-->
শিরোনাম

গণতন্ত্র, অগ্রগতি, বিশ্ব নারী জাগরণের প্রতীক শেখ হাসিনা : তথ্যমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক
গণতন্ত্র, অগ্রগতি, বিশ্ব নারী জাগরণের প্রতীক শেখ হাসিনা : তথ্যমন্ত্রী

ঢাকা : আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, গণতন্ত্র, উন্নয়ন-অগ্রগতির প্রতীক এবং বিশ্ব প্রেক্ষাপটে নারী জাগরণ, নারী অগ্রগতির প্রতীক। দেশের সকল ক্ষেত্রেই যে উন্নয়ন-অগ্রগতি সেটা সম্ভব হয়েছে জননেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যার জাদুকরী নেতৃত্বের কারণেই এবং যারা বলে পাকিস্তানই ভালো ছিল, তাদের এদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই।’

 

মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টশালী মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রীর ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে হাসুমণি’র পাঠশালা সংগঠন আয়োজিত দু’দিনব্যাপী ‘শেখ হাসিনা জন্মোৎসবে’র উদ্বোধনী পর্ব শিল্পকর্ম প্রদর্শনী ও গোলটেবিল আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

 

হাসুমণি’র পাঠশালার সভাপতি মারুফা আক্তার পপির সভাপতিত্বে ‘প্রস্ফুটিত পুষ্পের রঙ্গিন উচ্ছ্বাস’ শিরোনামের উদ্বোধনী পর্বে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বিশেষ অতিথি, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান এবং জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সচিব নাজমা আক্তার বিপ্লবী আমন্ত্রিত আলোচক হিসেবে বক্তব্য দেন। এর আগে শিল্পকর্ম প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান।

 

শেখ হাসিনার প্রতি সালাম ও শুভেচ্ছা জানিয়ে সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘১৯৮১ সালে ১৭ মে জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দেশে পদার্পণ করেছিলেন। তখন আমি ছাত্রলীগের কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক। সেদিন অঝোর ধারায় বৃষ্টি হচ্ছিল এবং আমরা শ্লোগান ধরেছিলাম- ঝড় বৃষ্টি আঁধার রাতে, শেখ হাসিনা আমরা আছি তোমার সাথে। সেদিন প্রকৃতি যেন জননেত্রী শেখ হাসিনাকে বঙ্গবন্ধুর এই রক্তে ভেজা মাটিতে পেয়ে বৃষ্টির অঝোর ধারায় আনন্দে শ্লোগান দিচ্ছিল। আর মেঘের প্রচন্ড গর্জন যেন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারিদের প্রতি তীব্র ধিক্কার জানাচ্ছিল। সেদিন বক্তৃতায় তিনি বলেছিলেন- আমাকে যদি মৃত্যুর মুখোমুখিও দাঁড়াতে হয় এদেশের মানুষের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের জন্য আমি পিছপা হব না। সেই থেকে ৪১ বছরের পথ চলায় জননেত্রী শেখ হাসিনা সমস্ত প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনকে হাতের মুঠোয় নিয়ে বাংলাদেশের মানুষের পাশে থেকেছেন, আছেন।’

 

বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে একে একে ১৯ বার হত্যা করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে, কিন্তু বারবার মৃত্যু উপত্যকা থেকে ফিরে এসে তিনি বিচলিত হননি, দ্বিধান্বিত হননি, থমকে দাঁড়াননি, বরং আরো দ্বীপ্তপদভারে, আরো প্রত্যয় নিয়ে তিনি এদেশের মানুষের সংগ্রামের কাফেলাকে নিয়ে এগিয়েছেন, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

 

তিনি বলেন, এদেশের গণতন্ত্র ফিরে এসেছে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই। নব্বইয়ের যে আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারের পতন ঘটে, সেই আন্দোলনের নেতৃত্বও দিয়েছেন জননেত্রী শেখ হাসিনা।

 

সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘আজকে আমরা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়ার বদলে যাওয়ার গল্প শুনি। জননেত্রী শেখ হাসিনা যদি অব্যাহতভাবে দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকেন, জনগণ যদি সেই সুযোগ দেয়, আর পাঁচ-সাত বছর পর পৃথিবীর মানুষ বাংলাদেশের বদলে যাওয়ার গল্প শুনবে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাদের মাঝে আরো বহু বছর থাকুন, এই দেশকে নেতৃত্ব দিয়ে যান, তার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাস্তবায়ন হোক এটিই আমাদের প্রত্যাশা।’

 

ড. হাছান বলেন, ‘আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে যে, বাংলাদেশ তাদেরকে পেছনে ফেলে বহুদূর এগিয়ে গেছে। আর অন্যদিকে বিএনপির মহাসচিব বলেন যে, পাকিস্তান ভাল ছিল। যারা বলে পাকিস্তান ভাল ছিল, তাদের এদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার থাকতে পারে না, থাকা উচিত নয়।’

 

‘শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের এই উন্নয়ন, অগ্রগতির জন্য নিজেদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব সংকটের মধ্যে পড়েছে বলে বিএনপি মনে করে’ উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি তাদের রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ হুমকির মুখে অনুধাবন করতে পেরেছে সে কারণে তারা আজকে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা দেখেছি সমাবেশের নামে গতকাল হাজারিবাগে সাংবাদিকদের ওপর হামলা পরিচালনা করছে। দেশ টিভির সাংবাদিক দেলোয়ারকে বেধড়ক মেরেছে, আরো অনেক সাংবাদিককে নাজেহাল করেছে। আমি তথ্যমন্ত্রী হিসেবে এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি এবং আমি সাংবাদিক সমাজকে অনুরোধ জানাবো এ ধরণের হামলার বিরুদ্ধে আপনারা সোচ্চার হোন।’

 

গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী প্রজন্মের কাছে উন্নত দেশ উপহার দিতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। তার এই হাতকে শক্তিশালী করতে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের সকল শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

 

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ডাক্তার মোঃ আতিকুর রহমান, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক  কামরুন নাহার, প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ডিপার্টমেন্টের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জুনায়েদ হালিম সভায় বক্তৃতা করেন। সভাশেষে অতিথিবৃন্দ শিল্পকর্ম প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন।

 

ভোরের আকাশ/জেএস/

মন্তব্য

Beta version