-->
শিরোনাম
জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অধিদপ্তর গঠন করছে সরকার

প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে

মো. রেজাউর রহিম
প্রস্তাবিত আইনের খসড়া ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে

মো. রেজাউর রহিম: জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অধিদপ্তর নামে নতুন একটি বিভাগ খুলতে যাচ্ছে সরকার। জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত জটিলতা নিরসন এবং শিশুর জন্মের পরই পরিচয়পত্র প্রদানের কাজ করবে এই নতুন বিভাগ। নতুন এ বিভাগের নাম হবে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অধিদপ্তর বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ বিভাগ খোলা হলে নির্বাচন কমিশনের পরিবর্তে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত যাবতীয় কাজকর্ম এ দপ্তর থেকে সম্পন্ন করা হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীন থাকবে এ বিভাগ।

 

আর এ সংক্রান্ত একটি আইনের খসড়া গত ১০ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়। তবে খসড়া আইনের কিছু বিষয়ে পরিবর্তনের নির্দেশনা দেয়া হয় মন্ত্রিপষিদের বৈঠকে। পরে গত ৩০ অক্টোবর এ সংক্রান্ত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় খসড়া আইনটি উপস্থাপন এবং সংশ্লিষ্টদের মতামত নেয়া হয়।

 

আর মতামত নেয়ার পর প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি গত ২২ নভেম্বর আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিংয়ের জন্য পাঠানো হয়েছে। জানা গেছে, আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং সম্পন্ন হওয়ার পর শিগগিরই চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের জন্য আইনটি মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। আর চ‚ড়ান্ত অনুমোদনের পর আইনটি বিল আকারে জাতীয় সংসদে পাসের জন্য পাঠানো হবে। আইনটি জাতীয় সংসদে পাস হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হবে।

 

মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ভোরের আকাশকে জানান, জাতীয় পরিচয়পত্রের বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দেশের নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও বিষয়টি জড়িত। সবকিছু মিলিয়ে সরকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন অধিদপ্তর নামে নতুন একটি বিভাগ চালু করতে আইন করছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, নতুন এ বিভাগটি খোলা হলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধনের সব ধরনের কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগের আওতায় আসবে। নতুন এই অধিদপ্তর গঠনের বিষয়টি অনুমোদন হলে সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে একটি অনুবিভাগ গঠন করা হবে এবং প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দেয়া হবে।

 

নতুন এ বিভাগ থেকে শিশুর জন্মের পরই জাতীয় পরিচয়পত্র (ইউনিক আইডি) দেয়া হবে। পরে ওই ইউনিক আইডির ভিত্তিতেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভোটার নম্বর নির্ধারণ হবে। এ ছাড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির মৃত্যুর পর ওই নম্বরে আর নতুন করে কাউকে আইডি দেয়া হবে না।

 

এর আগে গত ১০ অক্টোবর মন্ত্রিপরিষদে প্রস্তাবিত আইনের খসড়া নীতিগত অনুমোদনের পর মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সচিবালয়ে সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধনের কাজ সরকারের অধীনে আনা হচ্ছে।

 

এ ছাড়া শিশুর জন্মের পর পরই সরকার জাতীয় পরিচয়পত্র দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, নির্বাচন কমিশন থেকে এখন এটা সরকারের অধীনে আনার জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগে নিয়ে আসা হচ্ছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, নির্বাচন কমিশন সবক্ষেত্রে সরকারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত না থাকায় সরকারের সিদ্ধান্তে জাতীয় পরিচয়পত্রের কার্যক্রম সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে নিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) আপত্তি থাকলেও সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে এনআইডি কার্যক্রম স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে আনা হচ্ছে।

 

জানা গেছে, এ সংক্রান্ত প্রস্তাবিত আইনের খসড়াটি মন্ত্রিসভায় নীতিগত অনুমোদনের পর প্রস্তাবিত আইনের খসড়ায় বর্তমানে নির্বাচন কমিশনের আওতাধীন এনআইডির সার্ভারসহ যাবতীয় সরঞ্জাম এবং জনবল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগে হস্তান্তর হবে। আর এজন্য সুরক্ষা সেবা বিভাগের অধীনে একটি নতুন অধিদপ্তর (অনুবিভাগ) গঠন করা হবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version