আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) ব্যবহার চায় না সংসদের বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। ইসির সঙ্গে এ সংক্রান্ত বৈঠকে দলটির মহাসচিব মজিবুল হক চন্নু সাংবাদিকদের বলেন, যেভাবে নির্বাচন ব্যবস্থা আছে, জাতীয় পার্টি সেটার পক্ষেই। ইভিএম ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই।
রোববার (১৯ জুন) ইভিএমের কারিগরি দিক যাচাইয়ে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত বৈঠকে অংশ নেয় দলটি। এ সময় তারা ইভিএম ব্যবহারের দলের অবস্থানের কথাও জানিয়েছে ইসিকে। বৈঠকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ইভিএম নিয়ে কোনো মতামত কারও উপর চাপিয়ে দেয়ার ইচ্ছা নেই। ইভিএম নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়নি। তিনি বলেন, ইভিএমটা যেহেতু ব্যবহার করছি। ইসির উদ্দেশ্য হচ্ছে ইভিএম সম্পর্কে ধারণা দেয়া। আপনাদের মতামত কি হবে তা একান্ত আপনাদের নিজস্ব। এ বিষয়ে দলগুলোর যদি কোন প্রশ্ন থাকে সেগুলো উপস্থাপন করবেন। ইসির বিশেষজ্ঞরা উত্তর দেবেন।
এর আগে বিকাল ৩টায় ইভিএম যাচাই জাতীয় পার্টিসহ ১৩ রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করে ইসি। সভায় নির্বাচন কমিশনার মো. আহসান হাবিব খান, রাশেদা সুলতানা, মো. আলমগীর, ইসি সচিব, অতিরিক্ত সচিব, বাংলাদেশ মিশন টুলস ফ্যাক্টরির ম্যানিজিং ডিরেক্টর মেজর জেনারেল সুলতানুজ্জামান মো. সালেহ উদ্দিন, সেনা কল্যাণ সংস্থার চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলামসহ ইসি’র উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইভিএম যাচাই করার জন্য ইসির নিবন্ধিত ৩৯টি রাজনৈতিক দলকে ধারাবাহিকভাবে আলোচনা করার জন্য চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এর ধারাবাহিকতায় রোববার ১৩টি দলের সঙ্গে ইভিএম ব্যবহার নিে য় আলোচনায় বসে ইসি। এসব দলগুলোর মধ্যে ছিল জাতীয় পার্টি (জাপা), জাতীয় পার্টি-জেপি, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, জাকের পার্টি, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।
আন্দালিব রহমান পার্থের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, ড. কামাল হোসের গণফোরাম ও কাদের সিদ্দিকীর কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ বৈঠকে আসেনি।
এছাড়া আগামী ২১ জুন দ্বিতীয় দফায় ইভিমে নিয়ে ১৩ রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানোর হয়েছে। এর মধ্রে রয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি। তবে দলটি একটি সুত্র জানিয়েছে ইভিএম নিয়ে ইসির চিঠির সাড়া দিচ্ছে না। এই দফায় অন্য যেসব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডি, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, ন্যাশনাল পিপলস পার্টি-এনপিপি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, খেলাফত মজলিস ও বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল।
২৮ জুন অনুষ্ঠেয় বৈঠকে জন্য যেসব দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে সেগুলোর মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল-এমএল, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, গণতন্ত্রী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, বিকল্প ধারা বাংলাদেশ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ও বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট।
মন্তব্য