা। সেই ভাড়া এখন এক হাজার টাকা দিতে হচ্ছে। রাবনা বাইপাস থেকে ভালোভাবে এলেঙ্গা পর্যন্ত এসেছি। তবে এলেঙ্গা থেকে যমুনা সেতু পর্যন্ত আসতে এক ঘণ্টা সময় লাগলো । ভাড়া বাড়ানোয় অনেক সমস্যায় পড়তে হয় যাত্রীদের।'
গাজীপুর থেকে আসা রহিম মিয়া বলেন, 'গাজীপুর কারখানায় কাজ করি । বেতন পাই ১২ হাজার টাকা। সেই বেতন দিয়ে সংসার ও ঈদ খরচ চালাতে হবে। গ্রামের বাড়ি পাবনা যাবো। ৪০০ টাকার ভাড়া দিতে হচ্ছে ১২০০ টাকা । সংসার চালবো কীভাবে, ঈদ করবো কিভাবে, আবার আসবো কিভাবে?'
এ দিকে ঈদ যাত্রাকে কেন্দ্র করে ঘরমুখো মানুষ ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে রোববার ভোর হতে ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার এলাকায় যানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হয়েছে। এতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে ঘরমুখো মানুষদের।
নাটোরগামী এ আর পরিবহনের চালক মাসুদ বলেন, 'বছরে দুইটা ঈদে যদি একটু ভাড়া বেশি না নেই তাহলে তো কামাই হবে না ।'রাজশাহীগামী হানিফ পরিবহনের চালক রেজা বলেন, 'ভাড়া বাড়ায় মালিক পক্ষ। ভাড়া বাড়াবে না কেন বলেন, আমাদের তো সংসার আছে। আমাদের তো ঈদ বোনাস দিতে হবে। বছরে দুই ঈদ পায়। তাও এবার তেমন যাত্রী নাই।'
গাড়ির ভাড়া ও মহাসড়কের যানযটের বিষয়ে এলেঙ্গা হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ মো. আতোয়ার রহমান বলেন, 'ঈদকে কেন্দ্র করে গার্মেন্টস ছুটি হওয়ায় মহাসড়কে যানবাহনের চাপ আরো বেড়েছে। এতে যানবাহনের দীর্ঘ সারির সৃষ্টি হচ্ছে। তবে কোথাও গাড়ি থেমে নেই। ভাড়া এটা প্রতি বছর মালিক সমিতির নেতাদের বলা হয়ে থাকে তবুও কেনভাড়া বাড়ায় সে সম্পর্কে উর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলতে পারবেন।'
মন্তব্য