-->

শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ

কামরুল হাসান রুবেল, সাভার (ঢাকা)
শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাতে প্রস্তুত হচ্ছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ
সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য বাহারি রঙের ফুলের চারা রোপণ করা হচ্ছে

সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, দেশ-বিদেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিসহ সর্বস্তরের জনগণ। এ লক্ষ্যে প্রস্তুত করা হচ্ছে স্মৃতিসৌধ চত্বর। সেখানে ধোয়ামোছার কাজ চলছে, সৌন্দর্যবর্ধনের জন্য রোপণ করা হয়েছে বাহারি রঙের ফুলের চারা। পুরোনো ফুলগাছগুলোর ডালপালা ছাঁটাসহ বিভিন্ন সিঁড়িতে ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পড়ছে রংতুলির আঁচড়।

 

বুধবার বেলা ১১টার দিকে স্মৃতিসৌধ চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা হয়েছে চত্বরের সড়কগুলো। লেকের ময়লা সরিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে ফেলা হয়েছে। ‘বীরের এ রক্তস্রোত, মাতার এ অশ্রুধারা/ এর যত মূল্য সে কি ধরার ধুলায় হবে হারা। স্বর্গ কি হবে না কেনা। বিশ্বের ভান্ডারি শুধিবে না এত ঋণ?’ প্রায় মুছে যাওয়া এ লেখা কালো রং দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাহারি রঙের ফুলগাছসহ টবগুলো সুসজ্জিতভাবে স্থাপন করা হয়েছে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে। আগের গাছগুলোর পরিচর্যা করে সেগুলো সতেজ করেছেন মালিরা। সড়কবাতিগুলোর লোহার পাইপে নতুন করে দেওয়া হয়েছে সবুজ রং।

 

সকাল ১০টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ঘুরে দেখা যায়, মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে চলছে সংস্কারসহ সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ। সড়ক বিভাজকে নতুন করে রং করা হচ্ছে। কিছু অংশে বিভাজকের ফাঁকা জায়গায় রোপণ করা হচ্ছে ফুলসহ বিভিন্ন ধরনের গাছ। স্থানগুলো পরিষ্কারও করা হচ্ছে। এ ছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী সড়কের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে পিচের আস্তরণ দেওয়া হচ্ছে।

 

সাভার গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘দেড় মাস ধরে স্মৃতিসৌধ চত্বর ধোয়ামোছা, পরিষ্কার ও রঙের কাজ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আমাদের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করছি সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে বিজয় দিবস উদ্যাপন করতে পারব।’

 

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আসাদুজ্জামান জানান, বিজয় দিবস কেন্দ্র করে যেন কোনো ধরনের অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা না ঘটে এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধে আসা রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের নিরাপত্তায় চার স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বহিরাগত কেউ আশপাশের এলাকায় অবস্থান করলে সে বিষয়ে পুলিশকে জানানোর জন্য স্থানীয় লোকজনকে অনুরোধ করা হয়েছে।

 

এসপি মো. আসাদুজ্জামান আরো বলেন, ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে স্মৃতিসৌধসংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের শৃঙ্খলা রক্ষায় ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই দিন যেসব গাড়ি উত্তরবঙ্গের দিক থেকে ঢাকায় আসবে, সেগুলো চন্দ্রা ও গাজীপুর হয়ে প্রবেশ করবে। মানিকগঞ্জের দিক থেকে আসা গাড়ি নবীনগর মোড় হয়ে আশুলিয়া দিয়ে ঢাকায় প্রবেশ করবে। এ ছাড়া ঢাকা থেকে ছেড়ে যাওয়া গাড়িগুলো গাবতলী থেকে বেড়িবাঁধ হয়ে আশুলিয়া বা উত্তরা দিয়ে গাজীপুর হয়ে উত্তরবঙ্গের দিকে যাবে। মানিকগঞ্জের দিকের গাড়িগুলো বেড়িবাঁধ দিয়ে আশুলিয়া ও নবীনগর মোড়ের এই সড়ক ব্যবহার করবে।

 

এর আগে সোমবার দুপুরে স্মৃতিসৌধের প্রস্তুতি দেখতে এসে ঢাকা-১৯ (সাভার-আশুলিয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেছিলেন, ‘ফুলে ও সতেজ পাতায় ভরে উঠেছে স্মৃতিসৌধ চত্বর। সরকার নিরাপত্তার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছে। সরকারের এ পদক্ষেপে কোনো ধরনের নাশকতার আশঙ্কা দেখছি না। কারও পক্ষে এটি সম্ভবও হবে না। প্রতিবছরের মতো এবারও সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে স্মৃতিসৌধের যে আনুষ্ঠানিকতা, সেটি সম্পন্ন হবে।’

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version