-->
শিরোনাম
নির্বাচনের ক্ষণগণনা

সময় মাত্র এক মাস

শাহীন রহমান
সময় মাত্র এক মাস

শাহীন রহমান: অক্টোবর মাস শুরু। এই অক্টোবর দেশের জন্য অধিক গুরুত্বপূর্ণ ভাবছেন বিশেষজ্ঞরা। সংবিধান অনুযায়ী আর মাত্র এক মাস পরেই গঠিত হবে অন্তবর্তী সরকার। তবে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনে হাতে মাত্র এক মাস সময় থাকলেও দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন নিয়ে রাজনৈতিক বিরোধের এখনো কোনো সুরাহা হয়নি। বিএনপি এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে।

 

অন্যদিকে আওয়ামী লীগ সংবিধান অনুযায়ি নির্বাচনের পথে হাটছে। পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে ব্যস্ত তারা। তবে দুদলের সমঝোতা না হলেও নির্বাচন কমিশন সংবিধান অনুযায়ি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে। সংবিধান অনুযায়ি ৩১ অক্টোবর গঠিত হবে নির্বাচনকালী অন্তবর্তী সরকার। সব মিলিয়ে অক্টোবর মাস দেশের রাজনীতিতে ‘হট টাইম’ হিসেবে বিবেচনা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এদিকে সংবিধান অনুযায়ি নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন। তফসিল ঘোষণা ছাড়া বাকি কাজ পুরোদমে শুরু হয়েছে। তারা বলছে সংবিধানের বাইরে গিয়ে নির্বাচন কমিশনের কিছু করার এখতিয়ার নেই।

 

ইসি মো. আলমগূীর সম্প্রতি বলেন, সংবিধান অনুযায়ী জানুয়ারির ২৯ তারিখের মধ্যে যেভাবেই হোক না কেন নির্বাচন হতে হবে। কারণ তা না হলে একটি সাংবিধানিক শূন্যতা তৈরি হবে। সেই গ্যাপ তৈরি হলে দেশে একটা অরাজকতা পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে। সেটি তো নির্বাচন কমিশন হতে দিতে পারে না।

 

নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান বলেছেন, আগামী নভেম্বরের প্রথম দিকে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে। আর জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। আমরা সংবিধানের মধ্যে আছি, সংবিধানের মধ্যেই নির্বাচন করবো। আর এই সংবিধান অনুযায়ি নির্বাচনের ক্ষণগণনার জন্য ইসির হাতেও রয়েছে মাত্র একমাস সময়। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে আগামী ২৯ জানুয়ারি মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে। এর আগেই ইসি জানিয়ে দিয়েছে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।

 

এদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন দুই দলের অনড় অবস্থানের কারণে নির্বাচন নিয়ে একটি অচল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। আবার নির্বাচন প্রসঙ্গে বিদেশি চাপও ক্রমাগত বাড়ছে। সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ভিসানীতি কার্যকরা করা হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তারা বলছে নির্বাচন সুষ্ট‚ না হলে আগামীতে আরও পদক্ষেপ নেয়া হবে। এই অবস্থার মধ্যে দুদলের মধ্যে সমঝোতার আভাস নেই।

 

মূলত তারা দুই মেরুতেই অবস্থান করছেন। এমন অবস্থায় আগামী নির্বাচন নিয়ে তৈরি হয়েছে এক ধরনের অস্পষ্টতা। তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন যাই হোক না কেন, দেশে জন্য আগামী একমাস ক্রুশিয়াল টাইম। বিএনপি ঘোষণা দিয়েছে অক্টোবরেই কঠিন আন্দোল গড়ে তোলার। এদিকে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে আগামী একমাস সরকার পাহারা দেয়ার কর্মসূচি নেয়া হয়েছে।

 

এদিকে জানা গেছে সংবিধান অনুযায়ি নির্বাচনের প্রস্তুতির কথা ইসির পক্ষ থেকে বলা হলেও তারাও রাজনৈতিক সমঝোতার দিকে তাকিয়ে আছে। এ কারণে এবারের তফসিল ঘোষণায় কিছুটা কৌশলী চিন্তাভাবনা রয়েছে তাদের। বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা ও ভোটের দিনের মধ্যে বেশি সময় রাখার পরিকল্পনা করছে নির্বাচন কমিশন। জানা গেছে কমিশন তফসিল ও ভোটের দিনের মধ্যে ৬০ থেকে ৭০ দিনের ব্যবধান রাখার কথা ভাবছে, যা গত দুই নির্বাচনের সময় ৪০ থেকে ৫২ দিনের ব্যবধান ছিল।

 

সংবিধান অনুযায়ি মেয়াদ শেষে আগের ৯০ দিনের মধ্যে ভোট করতে হবে। সাংবিধানিকভাবে ২০২৪ সালের ২৯ জানুয়ারির আগের ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। সেক্ষেত্রে ১ নভেম্বর শুরু হবে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের ক্ষণগণনা।

 

নির্বাচন কর্মকর্তারা বলছেন, প্রথা অনুযায়ী, সর্বশেষ নবম, দশম ও একাদশ সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয় ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর ও ২০১৮ সালের ৮ নভেম্বর। এবার ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে বা জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট করতে গেলে নভেম্বরের দ্বিতীয়ার্ধে ভোটের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে।

 

নির্বাচনের ক্ষণগণণা শুরুর পরপরই ভোটের যাবতীয় প্রস্তুতি শেষ করার পাশাপাশি আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা ও সবশেষ প্রস্তুতি অবগত করে প্রথা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি রয়েছে। এরপর কমিশন বসে ভোটের দিনক্ষণ চূড়ান্ত করবে।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version