-->
শিরোনাম

স্বস্তি ফিরছে আবহাওয়ায়, কমছে তাপমাত্রা

নিজস্ব প্রতিবেদক
স্বস্তি ফিরছে আবহাওয়ায়, কমছে তাপমাত্রা

স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে আবহাওয়ায়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, এ মুহূর্তে তাপমাত্রা আর বাড়বে না। আজ বুধবার থেকে তাপমাত্রা অনেকটাই কমে আসবে। দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে। বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা আরো কমে আসবে।

 

স্বস্তি ফিরবে জনজীবনে। অসহনীয় গরম থেকে বাঁচতে সবাই যখন বৃষ্টির অপেক্ষায়, তখন এই আশার বাণী শোনাল আবহাওয়া অফিস। তারা জানায়, ২২ এপ্রিল থেকে আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি ঘটবে। সেইসঙ্গে কমবে তাপমাত্রা।

 

তবে আবহাওয়া অফিস তাপমাত্রা কমার আভাস দিলেও এখন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাজশাহীতে এই তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে। যা আগের দিন ঈশ^রদীতে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছিল। আগের দিনের চেয়ে এই তাপমাত্রা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমেছে।

 

এদিকে দেশের তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে থাকায় প্রচন্ড গরমে জনজীবন এখন অতিষ্ঠ। দিনে যাদের কাজের জন্য ঘরের বাইরে যেতে হচ্ছে, তাদের একেবারে জবুথবু অবস্থা। তাপপ্রবাহের কারণে তাদের আয়-উপার্জনেও পড়ে ভাটা। রাজধানীসহ সারা দেশে এই তাপদাহে পুড়ছে মানুষ। অন্য বছরগুলোতে যদিও মাঝেমধ্যে সামান্য বৃষ্টি ও বৈশাখী ঝড়ের দেখা মেলে। এবার এখনো তেমন ঝড়-বৃষ্টির দেখা মেলেনি।

 

তাপপ্রবাহের কারণে অনেকের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিচ্ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তাপদাহের এই সময়ে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। তাপদাহে বেশি কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া দিনমজুর, রিকশা-ভ্যানচালক ও কৃষকরা। ফেটে চৌচির ফসলি ক্ষেত। ঝরে পড়ছে আম-লিচুর মুকুল। এমন পরিস্থিতিকে ‘দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া’ ঘোষণা করে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহব্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

 

এদিকে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, গত দুই দিনের তুলনায় তাপমাত্রা বেশ খানিকটা কমেছে। দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে রাজশাহীতে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, আগের দিন যা ছিল পাবনায় ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে রাজধানী ঢাকার তাপমাত্রাও কমেছে। আগের দিন ৩৮ ডিগ্রি থেকে কমে মঙ্গলবার তা ৩৭ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমেছে। তাপমাত্রা বেশি থাকার কারণে আজ দেশের বেশিরভাগ এলাকায় দাবদাহ থাকবে।

 

তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, তাপমাত্রা এর চেয়ে বেশি বাড়ার সম্ভবনা আর নেই। ইতোমধ্যে আকাশে মেঘের আনাগোনা বেড়েছে। সেইসঙ্গে বাতাসে আর্দ্রতাও বেড়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। আবহাওয়া অফিসের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ আব্দুল মান্নান বলেন, দু-এক দিনের মধ্যে তাপমাত্রা কমে স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরে আসবে আবহাওয়ায়। এছাড়া ২১ অথবা ২২ এপ্রিলের মধ্যে বৃষ্টিপাতের আভাস রয়েছে। তিনি জানান, বৃষ্টিপাত হলে তাপমাত্রা কমে স্বস্তি ফিরবে।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, সারা দেশে তাপমাত্রা ধীরে ধীরে কমতে থাকবে। আজ থেকে ঢাকার তাপমাত্রা কমতে শুরু করবে। কাল থেকে সিলেট, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা অঞ্চলে বৃষ্টি হতে পারে। তবে ২৩ এপ্রিল থেকে সিলেট-সুনামগঞ্জসহ হাওর এলাকায় ভারি বর্ষণ হতে পারে।

 

তিনি বলেন, ২৩ এপ্রিল ঢাকা, চট্টগ্রাম, কুমিল্লা, চাঁদপুর অঞ্চলের কোনো কোনো এলাকার ওপর দিয়ে বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি ও কালবৈশাখী বয়ে যেতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতোই বাংলাদেশে চরমভাবাপন্ন আবহাওয়া বিরাজ করছে। তাই দীর্ঘ দাবদাহের পর আবার ভারি বর্ষণ হতে পারে।

 

ঢাকা শহরের তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য অতিরিক্ত যানবাহন, ঘরে ঘরে এয়ারকন্ডিশনিংয়ের তাপ এবং নির্মাণকাজের ফলে সৃষ্ট তাপ অন্যতম প্রধান কারণ বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, এ কারণে হয়তো ঢাকার পাশের মানিকগঞ্জ জেলাতেই তাপমাত্রা ঢাকার চেয়ে ২-৩ ডিগ্রি কম।

 

আবহাওয়াবিদ শাহনাজ সুলতানা বলেন, ২৩ ও ২৪ এপ্রিল বিচ্ছিন্নভাবে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ঝড়-বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। ঈদ-পরবর্তী সময়ে বৃষ্টির পরিমাণ বাড়তে পারে। তবে বর্তমান তাপমাত্রার প্রভাব ঈদের সময়েও থাকবে। ঈদের সময় তাপমাত্রা এত বেশি থাকবে না, অনেকটাই কমে যাবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

 

এদিকে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সিলেটের দু-এক জায়গায় বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সারা দেশে দিন ও-রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকবে। আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, চুয়াডাঙ্গা ও কুষ্টিয়া জেলার ওপর দিয়ে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। দেশের অন্যান্য অংশে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version