-->
শিরোনাম

বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড হেনরি কিসিঞ্জার

নিজস্ব প্রতিবেদক
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড হেনরি কিসিঞ্জার

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার, যিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড। পঁচাত্তরের পনেরো আগস্টের ঠিক এক সপ্তাহ আগে তারই কূটচালমাফিক ঢাকার গুলশানের একটি বাড়িতে মার্কিন দূতাবাসের কর্মকর্তা আর জেনারেল জিয়ার উপস্থিতিতে ৩২ নম্বর কিলিং মিশনের পরিকল্পনা চূড়ান্ত হয়।

 

এ তথ্য জানান সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালীউর রহমান। বাঙালির মুক্তির মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। স্বাধীন দেশের স্থপতিকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয় ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট। ধানমন্ডির এই বাড়িতে হত্যা করা হয় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যদের। এখনো বাড়ির দরজা ও দেয়ালে গুলির চিহ্নগুলো বলে দিচ্ছে সেই রাতে কী রকম ভয়াবহতা বা কী রকম তান্ডব চালিয়েছিল ঘাতক বাহিনী।

 

মুক্তিযুদ্ধের সময় কারাবন্দি থাকা অবস্থায় বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে নানান প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেনরি কিসিঞ্জার। কিন্তু তার সেসব প্রস্তাব নাকচ করে দেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি হিসেবে জাতিসংঘে ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু।

 

এরপর ২৯ সেপ্টেম্বর হেনরি কিসিঞ্জার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দীর্ঘ আলাপচারিতায় আবারো নানান প্রস্তাব দেন, তবে তা প্রত্যাখ্যান করেন বঙ্গবন্ধু। এরপর ৩০ অক্টোবর ১৯ ঘণ্টার ঝটিকা সফরে ঢাকায় আসেন কিসিঞ্জার। আর তারপর থেকেই ঢাকার মার্কিন দূতাবাসে দেশীয় ষড়যন্ত্রকারীদের আনাগোনা বেড়ে যায়। বঙ্গবন্ধুকে সে সময় খুব কাছ থেকে দেখেছেন সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালীউর রহমান। ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রে হেনরি কিসিঞ্জরের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর সেদিনের বৈঠকের সাক্ষী।

 

সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালীউর রহমান বলেন, ‘ধরা পড়ার আগের রাতে বঙ্গবন্ধু যে ঘোষণা করেছিলেন, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের সৃষ্টি হলো আজকে থেকে। এ কথাটি প্রত্যাহার করার জন্য বঙ্গবন্ধুকে বলেন কিসিঞ্জার। আপনি ফিরে আসেন যে আমরা পাকিস্তানের অধীনে আছি। বঙ্গবন্ধু রাজি হননি, তিনি যখন ঢাকায় আসেন তখন বলে দিলেন ‘দিস ইজ মাই কান্ট্রি, মাই বাংলাদেশ’। কিন্তু হেনরি কিসিঞ্জার তাকে ক্ষমা করেনি। আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মধ্যে মূলত এই একটি লোকই ছিল।’

 

এই কূটনীতিক আরো বলেন, ঢাকার গুলশানে এক বৈঠকে চূড়ান্ত হয়েছিল ৩২ নম্বর কিলিং মিশনের মূল নীলনকশা। ওয়ালীউর রহমান বলেন, ‘১৫ আগস্টের ৭ দিন আগে গুলশানের একটি বাড়িতে শেষ মিটিং হয়। সেখানে আমেরিকান অ্যাম্বেসির একজন ছিলেন আর ছিলেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। সেখানে কীভাবে বঙ্গবন্ধুকে কীভাবে মারা হবে, কবে মারা হবে সে সিদ্ধান্তটা হয়ে গেল।’

 

সেই হেনরি কিসিঞ্জার এখনো বেঁচে আছে, অথচ একটা তথ্য আজও অজানা বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে পরিবারের সদস্যদের নির্মম হত্যাকান্ডের নির্দেশদাতা কে- কিসিঞ্জার? নাকি অন্য কেউ? সাবেক রাষ্ট্রদূত ওয়ালীউর রহমান বলেন, ‘এই ১৮ জনকে খুন করার ইচ্ছা কি কিসিঞ্জারের ছিল? তা ইতিহাসই বলতে পারবে।’

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version