-->
শিরোনাম

সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দী গ্রেপ্তার

অনলাইন ডেস্ক
সাবেক সেনা কর্মকর্তা হাসান সারওয়ার্দী গ্রেপ্তার

বিএনপির সমাবেশ ঘিরে তাণ্ডবের দিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের কথিত উপদেষ্টাকে দলীয় কার্যালয়ে হাজিরের ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি সাবেক সেনা কর্মকর্তা লে. জেনারেল হাসান সারওয়ার্দীকে গ্রেপ্তার করেছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

 

মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন-অর রশীদ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

 

ডিবি সূত্র জানায়, পল্টন থানায় দায়ের করা একটি মামলায় সারওয়ার্দীকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাকে ডিবি কার্যালয়ে আনা হচ্ছে। রোববার (২৯ অক্টোবর) রাতে মহিউদ্দিন শিকদার নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার ২ নম্বর আসামি সারওয়ার্দী। মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে মিথ্যা পরিচয় দিয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গের অভিযোগ এনেছেন বাদী।

 

এজাহারে বলা হয়েছে, শনিবার পূর্ব ঘোষিত মহাসমাবেশ উপলক্ষ্যে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সারা দেশ থেকে দলটির নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। ওই দিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ বিএনপি নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা কাকরাইল মোড় থেকে আরামবাগ মোড় পর্যন্ত পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায়। তারা প্রধান বিচারপতির সরকারি বাসভবনসহ সরকারি স্থাপনা এবং সরকারি গাড়িসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করে। এতে পুলিশের ৪১ সদস্য আহত ও এক সদস্য নিহত হন। একপর্যায়ে বিকেল ৩টার দিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মহাসমাবেশ স্থগিত ঘোষণা করেন।

 

এজাহারে আরও বলা হয়েছে, বিএনপির ওই কর্মকাণ্ডের পর সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৭টার মধ্যে হাসান সারওয়ার্দী ও বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনের নেতৃত্বে ২০ জন নেতাকর্মীর উপস্থিতিতে কিছু সংবাদমাধ্যমের সামনে মিয়ান আরেফী নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের উপদেষ্টা পরিচয় দেন। পুলিশ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং আইন ও বিচার বিভাগের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে তার সরকারের কাছে সুপারিশ করেছেন বলে বক্তব্য দেন তিনি।

 

সেখানে মিয়ান আরেফী বক্তব্যে দাবি করেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার দিনে ১০ থেকে ১৫ বার যোগাযোগ হয় এবং মার্কিন সরকারের সবাই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে। তিনি আরও দাবি করেন, তিনি মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরকেও বাংলাদেশের পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করেছেন।

 

এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, হাসান সারওয়ার্দী এবং ইশরাক হোসেন তাকে মিথ্যা বক্তব্য দিতে সহযোগিতা করেন এবং তার বক্তব্য সমর্থন করে বিএনপি নেতাকর্মীদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতিতে উসকানি দেন। আরেফী তাদের সহায়তায় সরকারের প্রতি বিদ্বেষ সৃষ্টি করে সারা দেশে নেতাকর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি করেন।

 

এজাহারে বলা হয়, ওই সংবাদ সম্মেলনে একপর্যায়ে মিয়ান আরেফীর বক্তব্য শুনে এবং ভিডিও দেখে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটে। বিএনপি নেতাকর্মীদের মনোবল বাড়াতে আসামিরা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।

 

আমেরিকার পাসপোর্টধারী মিয়ান আরেফীর প্রকৃত নাম মিয়া জাহিদুল ইসলাম আরেফী। তার জন্ম ও বেড়ে ওঠা সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায়। শনিবার বিএনপির কার্যালয়ে মিথ্যা পরিচয়ে উসকানিমূলক বক্তব্য দেওয়ার পর রোববার (২৯ অক্টোবর) বিকেলে তিনি দেশছাড়ার চেষ্টা করেন। তবে বিমানবন্দরে ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। তিনি বর্তমানে কারাগারে আছেন।

 

ভোরের আকাশ/নি 

মন্তব্য

Beta version