আগামী ৩ মাসের জন্য সুন্দরবনে প্রবেশ নিষিদ্ধ। এ সময় সুন্দরবনে পর্যটক প্রবেশ, সাধারণ মানুষের চলাচলসহ নদী ও খালে মাছ ধরা নিষিদ্ধ থাকছে।
বৃহষ্পতিবার থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হয়েছে। আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা থাকবে। সুন্দরবনের প্রাণ প্রকৃতি রক্ষা, বন্য প্রাণী এবং নদী-খালে মাছের বিচরণ ও প্রজনন কার্যক্রমের সুরক্ষায় এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ।
টানা তিন মাস নিষেধাজ্ঞা দেয়ার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ জেলেদের খাদ্য সহায়তা দিয়ে আসছে সরকার। নিষেধাজ্ঞার সময় ভিজিএফ কর্মসূচির আওতায় এসব জেলেকে ৩ মাসে ৮৬ কেজি চাল দেয়া হচ্ছে। এবার জেলেদের জন্য ১ হাজার ২৯২ মেট্রিক টন চাল ভিজিএফ বরাদ্দ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৬৭ টন বিতরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন।
বন বিভাগ বলছে, জুন থেকে আগস্ট-এই ৩ মাস প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের নদী ও খালে থাকা বেশিরভাগ মাছ ডিম ছাড়ে। এ কারণে ১ জুন থেকে ৯২ দিনের জন্য জেলেদের সুন্দরবনে প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে।
বন বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, সুন্দরবনে মৎস্য সম্পদ রক্ষায় ২০১৯ সাল থেকে প্রতিবছর ১ জুন থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধ রাখা হচ্ছে।
সুন্দরবনের ৬ হাজার ১৭ বর্গকিলোমিটার বাংলাদেশ অংশে জলভাগের পরিমাণ ১ হাজার ৮৭৪ দশমিক ১ বর্গকিলোমিটার, যা পুরো সুন্দরবনের আয়তনের ৩১ দশমিক ১৫ ভাগ। সুন্দরবনের জলভাগে ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া আছে।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার কারণে বুধবার পর্যন্ত খুলনা ও এর আশেপাশের এলাকার ৩ হাজারের বেশি বনজীবী নৌকা নিয়ে সুন্দরবন থেকে লোকালয়ে ফিরে এসেছে।
বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সুন্দরবন বন বিভাগের আওতাধীন খুলনা সাতক্ষীরা রেঞ্জে মোট ১২ হাজার নৌকার সুন্দরবনে প্রবেশের বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) আছে। সে হিসেবে প্রতিটি রেঞ্জে মোট ৩ হাজার বিএলসি নৌকা আছে। খুলনার বানিয়াখালী, কাশিয়াবাদ, কোবাদক ফরেস্ট স্টেশনসহ খুলনা রেঞ্জের আওতায় ২ হাজার ৯০০টি নৌকার সুন্দরবনে প্রবেশের বিএলসি (বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট) আছে।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, খুলনাতে মোট নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৪৮ হাজার ১১৩ জন। আর সমুদ্রগামী জেলের সংখ্যা ২৩০৭৭ জন।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য