কক্সবাজার: কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিনে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর প্রভাবে ১৩টি ট্রলার ডুবে গেছে। জেটিতে নোঙর করে রাখা ছিল ট্রলারগুলো। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সোমবার দুপুরে সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, সকাল থেকে ঝড়োবৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া সাগরও উত্তাল। বৃষ্টির সঙ্গে বাড়ছে বাতাসের তীব্রতা। টেকসই বেঁড়িবাধ না থাকায় ঝুঁকিতে রয়েছে সেন্টমার্টিনের ১০ হাজার মানুষ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সকালে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে সাত নম্বর বিপদ সংকেত এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার বন্দরকে ছয় নম্বর বিপদসংকেত দেখাতে বলেছে। এছাড়া এসব এলাকার পার্শ্ববর্তী দ্বীপ ও চরগুলোকেও ওই অঞ্চলের বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন। এরই মধ্যে সেখানে ৫৭৬টি সাইক্লোন শেল্টার বা আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তৈরি করা হয়েছে ৮৫টি মেডিকেল টিম। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমসহ যাবতীয় সহায়তার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবক। এছাড়াও সমুদ্র সৈকতে পর্যটক নামার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন জেলা প্রশাসন।
জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পাঁচ লক্ষাধিক লোক ধারণের ক্ষমতা রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ মুহূর্তে উপকূলের লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা হাতে রাখা হয়েছে।
তিনি জানান, পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকারি সব কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিলের পাশাপাশি বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা প্রশাসন। আট উপজেলায় খোলা হয়েছে কন্ট্রোল রুম। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতে পর্যটক না নামার জন্য নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে বলা হয়েছে, সোমবার দুপুর ১২ টায় (২৪ অক্টোবর) চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৪৪০ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৯৫ কি.মি. দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৬৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৩৩৫ কি.মি. দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরো ঘণীভূত ও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে আজ মধ্যরাত /গামীকাল ভোর নাগাদ খেপুপাড়ার নিকট দিয়ে বরিশাল-চট্টগ্রাম উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কি.মি. এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্ব্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কি.মি. যা দমকা অথবা বাড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কি.মি. পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুদ্র রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ, অমাবশ্যা তিথি ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, নোয়াখালী, ফেনী, চট্টগ্রাম ও কক্সাবাজার এবং তাদের অদূরবর্তী দ্বীপ ও চরসমূহের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৫-৮ ফুট অধিক উচ্চতার ব্যয়তাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য