মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার ধলেশ^রী নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে পুনরায় ব্যাপকভাবে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এতে চলমান আমন মৌসুমে রোপিত বিভিন্ন প্রজাতির ধানি জমিসহ সবজি, মাষকালাই, কলাবাগান, ধনিয়া ইত্যাদি কৃষিমাঠ বিলীন হয়ে গেছে। হুমকিতে রয়েছে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ জনপদ।
সরেজমিনে সাটুরিয়া উপজেলার বরাইদ ইউনিয়নের ছনকা-ঘোনা এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, আবুল কালাম নামের এক কৃষকের আমন ধানের জমি কাঁচা ধানসহ নদীতে ধসে পড়ছে। ফজলুল হকের অনেক কষ্টে গড়ে তুলা শশা খেত নদীগর্ভে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এখানে ছনকা উচ্চ বিদ্যালয়, উত্তর ছনকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর ছনকা বাজার, একটি কমিউনিটি ক্লিনিক, দুটি মসজিদ, এলজিইডির পাকা সড়ক ও পল্লীবিদ্যুৎ লাইন চলমান ভাঙন অব্যাহত থাকলে দ্রুতই নদীগর্ভে যেতে পারে। এমনটাই আশংকা স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. আব্দুল মজিদসহ ভুক্তভোগী মানুষের।
এরইমধ্যে ওই এলাকার মন্ডল গোষ্ঠীর প্রায় ১০ একর জায়গা নদীতে চলে গেছে। আবদুল মান্নানের ১১ বিঘা, মিনহাজ উদ্দিনের ১০ বিঘা, নুরুল ইসলামের ৮ বিঘা, বাচ্চু মিয়ার ৫ বিঘা, সুলতান মিয়ার ৩ বিঘা আবাদি জমি সাম্প্রতিককালে গ্রাস করেছে সময়ে সময়ে বাঁক পরিবর্তন করা ধলেশ^রী।
এ ছাড়াও বিভিন্ন মানুষের বাড়িঘর, জমিজমা, সহায়-সম্বল নদীতে চলে যাচ্ছে। কিন্তু এ এলাকায় ভাঙা প্রতিরোধে কোনো কার্যকর সরকারি উদ্যোগ নেয়া হয়নি।
বর্তমানে ধলেশ^রী নদীটি ছনকা গ্রামের ঠিক মাঝখান বরাবর রয়েছে। উজানে মামুদনগর, মুকনা, দিঘুলিয়া ইউনিয়নের বিভিন্ন জায়গা ভাঙতে ভাঙতে ছনকা, বরাইদ, আগসাভার, রাজৈর, গোপালপুর, আকাশী, তিল্লি হয়ে সামনে এগিয়ে গেছে। পূর্বদিক থেকে ছনকা-ঘোনা এসে কতদূর দক্ষিণে গিয়েই আবার এঁকেবেঁকে পূর্বে চলে গেছে। ফলে নদীর উভয় পাশে সমানে ভাঙতে থাকে।
এ অবস্থায় বরাইদ ইউনিয়ন পরিষদ ৩নং ওয়ার্ড সদস্য মো. আব্দুল মজিদসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষের প্রত্যাশা খুব দ্রুত সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এখানে কংক্রিটের ব্লক ফেলে, মাটির বস্তা দিয়ে, অথবা ড্রেজিং করে নদীর বাঁক সহনীয় করে দেবেন।
এ বিষয়টি নিয়ে সাটুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।
অপরদিকে মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, মন্ত্রণালয়ের কাছে বাজেট চেয়েছি এখনো পাইনি। আশা করছি, বাজেট দ্রুত পেয়ে গেলে ওই জায়গায় ভাঙনরোধে কাজ শুরু করব।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য