এক দিনের ব্যবধানে দিনাজপুরের হাকিমপুরের হিলিতে কাঁচামরিচের কেজিতে ১২০ টাকা কমেছে। এক দিন আগেও ৫০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা কমে ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রোববার থেকে স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পণ্যটি আমদানি হতে পারে এমন খবরে দাম কমেছে। তবে আমদানি শুরু হলে দাম আরো কমে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরবে বলে আশা ক্রেতা ও বিক্রেতাদের।
হিলি বাজারে কাঁচামরিচ কিনতে আসা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, কাঁচামরিচের দামের যে ঊর্ধ্বমুখী, তাতে গত কয়েকদিন ভয়েই কিনিনি।
আজ (রোববার) ৪০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অপর ক্রেতা নারগিস সুলতানা বলেন, কাঁচামরিচের দাম অন্য সব পণ্যকে ছাড়িয়ে গেছে। দাম বাড়তে বাড়তে ৫০০ টাকায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আজকে কিছুটা কমেছে।
হিলি বাজারের কাঁচামরিচ বিক্রেতা বিপ্লব শেখ জানান, বিভিন্ন কারণে কাঁচামরিচের উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে। এদিকে আমদানি ও সরবরাহও বন্ধ। এতে পণ্যটির দাম বেড়েছে। তবে গত কালের চেয়ে আজ মোকামে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কম। দেশীয় কাঁচামরিচের পাশাপাশি স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি শুরু হলে দাম আরো কমবে।
এদিকে আজ থেকে কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমেছে, তবুও ৪৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে ঢাকায়, যা ক্রেতাদের নাগালের বাইরে। সবজির দাম স্থিতিশীল রয়েছে। তবে প্রতি কেজি আলুতে ৫ টাকা বেড়ে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর আগারগাঁও ও বিএনপি বাজারসহ কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমন তথ পাওয়া গেছে। তবে আগের দিনের চেয়ে প্রতি কেজি কাঁচামরিচের দাম ১২০ টাকা কমেছে।
বিএনপি বাজারে সবজি বিক্রেতা বাচ্চু শিকদার বলেন, শনিবার কাঁচামরিচ ৬০০ টাকা কেজি বিক্রি করছি। তবে আজকে ৪৮০ টাকা। পাইকারি বাজারে কমছে। আলু ও বেগুনের দাম বাড়তি। আগারগাঁও কাঁচাবাজারে প্রতিটি লাউ ৪০, ফুলকপি ৪০ ও বাঁধাকপি ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। একই দামে বেচাকেনা হয়েছিল। কুমড়ার জালি ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজার কিছুটা স্থিতিশীল।
বিভিন্ন সবজি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, টমেটো দেশি প্রতি কেজি ১৫০, ভারতীয় টমেটো ১৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া প্রতি কেজি পটোল ৪০, বেগুন ১০০ থেকে ১১০, ঢ্যাঁড়শ ৬০, ঝিঙা ৬০, চিচিঙ্গা ৬০, পেঁপে ৬০, লাউ ৬০, মুলা ৬০, কচুরমুখী ১০০, শসা ৫০ থেকে ৬০, দেশি গাজর ৮০ ও চায়না গাজর ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
আগারগাঁও এলাকার সবজি বিক্রতা জুয়েল মোল্লা বলেন, কাঁচামরিচের দাম কিছু কমতি। সবজির দাম একই আছে। তবে হঠাৎ করেই আলুর দাম কেজিতে ৫ টাকা বাড়তি।
এদিকে হিলি স্থলবন্দরের আমদানিকারক আনোয়ার হোসেন বলেন, সরবরাহ কমে দেশের বাজারে কাঁচামরিচের দাম অস্থিতিশীল হয়ে উঠেছে। দাম নিয়ন্ত্রণে ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ২৫ জুন আমদানির অনুমতি দেয় সরকার।
এ পর্যন্ত হিলি স্থলবন্দরের সাত আমদানিকারক ৩ হাজার টন কাঁচামরিচ আমদানির অনুমতি পায়। আইপি হাতে পেয়ে এলসি খুলে আমদানিকারকরা ভারতীয় রপ্তানিকারককে কপি দেয়ায় দীর্ঘ ১০ মাস বন্ধের পর ২৬ জুন থেকে আমদানি শুরু হয়। তবে এক দিন পরই ঈদের ছুটির ফাঁদে আমদানি বন্ধ হয়ে যায়।
তিনি আরো বলেন, ছুটি শেষে আজ থেকে দেশের অন্যান্য স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি রপ্তানি শুরু হওয়ায় ওই সব বন্দর দিয়ে কাঁচামরিচ আসছে। এতে বাজারে সরবরাহ বাড়ায় দাম কমতে পারে।
সোমবার থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আসা যাওয়া শুরু হবে। তবে ঈদের আগে বন্দর দিয়ে পাঁচ ট্রাকে ২৭ টন কাঁচামরিচ আমদানি হয়, যা আমরা বন্দরে ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করেছিলাম। ভারতেই বর্তমানে পাইকারিতে কাঁচামরিচ ১৪০ রুপিতে বিক্রি হচ্ছে। এতে পরিবহন ও আমদানি খরচ মিলে ২৪০ টাকার মতো পড়বে। যার কারণে ২৫০ টাকার নিচে বিক্রি সম্ভব নয়।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য