জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরী বলেন, ধর্ম পালন করতে হবে। ধর্মীয় অনুশাসন অশান্ত হৃদয়ে প্রশান্তি আনে। বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক দেশ। ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। কোনো ধর্ম অনৈতিকতা শিক্ষা দেয় না।
গত মঙ্গলবার (পটিয়ার কেলিশহর সাধুর পাহাড়ে মহাত্মা স্বামী সত্যানন্দ, কালাবাবা ও নিত্যানন্দ যোগসিদ্ধা আশ্রমে ১৫৬ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ছয় ধর্মের সমন্বয়ে আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সম্মেলনে মহান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, একুশে পদকের জন্য মনোনীত দৈনিক ভোরের আকাশ পত্রিকার সম্পাদক ও স্বাধীন বাংলা বেতারের শিল্পী শব্দ সৈনিক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. মনোরঞ্জন ঘোষাল।
তিনি বলেন, আজকে যদি বাংলাদেশ স্বাধীন না হতো, তাহলে তরুণরা আজ ভালোবাসা দিবস পালন করতে পারত না। জন্ম নিতো না সাকিব আল হাসান নামের বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। তিনি আরো বলেন, ধর্ম পরিচয়ের আগে আমরা সবাই মানুষ। হিন্দু, মুসলমান সবারই রক্ত এক। সুতরাং ধর্ম নিয়ে ভেদাভেদ ভুলে সকলকে আগে মানুষের মতো মানুষ হতে হবে।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে মনোরঞ্জন শীল (গোপাল) এমপি বলেন, যখন ধর্মের আবির্ভাব হয়, তখন থেকে মানুষের মধ্যে পরস্পর মমত্ববোধ ও মানবিকতার অনুশীলনের চর্চা হয়। বলতে গেলে সব ধর্মের মর্মবাণী এক এবং অভিন্ন। তাই ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চললে সমাজ ও দেশ থেকে সব অসংগতি নির্মূল হবে।
ধর্মের নামে যারা রাজনীতি করে ধর্মান্ধতার সৃষ্টি করে, তাদের থেকে সজাগ থাকার আহবান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে, তার সুফল ভোগ করতে হলে ধর্মান্ধ অপশক্তির বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে।
অনুষ্ঠানে জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, তৃণমূলের উন্নয়নবিহীন সামগ্রিক উন্নয়ন চিন্তা করা যাবে না। তিনি সরকারের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে গ্রামের সাধারণ মানুষ থেকে উচ্চ পর্যায়ের সকল নাগরিককে সব কাজে স্মার্ট হওয়ার আহবান জানান। এতে পুণ্য সাধকদের মধ্যে ছিলেন স্বামী তাপসানন্দ গিরি মহারাজ বাবাজী, শাহসূফি মৌলানা ফৌজুল একরাম শাহ আমির ভান্ডারি, অধ্যাপক ড. উপানন্দ মহাথের ফাদার রবার্ট গনছালভেছ, ভাই সিংবীর সিং, আতিয়র রহমান। প্রথম অধিবেশনে শুভ অভিষেক গ্রহণ করেন আশ্রমের নব অধিপতি স্বামীজিপুত্র অজিত বিশ্বাস (পুরী)। এরপর সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। সম্মেলনে হিন্দু-মুসলিম-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান শিয়া ও বাহাই ধর্মানুসারীরা অংশ নেন।
অনুষ্ঠানে উৎসব উদযাপন পরিষদের সভাপতি অনুপম বণিক (লিটন) এর সভাপতিত্বে ও সজীব দেবনাথের সঞ্চালনায় উদ্বোধক হিসেবে প্রফেসর ড. গৌতম বুদ্ধ দাশ, মহান অতিথি হিসেবে ড. দুলাল কৃষ্ণ সাহা, বিশেষ অতিথি হিসেবে পটিয়ার ইউএনও আতিকুল মামুন, বিজন চক্রবর্ত্তী, শ্রী বাবুল শর্মা, সাংবাদিক শিপংকর শীল, অফিসার ইনচার্জ রেজাউল করিম মজুমদার, নূরুল ইসলাম, নুরুল ইসলাম সওদাগর, প্রবীর বণিক, বাবুল চন্দ্র শর্মা, বিজন চক্রবর্তী, চেয়ারম্যান সরোজ সেন নান্টু, নুরুল ইসলাম, সুমন চক্রবর্তী, প্রকৌশলী পিংকু দাশ গুপ্ত, সৃজন চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া উপজেলার কেলিশহর শ্রীশ্রী সত্যানন্দ কালাবাবা যোগ সিদ্ধাশ্রমের মঠাধ্যক্ষ শ্রীমৎ স্বামী নিত্যানন্দ পুরী মহারাজ এই আন্তঃধর্ম সমন্বয়ের প্রবক্তা। তিনি বিশে^র সব মানুষের মঙ্গল কামনায় ব্রত ছিলেন। তিনি ২০২১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ৬টা ৪৫ মিনিটে নিজ আশ্রমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৯ বছর।
ভোরের আকাশ/আসা
মন্তব্য