-->

নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য ভালো লক্ষণ নয় : বদিউল আলম

নিজস্ব প্রতিবেদক
নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য ভালো লক্ষণ নয় : বদিউল আলম

নাগরিকের জন্য সুশাসন এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কুমিল্লা ৬ আসনের সংসদ সদস্য বাহাউদ্দিন বাহারকে এলাকা ছাড়া

প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনারের কিছুই করার নেই এমন বক্তব্যে আমরা হতাশ। আমরা সবিনয়ে দ্বিমত করছি- এটা নির্বাচন কমিশনের নতজানু হওয়া, অসহায়ত্ব প্রকাশ করা, যেটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।

নির্বাচন কমিশন যদি অসহায়ত্ব প্রকাশ করে তাহলে আমরা নাগরিকরা যাব কোথায়? নির্বাচন কমিশন আমাদের ভরসাস্থল। কারণ আমাদের পক্ষে দেশের স্বার্থে তাদের ওই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

'‌একটি রাষ্ট্রে নাগরিকের চেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদ নেই' কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী প্রার্থীদের তথ্য উপস্থাপন এবং অবাধ নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আহ্বানে এ সংবাদ সম্মেলন করেছে সুশাসনের জন্য নাগরিক ( সুজন)।

 আজ সোমবার (১৩ জুন) জাতীয় প্রেস ক্লাবে জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নাগরিকের জন্য সুশাসন এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী দিলীপ কুমার সরকার, জাতীয় কমিটির সদস্য একরাম হোসেন।

একজন সংসদ সদস্যের ব্যাপারে নির্বাচন কমিশনের অসহায়ত্বের বিষয়ে আপনারা কি মনে করছেন প্রশ্নে তিনি বলেন, কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে আমরা কিছু জানি না নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের প্রভাব কি পড়বে।

তবে এটা ভালো লক্ষণ নয়, নির্বাচন কমিশন অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে‌‌। নির্বাচন কমিশন যখন অসহায়ত্ব প্রকাশ করে যে তারা তাদের আইনকানুন বিধি বিধান প্রয়োগ করতে পারছে না, তখন আমরা কিভাবে আশাবাদী হতে পারি- আমরাও অসহায়ত্ব প্রকাশ না করে পারি না।

অথচ ২০১৬ সালের নির্বাচনী আচরণবিধি- এখানে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে যে, সরকারি সুবিধাভোগী অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর নির্বাচনী প্রচারণার ও সুযোগ সুবিধা সংক্রান্ত বাধা-নিষেধ। তারা সংশ্লিষ্ট জায়গায় নির্বাচনের সময় নির্বাচনী প্রচারণা সহ অন্যান্য কাজে অংশগ্রহণ করিতে পারিবে না।

তবে শর্ত থাকে যে উপরোক্ত ব্যক্তিবর্গ যদি সংশ্লিষ্ট এলাকায় ভোটার হয়ে থাকে তাহলে শুধুমাত্র তিনি নিজ ভোট প্রদানের জন্য কেন্দ্রে যেতে পারবেন।

বদিউল আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনের বস্তুত অবাদ ক্ষমতা রয়েছে। নির্বাচন কমিশনের দায়িত্ব হলো অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিচালনা করা। আমাদের উচ্চ আদালতে রায়ও আছে-নির্বাচন কমিশনের অন্তর্নিহিত ক্ষমতা রয়েছে।

অর্থাৎ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের খাতিরে তারা বিধি-বিধানের সাথে সংযোজন করতে পারেন। তাদের হাত অনেক লম্বা তাদের অনেক ক্ষমতা রয়েছে কেউ কেউ বলে থাকেন তারা দিনকে রাত রাতকে দিন করা ছাড়া সবকিছুই করতে পারেন।

যদিও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের মধ্য দিয়ে আমাদের সবকিছু নির্ধারিত হয়ে যাবে না তারপরও কিন্তু এই নির্বাচন কমিশন একটা পূর্বাভাস দিবে যে আমাদের ভবিষ্যতে কি হবে।

নির্বাচন কমিশনের সক্ষমতা এখন তো শুধুমাত্র একজন সংসদ সদস্য নির্বাচন কমিশনের কথা মানছেন না, এরপর জাতীয় নির্বাচনের সময় যদি পুরো প্রশাসন, আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, সরকারি দল, বিরোধী দল এবং অন্যান্যরা যদি নির্বাচন কমিশনের আদেশ অমান্য করার চেষ্টা করে আমরা কোথায় যাব?

এই নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিকভাবে স্বাধীন প্রতিষ্ঠান তাদের দায়বদ্ধতা ও কিন্তু নাগরিকদের কাছে।

নির্বাচনের মানেই হচ্ছে অবাধ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন। তাই তাদের দায়িত্ব হলো আমাদের সাথে আমাদের কল্যাণে অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করা। আমরা আশা করেছিলাম-এই নির্বাচন কমিশন সাহসিকতা ও বলিষ্ঠতার পরিচয় দিবেন।

বদিউল আলম বলেন, আমরা নির্বাচনের ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র পর্যবেক্ষণ করি না নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করি। আমরা যা কিছু করি জনগণের স্বার্থে করি। আমরা সংবাদ সম্মেলন করে যেসব তথ্য তুলে ধরেছি তা নাগরিকদের জন্য যাতে করে তারা জেনে শুনে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।

তথ্য গুলো দেখে মনে হল যারাই সংশ্লিষ্ট দায়িত্বে যায় তাদের কাছে যেন জাদুর কাঠি থাকে। শুধু এইবার নয় আমরা অতীতেও এটা দেখেছি। যারা পদ-পদবী পায় তাদের সম্পদ আয় হুহু করে বেড়ে যায়।

আওয়ামী লীগের স্থানীয় সংসদ সদস্য এলাকা ছেড়ে যাবেন না এই বিষয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিবেন কিনা নির্বাচন কমিশন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এ বিষয়টা দেখব নির্বাচন কমিশন আইনের পথে যান কি না।

মন্তব্য

Beta version