-->
শিরোনাম

শিল্প কারখানায় ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার

নিজস্ব প্রতিবেদক
শিল্প কারখানায় ধর্মঘট নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা পাচ্ছে সরকার

অত্যাবশ্যক পরিষেবা প্রদানে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্ষেত্রে প্রয়োজন মনে করলে ধর্মঘট নিষিদ্ধ করতে পারবে সরকার। এমনকি আইন ভেঙে ধর্মঘট করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি সর্বোচ্চ ছয় মাসের কারাদন্ড বা ৫০ হাজার টাকা জরিমানা বা উভয় দন্ডে দন্ডিত হবেন।

 

এছাড়া সরকার প্রয়োজন মনে করলে জনস্বার্থে কোনো প্রতিষ্ঠানে লকআউট ও লে-অফ নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে পারবে। এ সংক্রান্ত একটি বিল গতকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। ১৯৫৮ সালের অ্যাসেনসিয়াল সার্ভিসেস (মেইনটেন্স) অ্যাক্ট এবং ১৯৫৮ সালের অ্যাসেনসিয়াল সার্ভিসেস (সেকেন্ড) অর্ডিন্যান্স রহিত করে নতুন এ আইন করা হচ্ছে। এই আইন বাস্তবায়ন হলে দেশের মানুষ উপকৃত হবে।

 

একইসঙ্গে গতকাল সংসদে আরো তিনটি জনগুরুত্বপূর্ণ বিল উপস্থাপিত হয়েছে। মানহীন ও নকল কসমেটিকস বাজারজাত ঠেকাতে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস বিল ২০২৩’, বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনে ‘বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (সংশোধন) বিল ২০২৩’ এবং জেল-জরিমানার বিধান করে ‘চিড়িয়াখানা বিল ২০২৩’ উত্থাপন করা হয়েছে।

 

এসব বিল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আগামী ৩০ দিনের মধ্যে সংসদে প্রতিবেদন দিতে সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়েছে।

 

‘অত্যাবশ্যক পরিষেবা বিল-২০২৩’ : জাতীয় সংসদে উত্থাপিত এ বিলে বলা হয়েছে, অত্যাবশ্যক পরিষেবা বলতে ডাক ও টেলিযোগাযোগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ই-কমার্স ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক বা ডিজিটাল সেবা; ডিজিটাল আর্থিক সেবা; বিদ্যুৎ সঞ্চালন, বিতরণ, সরবরাহ ও বিক্রয় এবং এ সংক্রান্ত স্থাপনার রক্ষণাবেক্ষণ ও সম্প্রসারণ; স্থলপথ, রেলপথ, জলপথ বা আকাশপথে যাত্রী বা পণ্য পরিবহন সেবা; বিমান ও বিমানবন্দর পরিচালনা এবং রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কিত পরিষেবাসহ বাংলাদেশ বেসামরিক ও বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের কার্যপরিধিভুক্ত অন্য যে কোনো পরিষেবা; স্থলবন্দর, নদীবন্দর, সমুদ্রবন্দর বা বিমানবন্দরে পণ্য বোঝাই, খালাস, স্থানান্তরসহ সংশ্লিষ্ট বন্দর বা বন্দর সম্পর্কিত পরিষেবা;

 

কোনো পণ্য বা যাত্রীকে ছাড়পত্র প্রদান সম্পর্কিত পরিষেবা; চোরাচালান প্রতিরোধ সম্পর্কিত পরিষেবা; সশস্ত্র বাহিনীর আওতাধীন যেকোনো প্রতিষ্ঠান বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত পরিষেবা এবং দেশের প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে সশস্ত্র বাহিনী কর্তৃক স্থাপিত বা প্রতিষ্ঠিত কোনো প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা; দেশের প্রতিরক্ষার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় পণ্য বা মালামাল উৎপাদনের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা; খাদ্যদ্রব্য ক্রয়, বিক্রয়, সংগ্রহ, সংরক্ষণ, মজুত, সরবরাহ বা বিতরণের কাজে নিযুক্ত সরকারি মালিকানাধীন বা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত কোনো প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা;

 

সরকারি মালিকানাধীন বা সরকার কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত সংরক্ষণ ব্যবস্থা এবং পানি সরবরাহ বা পয়োনিষ্কাশন ব্যবস্থা সম্পর্কিত পরিষেবা; হাসপাতাল, ক্লিনিক, স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা এরূপ প্রতিষ্ঠান এবং ডিসপেনসারি সম্পর্কিত কোনো পরিষেবা; ওষুধ উৎপাদন, সরবরাহ, বিপণন, ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান, সংস্থা বা কারখানার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কোনো পরিষেবা;

 

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত পরিষেবা; কয়লা, গ্যাস, বিদ্যুৎ, ইস্পাত ও সার উৎপাদন, পরিবহন, সরবরাহ বা বিতরণের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান বা সংস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো পরিষেবা; কোনো তেলক্ষেত্র, তেল শোধনাগার, তেল সংরক্ষণাগার এবং পেট্রোলিয়াম বা পেট্রোলিয়াম জাতীয় পদার্থ উৎপাদন, পরিবহন, সরবরাহ ও বিতরণের কাজে নিয়োজিত প্রতিষ্ঠান; টাকশাল ও নিরাপত্তামূলক মুদ্রণ কাজের সঙ্গে সম্পর্কিত কোনো পরিষেবা বোঝাবে।

 

এ ছাড়া এ আইনে কিছু ক্ষেত্রে চাকরি বা চাকরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো পরিষেবাকে অত্যাবশ্যক পরিষেবা হিসেবে ঘোষণা করতে পারবে। এর মধ্যে আছে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে জনকল্যাণমূলক সেবা চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এরকম চাকরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কোনো পরিষেবাসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে সরকার অত্যাবশ্যক পরিষেবা ঘোষণা করতে পারবে।

 

জননিরাপত্তা বা জনগণের জীবনযাপনের জন্য প্রয়োজনীয় সরবরাহ ও রক্ষণাবেক্ষণ সেবা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এ ধরনের কোনো পরিষেবা। জনগণের জন্য অসহনীয় কষ্টের কারণ হচ্ছে বা হওয়ার সম্ভাবনা আছে এমন পরিষেবা এবং দেশের প্রতিরক্ষা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সারা দেশ বা দেশের কোনো অংশে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে আবশ্যকীয় কোনো পরিষেবা।

 

সংসদে পিপিপির আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ সংশোধনী বিল : বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনে সংশোধনী আনা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগের ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত হচ্ছে করা হচ্ছে। এ সংক্রান্ত সংশোধনী এনে বাংলাদেশ সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব (সংশোধন) বিল ২০২৩ উপস্থাপন করা হয়েছে।

 

সংসদ কাজে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বপাপ্ত মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক বিলটি উপস্থাপন করেন। বিলে বিদ্যমান পিপিপি সম্পর্কিত নীতিমালা, প্রবিধি, নির্দেশনা প্রণয়ন ও অনুমোদনের সঙ্গে নতুন করে গাইডলাইন ও কার্যপ্রণালি প্রণয়ন করার বিধান যুক্ত হচ্ছে। পিপিপি কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান তার কার্যক্রমের জন্য সরাসরি বোর্ড অব গভর্নরসের কাছে দায়ী থাকার কথাও বলা হয়েছে এতে।

 

বিদ্যমান আইনে পিপিপি কর্তৃপক্ষের নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষমতা বোর্ড অব গভর্নরসের কাছে রয়েছে। সংশোধিত আইনে এ ক্ষমতা সরকারের হাতে ন্যস্ত হবে বলে প্রস্তাব করা হয়েছে। বিদ্যমান আইনের সাংগঠনিক কাঠামো অনুমোদনের ক্ষমতাও বোর্ড অব গভর্নরসের হাতে রয়েছে। এটি পরিবর্তন করে সরকারের হাতে দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

 

বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে মন্ত্রী বলেন, পিপিপি কর্তৃপক্ষের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা প্রয়োগ ও কার্যাবলি সম্পাদনের ক্ষেত্রে পিপিপি কর্তৃপক্ষ ‘স্বাধীন’ হওয়ার বিষয়টি বাদ দেয়া; প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার নিযুক্তি ও চাকরির শর্তাবলী বোর্ড অব গভর্নরসের পরিবর্তে সরকার কর্তৃক স্থিরীকৃত হওয়া, চুক্তি স্বাক্ষরের পর সংশ্লিষ্ট সরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রকল্প কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেয়া, আইনের ব্যাখ্যা প্রদানের বিষয়টি বোর্ড অব গভর্নরসের পরিবর্তে সরকারের ওপর ন্যস্ত করা ও প্রবিধান প্রণয়নে সরকারের পূর্বানুমোদন গ্রহণের জন্য আইনটি সংশোধনের কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।

 

চিড়িয়াখানার প্রাণী উত্ত্যক্ত করলে গুনতে হবে জরিমানা সংসদে বিল : চিড়িয়াখানায় প্রাণীদের উত্ত্যক্ত করলে জরিমানার মুখোমুখি হতে হবে দর্শনার্থীদের। এক্ষেত্রে অভিযুক্তের কাছ থেকে দুই হাজার টাকা প্রশাসনিক ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে। এছাড়া চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে জখম করলে বা অনুমতি ছাড়া খাবার দিলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য করে দুই মাসের জেল ও ৫ হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। এমন বিধান রেখে সংসদে চিড়িয়াখানা বিল ২০২৩ উত্থাপন করা হয়েছে।

 

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বিলটি সংসদে উপস্থাপন করেন। বিলটি পাস হলে দেশের সরকারি সব চিড়িয়াখানা এর অধীনে পরিচালিত হবে। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা উপদেষ্টা কমিটির মাধ্যমে পরিচালিত হয়।

 

প্রস্তাবিত আইনে বলা হয়েছে, কোনো দর্শনার্থী ফি ছাড়া চিড়িয়াখানায় প্রবেশ করলে তার কাছ থেকে প্রবেশ ফির সমপরিমাণ অর্থ আদায় করা হবে। মাত্রা বিবেচনা করে দুই হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ আদায় করা যাবে।

 

বিলে বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীর বয়সজনিত শারীরিক অক্ষমতা বা সংক্রামক রোগ হতে অন্য কোনো প্রাণীর জীবন রক্ষার্থে বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে সংশ্লিষ্ট প্রাণীর অসহনীয় ক্লেশ নিবারণের জন্য ব্যথাহীন মৃত্যু ঘটানো যাবে।

 

চিড়িয়াখানায় কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়া কোনো অবস্থাতেই একই প্রজাতির একই লিঙ্গের একটি প্রাণী রাখা যাবে না। ভেটেরিনারি কর্মকর্তার নির্দেশনা ছাড়া প্রকৃতিগত কারণে দলবদ্ধভাবে অবস্থানকারী প্রাণীদের মধ্য থেকে কোনো প্রাণীকে আলাদা বা এককভাবে রাখা যাবে না। প্রাণীর প্রকৃতি বিবেচনা করে ন্যূনতম প্রাকৃতিক পরিবেশ বা সুবিধাসম্পন্ন খাঁচায় আবদ্ধ বা মুক্ত রাখতে হবে।

 

প্রাণীর প্রকৃতিগত আচরণ, সংশ্লিষ্ট প্রাণীর লালন-পালনে নিয়োজিত ব্যক্তি ও দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা বিবেচনা করে প্রাণীর খাঁচার অবকাঠামো তৈরি করতে হবে। কোনো বিপন্ন প্রজাতি সংরক্ষণের জন্য সরকার এক বা একাধিক চিড়িয়াখানা নির্দিষ্ট করতে পারবে।

 

বিলে বলা হয়েছে, চিড়িয়াখানায় অবস্থিত প্রাণীর দেহে যেসব রোগ-জীবাণু প্রাণী থেকে প্রাণীতে বা মানুষে সংক্রমণযোগ্য সেসব রোগ-জীবাণু বা পরজীবীর সীমা বা মাত্রা নির্ণয়ের জন্য প্রযোজ্যতা অনুযায়ী নিয়মিতভাবে প্রত্যেক প্রাণীকে পরীক্ষা করে প্রাপ্ত তথ্য প্রত্যেক প্রাণীর জন্য বিধি দিয়ে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পৃথকভাবে সংরক্ষণ করতে হবে।

 

এতে আরো বলা হয়েছে, সরকারের অনুমোদন ছাড়া কোনো চিড়িয়াখানায় বিদেশি প্রজাতির বন্য প্রাণী কেনা, বিনিময়, উপহার হিসেবে বা অন্য কোনোভাবে সংগ্রহ করা যাবে না। চিড়িয়াখানার কোনো প্রাণীকে লোকালয়ে ছেড়ে দেয়া যাবে না।

 

মানহীন ও নকল প্রসাধনী বাজারজাত ঠেকাতে সংসদে বিল: মানহীন ও নকল কসমেটিকস বাজারজাত ঠেকাতে ‘ঔষধ ও কসমেটিকস বিল ২০২৩’ সংসদে উত্থাপন করা হয়েছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের অনুপস্থিতিতে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বিলটি সংসদে তোলেন। পরে পরীক্ষা করে সংসদে প্রতিবেদন দেয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। বিলে ওষুধের কৃত্রিম সংকট ও বেশি মুনাফার লোভে মজুত করলে ১৪ বছর জেল ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান করা হয়েছে।

 

প্রস্তাবিত বিলে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের দায়িত্ব ও কর্মপরিধি সুনির্দিষ্ট করা হয়েছে। এতে বলা হয়, কসমেটিকস বিক্রি, আমদানি ও উৎপাদন করতে হলে লাইসেন্স নিতে হবে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর লাইসেন্স অথরিটি হিসেবে কাজ করবে। এখন যারা কসমেটিকসের ব্যবসা বা উৎপাদন করছেন তাদের লাইসেন্স নিতে হবে।

 

এ জন্য ঔষধ প্রশাসন বিধি প্রণয়ন করবে। প্রস্তাবিত বিলে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক বিক্রি করলে ২০ হাজার টাকা জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। ১৯৪০ সালের ড্রাগস আইন এবং ১৯৮২ সালের দি ড্রাগস কন্ট্রোল অ্যাক্ট এ দুটোকে এক করে যুগোপযোগী করে এই বিল আনা হয়েছে।

 

প্রস্তাবিত আইনে ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের মাধ্যমে ওষুধের নিরাপত্তা, কার্যকারিতা, নতুন ওষুধ, ভ্যাকসিন মেডিকেল ডেভেলপ করার বিষয়টি সুনির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, ওভার দ্য কাউন্টার ওষুধ ছাড়া রেজিস্ট্রার চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র ছাড়া কোনো ওষুধ বিক্রয় ও ব্যবহার বন্ধ থাকবে এবং এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মেডিকেল ডিভাইস ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রস্তাবিত আইনে ধারা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। মেডিকেল ডিভাইসকে ওষুধ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। কিছু ওষুধের দাম সরকার নির্ধারণ করে দেবে বলে বিলে উল্লেখ করা হয়েছে। বিলের তফসিলে ৩০ ধরনের অপরাধ চিহ্নিত করে সেগুলোর ক্ষেত্রে কী সাজা হবে তা উল্লেখ করা হয়েছে।

 

৯ মাসে পদ্মা সেতু থেকে ৬০৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা টোল আদায় : পদ্মা সেতু থেকে গত ৯ মাসে ৬০৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা টোল আদায় হয়েছে বলে জাতীয় সংসদকে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গতকাল জাতীয় সংসদের অধিবেশনে আওয়ামী লীগের সদস্য বেনজীর আহমেদের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে ওবায়দুল কাদের এ কথা জানান।

 

সেতুমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের ২৫ জুন পদ্মা সেতু চালুর পরে গত মার্চ পর্যন্ত ৬০৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা টোল আদায় করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন বঙ্গবন্ধু সেতু চালুর পর গত মার্চ পর্যন্ত ৭ হাজার ৬৯৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা এবং ২০০৮ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি মুক্তারপুর সেতু চালুর পরে এখন পর্যন্ত ২০৫ কোটি ৫০ লাখ টাকার টোল আদায় করা হয়েছে।

 

ব্যাংকের টাকা লুট ঠেকাতে ব্যবস্থা না নেয়ার দাবি: ব্যাংকের টাকা লুটপাট এবং বিদেশে পাচারের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ করে সংসদে অর্থমন্ত্রীর সমালোচনা করলেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই তিনি ইফতারে যে টাকা খরচ হয় সেটা নিষেধ করেছেন। কিন্তু ইফতারে আর কী যেত, হয়তো ১০০ কোটি টাকা যেত।

 

কিন্তু ব্যাংকের হাজার কোটি টাকা মেরে আমেরিকায় পালালেন সাউথ বাংলা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আমজাদ। পাচার করা অর্থে যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও একাধিক বাড়ি কিনে বসবাস করছে। উনি একা তো এ টাকা মারেননি।

 

সংসদে অর্থমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, পত্রিকায় বড় বড় হেডিং পড়তে থাকলে তিন ঘণ্টা সময় লাগবে। কিন্তু অর্থমন্ত্রীর তরফ থেকে বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের তরফ থেকে কোনো প্রতিবাদ আসেনি। কারণ তারা জানেন এক হাজার কোটি টাকা কোনো টাকাই না। এখানে যদি ৫ হাজার কোটি টাকার ওপরে হয়, তাহলে নড়েচড়ে বসে। ১০ হাজার কোটি টাকা হলে আরেকটু নড়েচড়ে বসে।

 

এই যে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে, কাদের টাকা? এটা তো এ দেশের জনগণের টাকা। ব্যাংকের মালিক তো জনগণ। এই ব্যাংকগুলো এখন পারিবারিক ব্যাংক হয়ে গেছে। এগুলো জনগণের ব্যাংক নেই। তিনি আরো বলেন, এই যে টাকা, এর জবাবদিহিতা কে দেবে? কারণ মন্ত্রী নেই, মন্ত্রী এখানে থাকেন না। কোনো জবাবদিহিতা নাই। কোথাও যদি কারো জবাবদিহিতা না থাকে তাহলে এই দেশটা চলবে কীভাবে? সবাই শুধু প্রধানমন্ত্রীর দোহাই দেবেন তাকে যদি ব্যবহার করেন ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এটা বলছেন’।

 

উনি তো একটা ব্যাংকের লাইসেন্স দেন, ব্যাংক কীভাবে চলবে সেটা দেখার দায়িত্ব বাংলাদেশ ব্যাংকের। মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশনের তাদেরকে জবাবদিহিতায় আনতে হবে। কেন এই ব্যাংকের টাকাগুলো, জনগণের টাকাগুলো লুটপাট হচ্ছে। কে এজন্য দায়ী। এজন্য একটি তদন্ত কমিটি করতে হবে।

 

তিনি বলেন, সমস্ত ব্যাংক সেক্টর এখন অটোমোশন হয়ে গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত ইনটার্নাল অডিট করে, প্রত্যেকটা ব্যাংকে অডিট করে। স্টক এক্সচেঞ্জে আজকে যে লেনদেন হবে, সিকিউরিটি এক্সচেঞ্জ জানবে কার কত বাকি আছে। তিনশ বাকি থাকলে তার পরদিন ক্রেডিট করতে দেবে না।

 

আর এখানে হাজার কোটি টাকা, এটা তো এক দিনে নেয়নি। তাহলে বাংলাদেশ ব্যাংক বা অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন তারা কী করল। যাদের ওপর দায়িত্ব ছিল, মনে করতে হবে যে সরিষায় ভ‚ত রয়েছে। সবাই যে এর সঙ্গে জড়িত।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version