চূড়ান্ত বাছাই প্রক্রিয়ার পর প্রার্থীদের এক বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হবে। মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে তাঁদের শিক্ষানবিশ ক্যাডেট সাব-ইন্সপেক্টর অব পুলিশ (নিরস্ত্র) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে।
সাব-ইন্সপেক্টর বা এসআই (নিরস্ত্র) পদে নিয়োগ প্রক্রিয়া হবে কয়েকটি ধাপে। ধাপগুলো হচ্ছে—ওয়েব বেজড প্রিলিমিনারি স্ক্রিনিং, শারীরিক মাপ ও কাগজপত্র যাচাইকরণ, লিখিত ও মনস্তাত্ত্বিক, কম্পিউটার দক্ষতা, বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষা, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য চূড়ান্ত মনোনয়ন।
বয়সসীমা : ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ অনুযায়ী প্রার্থীর বয়স হতে হবে ১৯ থেকে ২৭ বছর। শিক্ষাগত যোগ্যতা : অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ন্যূনতম স্নাতক পাস। এ ছাড়া কম্পিউটার ব্যবহারের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। শারীরিক যোগ্যতা : পুরুষদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি বা ১.৬৭৬৪ মিটার, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩২ ইঞ্চি বা ০.৮১২৮ মিটার এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩৪ ইঞ্চি বা ০.৮৬৩৬ মিটার।
নারীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট বা ১.৬২৫৬ মিটার। ওজন : বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী অনুমোদিত পরিমাপের হতে হবে। দৃষ্টিশক্তি : ৬/৬। বৈবাহিক অবস্থা : অবিবাহিত।
বেতন ও সুযোগ-সুবিধা : মৌলিক প্রশিক্ষণ সফলভাবে শেষ করার পর নিয়োগপ্রাপ্তরা জাতীয় বেতন স্কেলের (২০১৫) দশম গ্রেড অনুযায়ী ১৬,০০০-৩৮,৬৪০ টাকা স্কেলে বেতন দেওয়া হবে। এ ছাড়া থাকছে ট্রাফিক ভাতা, বিনা মূল্যে পোশাক, ঝুঁকি ভাতা, স্বল্পমূল্যে রেশন, চিকিৎসা সুবিধা এবং নিয়ম অনুযায়ী উচ্চ পদে পদোন্নতিসহ জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনে যাওয়ার সুযোগ।বাছাই প্রক্রিয়া
১। শারীরিক সক্ষমতা যাচাই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য স্বাক্ষর, রঙিন ছবি ও সার্ভিস চার্জ প্রদান করে একটি অনলাইন আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রার্থীদের মোবাইলে পিটিই-এর পরীক্ষাকেন্দ্র, তারিখ ও সময় জানিয়ে দেওয়া হবে।
২। নির্ধারিত কাগজপত্রসহ পিটিই-এর বিভিন্ন ইভেন্টে অংশ নিতে হবে।
৩। পিটিই পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের লিখিত ও মনস্তত্ত্ব, কম্পিউটার দক্ষতা এবং বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য অনলাইনে আবার আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। পরীক্ষার ফি জমা দিতে হবে এবং প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
৪। প্রার্থীদের নিজের রেঞ্জাধীন পরীক্ষাকেন্দ্রে (ওয়েবসাইট ও মোবাইল বার্তায় জানানো হবে) উপস্থিত হয়ে ৩টি বিষয়ে ২৫০ নম্বরের (ইংরেজি ও বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন-১০০, সাধারণ জ্ঞান ও গণিত-১০০ এবং মনস্তত্ত্ব-৫০) লিখিত পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
৫। লিখিত ও মনস্তত্ত্ব পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের কম্পিউটার দক্ষতা পরীক্ষা দিতে হবে।
৬। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
৭। প্রার্থীদের ৫০ নম্বরের বুদ্ধিমত্তা ও মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
৮। উত্তীর্ণ প্রার্থীদের অনলাইনে চিকিৎসার ইতিবৃত্ত ফরম দাখিল করতে হবে এবং কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে উপস্থিত হয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে।
৯। স্বাস্থ্য পরীক্ষা ও পুলিশ ভেরিফিকেশনে সন্তোষজনক ফলের ভিত্তিতে প্রার্থীদের মৌলিক প্রশিক্ষণের জন্য বাছাই করা হবে।
♦ বিজ্ঞপ্তি ও আবেদন লিংক : http://police.teletalk.com.bd
একনজরে♦ বাংলাদেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা বাংলাদেশ পুলিশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ ও পুলিশ সদর দপ্তর কর্তৃক পরিচালিত ও নিয়ন্ত্রিত হয়। বাংলাদেশ পুলিশের মাঠ পর্যায়ের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পদ সাব-ইন্সপেক্টর বা উপপরিদর্শক। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, জননিরাপত্তা প্রদান, অপরাধ দমন, তদন্তকাজসহ পুলিশ রেগুলেশন অব বেঙ্গল (পিআরবি) ও পুলিশ আইনে বর্ণিত ও ঊর্ধ্বতন নির্দেশিত কাজগুলো সম্পাদন করা একজন সাব-ইন্সপেক্টরের মূল দায়িত্ব। একজন সাব-ইন্সপেক্টর মৌলিক প্রশিক্ষণ সমাপ্তির পর জাতীয় বেতন স্কেল-২০১৫ অনুযায়ী দশম গ্রেডের কর্মকর্তার বেতন ও ভাতাদি পেয়ে থাকেন। এ ছাড়া ঝুঁকি ভাতা, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে মামলার তদন্ত ভাতা, বিনা মূল্যে পোশাক ভাতা, পরিবারের নির্ধারিতসংখ্যক সদস্যদের জন্য রেশন সুবিধা ও পুলিশ হাসপাতালে চিকিৎসা সুবিধা, দায়িত্ব পালনকালে পরিবহন ও লজিস্টিক সুবিধাসহ সরকার কর্তৃক নির্ধারিত অন্যান্য সুবিধা পেয়ে থাকেন। পুলিশিংয়ের পাশাপাশি ট্রেনিং একাডেমিতে শিক্ষকতা, সাদা পোশাকে সিআইডিতে কাজ, পুলিশ হাসপাতালের দায়িত্ব থেকে বোম্ব ডিসপোজাল ডিউটি, ডেস্ক জব থেকে রোড ডিউটিসহ চাকরির বৈচিত্র্যতা পুলিশ সার্ভিসের উপভোগ্য বিষয়। এপিবিএন, সোয়াট, র্যাব, ইউএন মিশন প্রত্যেক ইউনিটের আলাদা আলাদা পোশাক চাকরিতে রুচির ভিন্নতা এনে দেবে। একজন পুলিশ সদস্য দিনমজুর, রিকশাচালক থেকে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি প্রটোকল সেবা নিশ্চিত করে থাকেন। একজন সাব-ইন্সপেক্টর চাকরির ফিডারপূর্তিতে ইন্সপেক্টর ও তদূর্ধ্ব পদে (প্রচলিত নিয়মানুযায়ী) পদোন্নতি পেয়ে থাকেন।
♦ পুলিশ সার্ভিসে নিজ জেলায় পদায়ন করা হয় না। নির্দিষ্ট ডিউটি টাইমের বাইরেও অতিরিক্ত সময় দায়িত্ব পালন করতে হতে পারে। তাই জনসেবা করার স্বপ্ন থাকলে আর চাকরি ক্ষেত্রে প্রচুর শারীরিক, মানসিক পরিশ্রম ও চাপ সামলানোর মানসিকতা থাকলে বাংলাদেশ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর পদে আবেদন করতে পারেন।
♦ বাংলাদেশ পুলিশের সশস্ত্র ও নিরস্ত্র দুটি শাখা রয়েছে। সশস্ত্র শাখার সদস্যরা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত থাকেন। বিভিন্ন বিশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও অস্ত্র প্রশিক্ষণ প্রদান এই শাখার মূল দায়িত্ব। কনস্টেবল থেকে পদোন্নতির সময় সশস্ত্র ও নিরস্ত্র দুটি শাখায় আলাদা করে পদোন্নতি ও পদায়ন করা হয়। সাব-ইন্সপেক্টর পদে শুধু নিরস্ত্র শাখায় কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়। নিরস্ত্র শাখার পুলিশ সদস্যদের থানায় পদায়ন করা হয়। মামলার তদন্তকাজ নিরস্ত্র শাখার প্রধান দায়িত্ব।
ভোরের আকাশ/প
মন্তব্য