-->
শিরোনাম

সবজির দামে সামান্য স্বস্তি, সুখবর নেই অন্য পণ্যে

নিজস্ব প্রতিবেদক
সবজির দামে সামান্য স্বস্তি, সুখবর নেই অন্য পণ্যে

অবশেষে সবজির বাজারে কিছুটা ফিরেছে। গত সপ্তাহের তুলনায় সবজির দাম সামান্য কমেছে।

 

তবে ক্রেতারা বলছেন, প্রকৃতপক্ষে এটিকে কমা বলা যাবে না। কারণ এ পণ্যগুলো দীর্ঘসময় ধরে বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছিল। এখন দাম কিছুটা নিম্নমুখী। এরপরও বছরের যেকোনো স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় বাজারে এখন সবজির দাম অনেক চড়া।

 

রাজধানীর কয়েকটি বাজার ঘুরে সবজির দাম কমার চিত্র লক্ষ করা গেছে। তবে কমতে দেখা যায়নি অন্য কোনো পণ্যের দাম। এখনো তেল, চিনি, পেঁয়াজ, আদা ও ডিমসহ মাছ-মাংসের দাম অস্থিতিশীল। যে কারণে স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর চাপ শুধু বাড়ছেই। সদ্য প্রস্তাবিত বাজেটেও সাধারণ মানুষ নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় পর্যায়ে আসার সুখবরের অপেক্ষায় ছিলেন। তবে সেটা তাদের আশানুরূপ হয়নি।

 

রাজধানীর বাজারগুলোয় অধিকাংশ সবজি ৫০ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা।

 

এ তালিকায় রয়েছে পটোল, ঢ্যাঁড়স, বেগুন, পেঁপে, ঝিঙা, চিচিঙ্গা। তবে করলা, বরবটি, কচুর লতি ও টমেটো এখনো ৬০ থেকে ৮০ টাকার মধ্যে রয়েছে। আর সজনে বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা কেজি।

 

রামপুরা বাজারে কেনাকাটা করতে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা এনামুল হক বলেন, তেল, চিনি, ডালের মতো আমদানিনির্ভর পণ্যের দাম যে হারে বেড়েছে, ভেবেছিলাম বাজেটে সেসব পণ্যের দাম সহনীয় করতে কোনো না কোনো পদক্ষেপ থাকবে। কিন্তু নেই বরং দেখলাম, অনেক পণ্যের দাম বাড়ছে।

 

সেজন্য বলা যায়, বাজেট আমাদের মতো সাধারণ ক্রেতার জন্য কোনো সুখবর নিয়ে আসেনি। একইভাবে মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা ইউনুস হোসেন বলেন, পটোল-ঢ্যাঁড়সের মতো গ্রীষ্মকালীন সবজির দাম কেজিতে ৫-১০ টাকা কমেছে। বাজারে এখন সবজির আমদানি গত কয়েক সপ্তাহের তুলনায় বেশি। এদিকে ঈদের পর থেকে দফায় দফায় দাম বেড়ে আলু এখনো প্রতি কেজি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

 

একই অবস্থা পেঁয়াজ ও আদার দামেও। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বাজারভেদে ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা আর আদার দাম বাড়তে বাড়তে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা কেজি পর্যন্ত উঠেছে। এ দুই পণ্যের দাম রমজানের ঈদের পর থেকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে।

 

রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে তেল, চিনি, আটা-ময়দার দামও বেড়ে চড়ায় আটকে রয়েছে। পাশাপাশি আছে কিছু পণ্যের সরবরাহ সংকটও। যেমন প্যাকেটজাত চিনি ও ময়দা অধিকাংশ দোকানে নেই। বোতলজাত সয়াবিন তেল পাওয়া গেলেও মুদি দোকানিরা বলছেন ঘাটতি আছে। গত দুই সপ্তাহ ধরে অধিকাংশ তেল-চিনি পরিশোধনকারী কোম্পানি নতুন করে পণ্য সরবরাহ করেনি।

 

দ্রুত সরবরাহ পরিস্থিতির উন্নতি না হলে এসব পণ্যের দাম আরো বাড়তে পারে বলে শঙ্কা খুচরা ব্যবসায়ীদের।

 

খিলগাঁও তালতলা বাজারের মুদি দোকানি আবুল হোসেন বলেন, তেলের এখনো সংকট রয়েছে। প্যাকেটজাত চিনি উধাও। ঈদের আগে আবারো তেলের বাজার অস্থিতিশীল হতে পারে। এদিন তার দোকানে প্রতি কেজি চিনি ১৪০ টাকা ও সয়াবিন তেল ১৯৮ টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

 

এদিকে টানা কয়েক সপ্তাহ থেকে অস্থির ফার্মের ডিমের দাম। তবে ব্রয়লার মুরগির দাম একই রয়েছে। প্রতি কেজি ব্রয়লার এখন ২২০ থেকে ২৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোথাও কোথাও আরো কমেও বিক্রি হতে দেখা গেছে। অন্যদিকে প্রতি হালি ডিমের দাম এখনো ৫০ টাকা। অন্যান্য নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতির উত্তাপ এখন ছড়িয়েছে মাছের বাজারেও।

 

প্রকারভেদে সাধারণ চাষের মাছের দাম কেজিতে বেড়েছে প্রায় ৫০ থেকে ২০০ টাকা।

 

অন্যদিকে ইলিশ-চিংড়ির পাশাপাশি দেশি পদের (উন্মুক্ত জলাশয়ের) মাছের দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৫০০ টাকা। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, চাষের পাঙ্গাস-তেলাপিয়া থেকে শুরু করে দেশি প্রজাতির সব ধরনের মাছের দাম বেড়েছে।

 

আগে বাজারে প্রতি কেজি পাঙ্গাস মাছ বিক্রি হতো ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা এখন ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় ঠেকেছে।

 

অন্যদিকে তেলাপিয়া মাছের কেজি হয়েছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা, যা আগে কেনা যেত ১৮০-২০০ টাকায়।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version