-->
শিরোনাম

ঈদের আগে মার্কেটে মার্কেটে আগুন আতঙ্ক

ইমরান খান
ঈদের আগে মার্কেটে মার্কেটে আগুন আতঙ্ক

ইমরান খান: বঙ্গবাজার ও নিউ সুপার মার্কেটের পর এবার আগুনে পুড়ল রাজধানীর উত্তরার বিজিবি মার্কেট। সোমবার সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে আগুনের শুরু। দীর্ঘ এক ঘণ্টার চেষ্টায় নিয়ন্ত্রণে আনে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট। পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঠিক আগ মুহূর্তে রাজধানীর বিভিন্ন মার্কেটে ঘটছে সিরিজ আগুনের ঘটনা।

 

রাজধানীর বড় বড় মার্কেটে সিরিজ আগুনের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে ব্যবসায়ীদের মধ্যে। এমন অবস্থায় রাজধানীর মিরপুর, মোহাম্মদপুর ও ধানমন্ডি বিভিন্ন এলাকায় অগ্নিকান্ড থেকে রক্ষা পেতে রাত জেগে পাহারা দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। সতর্কতা হিসেবে রাত ১২টার মধ্যেই বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে সংশ্লিষ্ট মার্কেটের বিদ্যুৎ সংযোগ।

 

বিজিবি মার্কেটে আগুনের বিষয়ে জানতে চাইলে ফায়ার সার্ভিসের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার রোজিনা আক্তার জানান, সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে উত্তরা ৭ নম্বর সেক্টরে বিজিবি মার্কেটে আগুন লাগার সংবাদ পাই। প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

 

এর আগে শনিবার ভোর ৫টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগে। ফায়ার সার্ভিসের ৩০টি ইউনিটের ২২০ জন সদস্যের প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টার চেষ্টায় সকাল ৯টা ১০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহযোগিতা করে বিমান- নৌ-সেনাবাহিনী ও বিজিবি। আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা স্বাভাবিকসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কাজ করেন র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা।

 

এ ঘটনায় ব্যবসায়ীদের লাখ লাখ টাকার পণ্য ও বিপুল নগদ টাকা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। রোববার অগ্নিকান্ডের ক্ষতিগ্রস্ত ২৭ জন ব্যবসায়ী নিউ মার্কেট থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে নিউ মার্কেট থানার অফিসার ইনচার্জ শফিকুল গনি সাবু বলেন, রোববার সন্ধ্যার পর ভুক্তভোগী ও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ী থানায় ভিড় করেন। একেকজনের একেক ধরনের অভিযোগ।

 

কারো টাকা পুড়েছে, কারো দোকান, কারো এনআইডিসহ প্রয়োজনীয় সব ডকুমেন্ট পুড়েছে। সব মিলে ২৭টি জিডি হয়েছে। এরই মধ্যে নিউ সুপার মার্কেটে অগ্নিকাÐের কারণ অনুসন্ধান, ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রণয়ন এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে ৯ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন। কমিটিকে আগামী তিন দিনের মধ্যে কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

 

এদিকে সোমবার নিউ সুপার মার্কেটে গিয়ে দেখা গেছে, নিজ নিজ দোকানের পুড়ে যাওয়া পণ্য পরিষ্কার করছেন ব্যবসায়ীরা। এ সময় সুমন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, লাখ লাখ টাকার পণ্য আজ আবর্জনা হয়ে গেছে। এগুলো সরিয়ে ঈদের আগে কিছু বেচাকেনা করতে পারি সে প্রস্তুতি নিচ্ছি। সুযোগ পেলে বাকিতে পণ্য এনে বিক্রি করব।

 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সিরিজ অগ্নিকান্ডের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার মার্কেটের ব্যবসায়ী ও কর্তৃপক্ষকে পুলিশের পক্ষ থেকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। মার্কেটে সিসিটিভি ক্যামেরার সংখ্যা বাড়ানো, পর্যাপ্ত সিকিউরিটি গার্ড রাখাসহ বিভিন্ন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে মার্কেটগুলোকে।

 

রোববার রাতে রাজধানীর পল্লবীর ১১ নম্বর সেকশনের নিউ সোসাইটি মার্কেটে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দোকান বন্ধ করেও মার্কেট পাহারা দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। পাশাপাশি বাড়ানো হয়েছে সিকিউরিটি গার্ডসহ অন্যান্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এই মার্কেটের কার্পেটের দোকানি নাসেম জানান, সব মার্কেটে আগুন লাগছে। ভয় থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এজন্যই দোকান বন্ধ করার পরও দোকান পাহারা দিচ্ছি। আগুনের ভয়ে ক্রেতাদের আগমন অন্যান্য বছরের তুলনায় কম হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মিরপুর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার জসিম উদ্দিন মোল্লা জানান, মার্কেটে মার্কেটে অগ্নিকান্ডের ঘটনায় আমরা সতর্ক রয়েছি। মিরপুর মডেল থানা, পল্লবী ও রূপনগরসহ সব থানার ওসি ও পুলিশ কর্মকর্তারা মার্কেটগুলো পরিদর্শন করছেন। আমরাও ব্যবসায়ী ও মার্কেট কমিটির নেতাদের ডেকে কথা বলেছি। তাদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version