দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে কারা বসতে যাচ্ছেন, এ নিয়ে আলোচনার কমতি নেই। সংরক্ষিত আসনে এমপি হতে আলোচনায় রয়েছেন গাজীপুরের ৬ নারী নেত্রী। আলোচনায় যাদের নাম শোনা যাচ্ছে, তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, কেন্দ্রীয় মহিলাবিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলায়।
তিনি এর আগেও সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এ ছাড়াও আছেন জেলা আওয়ামী লীগের শ্রম সম্পাদক তাসলিমা রহমান লাভলি। তিনি এর আগে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান ও জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। আছেন জেলা যুব মহিলা লীগের আহ্বায়ক শর্মিলী দাস মিলি। তিনি এর আগে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। রয়েছেন শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ। তিনি একাদশ জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত নারী আসন-১৩ থেকে নির্বাচিত জাতীয় সংসদ সদস্য ছিলেন। আলোচনায় আছেন গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রীনা পারভীন। তিনি ভাওয়াল বদরে আলম সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদের কক্ষ সম্পাদক ও জেলা যুব মহিলা লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়াও গাজীপুর-৫ আসনের সাবেক এমপি মেহের আফরোজ চুমকিও সংরক্ষিত আসনের সদস্য হতে উপর মহলে তদবির চালাচ্ছেন বলে দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা জানান, গাজীপুরের ওই ছয়জন নারী নেত্রী আওয়ামী লীগের ধানমন্ডি কার্যালয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের কাছে দৌড়ঝাঁপ শুরু করছেন। প্রত্যাশীরা নিজেদের জীবন বৃত্তান্ত ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের চিত্র দেখাচ্ছেন নেতাদের। তবে প্রকাশ্যে তেমন কিছুই বলছেন না।
স্থানীয় নেতাকর্মীরা বলছেন, সংরক্ষিত মহিলা আসনে এমপি হওয়ার দৌড়ে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা সবাই আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। ছাত্রাবস্থা থেকেই দলীয় রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। প্রায় সবাই সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার যোগ্যতা রাখেন। সবকিছু বিবেচনা করে দল যাকে যোগ্য মনে করে তাকেই এমপি হিসেবে সিলেক্ট করবে।
জানতে চাইলে গাজীপুর সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রীনা পারভীন বলেন, আমি ছাত্রাবস্থা থেকে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করি। দীর্ঘদিন জেলা মহিলা লীগের দায়িত্ব পালন করছি। গতবার নেত্রীর কাছে সংরক্ষিত আসনের এমপি হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু নেত্রী আমাকে উপজেলার মনোনয়ন দেন। এবারও এমপি হওয়ার জন্য আবেদন করব।
জানতে চাইলে সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি শামসুন্নাহার ভূঁইয়া বলেন, আমি স্বাধীনতার পর থেকেই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। আমাকে নেত্রী ২০১৯ সালে সংরক্ষিত আসনে দায়িত্ব দিয়েছিলেন। আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ করার চেষ্টা করেছি। কোনো অনিয়ম করিনি। নেত্রী চাইলে এবারও আমি আশাবাদী।
সাবেক এমপি মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, কাকে মনোনয়ন দেবেন, এটি নেত্রীই ভালো জানেন। তিনি চাইলে আমি সংরক্ষিত আসনে দায়িত্ব নিতে রাজি আছি। প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সে সিদ্ধান্তই মেনে নেব। আসনবণ্টন বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সংরক্ষিত আসনের মহিলা সদস্যদের জন্য কোনো নির্ধারিত নির্বাচনী এলাকা নেই। তারা কেবল দলীয় বা জোটের সদস্য হিসেবে পরিচিত হবে। এক্ষেত্রে দল বা জোটের প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে মহিলা আসন বণ্টিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী একটি রাজনৈতিক দলের ছয়জন নির্বাচিত সংসদ সদস্য থাকলে ওই দল থেকে একজন প্রার্থী সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য হবেন। সেই হিসাবে এবার ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ৪৭টির মতো সংরক্ষিত আসনের এমপি পাবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক বলেন, অনেকেই আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে। তবে এখানে আমার কোনো মতামত বা ব্যক্তিগত পছন্দ নেই। এটা সম্পূর্ণ দল ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ইচ্ছা। এক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আমার কাছে জানতে চাইলে আমি ব্যক্তিগত মতামত দেব। এ ছাড়া এ বিষয়ে কিছু বলতে চাই না।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য