-->
শিরোনাম

৩০ বছরে বুড়িগঙ্গা হারিয়েছে প্রায় অর্ধেক জলাভূমি ও সবুজ অঞ্চল

অনলাইন ডেস্ক
৩০ বছরে বুড়িগঙ্গা হারিয়েছে প্রায় অর্ধেক জলাভূমি ও সবুজ অঞ্চল

৩০ বছরে বুড়িগঙ্গা হারিয়েছে প্রায় অর্ধেক জলাভূমি ও সবুজ অঞ্চল। বিপরীতে ব্যাপক মাত্রায় বেড়েছে নিম্নভূমি ও জনবসতি। ৪১ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ১৬ কিলোমিটারই ভরাট আর দখলে প্রবাহ শূন্য হয়ে পড়েছে বুড়িগঙ্গা। শুধু বর্ষা ও শরতে বুড়িগঙ্গায় প্রয়োজনীয় মাত্রায় দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকে। বাকি চার ঋতুতে বেড়ে যায় নদীর তাপমাত্রা।

 

তিন দশকে বুড়িগঙ্গার দৈর্ঘ্য, দূষণ, দখল নিয়ে মঙ্গলবার গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাতটি প্রতিষ্ঠান। ওই গবেষণা প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

 

পাঁচ শ বছরের ঢাকা গড়ে ওঠে বুড়িগঙ্গা তীর ধরে। কিন্তু সময়ের স্রোতে বুড়িগঙ্গা হারিয়েছে গতিপথ, প্রবাহ। দখল দূষণে তিলে তিলে মেরে ফেলা হচ্ছে এই নদী।

ধলেশ্বরীর কেরানীগঞ্জে হযরতপুর থেকে উৎপত্তি হয়ে কোন্ডা ইউনিয়নের জাজিরায় মিশেছে ৪১ কিলোমিটারের বুড়িগঙ্গা। অথচ গেল ত্রিশ বছরে এই উৎস মুখ থেকে ১৬ কিলোমিটারই দখল হয়। এখানে গড়ে উঠেছে শতাধিক শিল্প কারখানা ও ১৭টি ইটভাটা।

 

এ নদীতে শুধু বর্ষা ও শরতে দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকে ছয় মাত্রায়। বাকি চার ঋতুতে নদীর তাপমাত্রা থাকে ২০ ডিগ্রির ওপর। পানিতে অক্সিজেনের পরিমাণ এক মাত্রায় নেমে আসে। অন্তত একশটি ড্রেন দিয়ে শিল্প ও নাগরিক বর্জ্য পড়ে নদীতে।

 

রিভারাইন পিপলের প্রধান গবেষক শেখ রোকন জানান, দুটি দলিল আছে। এর মধ্যে ২০০৫ সালের দলিলে বলা হয়েছে, বুড়িগঙ্গার দৈর্ঘ্য ৪৫ কিলোমিটার। আর ২০১১ সালের দলিলে বলা হয়েছে এটা ২৯ কিলোমিটার। পানি উন্নয়ন বোর্ড নিজেই বুড়িগঙ্গার দৈর্ঘ্য কমিয়ে দিয়েছে। এই অংশটা ভুলে যাওয়া হয়েছে বা ইচ্ছা করে করা হয়েছে বা দখলদারদের সুবিধা দেওয়ার জন্য করা হয়েছে।

 

গবেষণায় বলা হয়, ১৯৯০ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সবুজায়ন, জলাভূমি কমেছে প্রায় অর্ধেক। ১৯৯০ সালে জলাভূমি ও সবুজায়ন ছিল ৩৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ২০২০ সালে সেটি কমে ১৮ দশমিক ৭৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে জলাভূমি ১২ দশমিক ৬৩ শতাংশ থেকে কমে হয়েছে ৭ দশমিক ১৭ ভাগ । আর তিন দশকে দখল করে নদীর নিম্নভূমি ২০ দশমিক ৬৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৩৬ দশমিক ৪৩ ভাগ।

 

পরিবেশ আইনজীবী সমিতি (বেলা) বলছে, রাজনৈতিকভাবে হত্যা করা হচ্ছে বুড়িগঙ্গাকে। রাজধানীর শ্বাসনালী পুনরুদ্ধারে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে।

 

বেলা’র প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, ‘যদি নদীটাকে আমরা ভূমিদস্যু এবং কিছু দূষণকারীর হাতে তুলে দিই, তাহলে আমাদের বলতে হবে রাষ্ট্রের উন্নয়ন দর্শনে আমাদের পরিবর্তন আনতে হবে। আমরা নদী মেরে দিয়ে উন্নয়ন চাই না।’

 

রিভারাইন পিপলসহ সাত প্রতিষ্ঠান গবেষণায় সুপারিশ করেছে বুড়িগঙ্গাকে বাঁচাতে বন্ধ খাল জীবিত করে সিএস ম্যাপে ভূমি উদ্ধার করতে হবে। পাড় থেকে সরাতে হবে কলকারখানা।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version