সারাদেশে ঘটে যাওয়া ভূমিকম্পে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজী মুহম্মদ মুহসীন হলের বিভিন্ন অংশের পলেস্তারা খসে পড়েছে, তাছাড়া রিডিং রুমের জানালার গ্লাস, দুতলার বারান্দার একটি অংশও ধসে পড়েছে। এতে তাৎক্ষণিকভাবে কেউ গুরুতর আহত না হলেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় হুড়াহুড়ি করে নামতে গিয়ে সামান্য আহত হয়েছেন কয়েকজন।
শনিবার সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে দেশের বিভিন্ন স্থানে ৫.৬ রিখটার স্কেলে এ ভূমিকম্পের ঘটনা ঘটে। যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানায়, ভূকম্পনটির উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষীপুরের রামগঞ্জ থেকে ৮ কিলোমিটার দক্ষিণ- উত্তর দক্ষিণে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। ভূপৃষ্ঠ থেকে এর গভীরতা ছিল মাত্র ১০ কিলোমিটার।
দেখা যায়, ভূমিকম্পে হলটির কয়েকটি কক্ষের ছাদের পলেস্তারা খসে পড়েছে, দোতলার বারান্দার কার্নিশের একটি অংশ এবং রিডিং রুমের দরজার কাচ ভেঙে পড়ে। এসময় শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে হলের বাইরে নেমে আসেন। প্রাচীন এ হলটির এমনিতেই জরাজীর্ণ অবস্থা। মাঝেমধ্যেই পলেস্তারা খসে পড়ে।
এজন্য বেশ কয়েকবার হলটিতে সংস্কারও করেছে হল কর্তৃপক্ষ। এর মাঝে মাঝারি মাত্রার এ ভূমিকম্পে হলটির অবস্থা আরও ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বড় মাত্রার কোন ভূমিকম্প হলে সহজেই ভেঙে পড়তে পারে বলে মনে করছেন শিক্ষার্থীরা।
মুহসীন হলের শিক্ষার্থী আবদূর রহমান জানান, সকালে হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হলে ভয়ে দৌড়াতে থাকি। কিন্তু নিজেকে রক্ষা করার মত জায়গা ছিল না। মাত্র কয়েকজন নিচে নামতে পেরেছিল। তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে আমার হাত ছিলে গেছে। এ ভূমিকম্পেই ভবনের কয়েকটি জায়গার প্লাস্টার খসে পড়েছে। আরও বড় মাত্রার ভূমিকম্প হলে কি হবে জানি না, তবে এটা নিশ্চিত অনেক শিক্ষার্থীসহ ভবনটি ধসে পড়তে পারে সহজেই।
অন্য একজন শিক্ষার্থী বলেন, প্রশাসন ক্যাম্পাসে পার্ক বানাতে বাজেট দিতে পারলেও হল নির্মাণে মেগা প্রজেক্টের দোহাই দেয়। তারা কর্মচারীদের জন্য একাধিক বিশাল ভবন বানালেও শিক্ষার্থীদের জন্য ভাঙাচোরা ভবনই ভালো মনে করে। আমরা অনেকবার প্রশাসনকে জানিয়েছি হলের ঝুঁকিপূর্ণ বিষয় নিয়ে কিন্তু তারা কর্ণপাত করছে না। আরেকটি কালো রাতের অপেক্ষায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। যেদিন শিক্ষার্থীসহ ভবন মাটিতে মিশে যাবে সেদিন হয়ত প্রশাসনের টনক নড়বে।
এদিকে সার্বিক বিষয়ে হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মাসুদুর রহমান বলেন, আজকের ভূমিকম্পে আমাদের হলের কিছু জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেমন কেউ আহত হওয়ার খবর আমরা পাইনি। এর আগেরবারের ভূমিকম্পেও আমাদের হলের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল। তখন বিশেষজ্ঞ টিম দিয়ে দুর্বল স্থানগুলো চিহ্নিত করে সংস্কার করা হয়েছিল। নতুন ভবন নির্মাণের ব্যাপারে আমরা অনেকবার উপরমহলে কথা বলেছি তবে মেগা প্রজেক্ট পাশ হলে তবেই আমরা নতুন ভবন নির্মাণ করতে পারবো।
ভোরের আকাশ/নি
মন্তব্য