-->
শিরোনাম
দেশে প্রথমবারের মতো কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে ২০ হাজার কণ্ঠে পবিত্র গীতাপাঠ

বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যের দেশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যের দেশ

ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ বলেছেন বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্যের দেশ। এই চেতনাকে ধারণ করেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করেছে। আমাদের সংবিধান হচ্ছে অসাম্প্রদায়িকতার ধারক।

 

শনিবার দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে ‘২০ হাজার কণ্ঠে পবিত্র “শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ”-২০২৪ খ্রি.’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদানকালে ভূমিমন্ত্রী নারায়ন চন্দ্র চন্দ এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানটির আয়োজক রংপুর বিভাগীয় পবিত্র বেদ ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা শিক্ষাদান সংঘ।

 

আয়োজকরা জানান, বাংলাদেশের সুখ সমৃদ্ধি ও যুদ্ধমুক্ত বিশ^শান্তি কামনায় এবং বৈদিক সনাতনী পরম্পরা জাগরণে ২০ হাজার কণ্ঠে পবিত্র ‘শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠ’র আয়োজন করা হয়েছে বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো।

 

ভূমিমন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর একই ধারাবাহিকতায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষার মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তিনি বলেন শেখ হাসিনার সরকার ২০১৩ সালেই অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণ (দ্বিতীয় সংশোধন) আইন প্রণয়নে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি এ সম্পর্কিত দুইটি পরিপত্রও জারি করা হয়েছে। এছাড়া, দেবোত্তর সম্পত্তি রক্ষায় দেবোত্তর সম্পদ আইনের খসড়া তৈরি করা হচ্ছে- মন্ত্রী জানান।

 

নারায়ন চন্দ্র বলেন, বৈচিত্র্যের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানেই দেশের ঐক্যের প্রেরণা নিশ্চিত করে। এই অনুষ্ঠান বাংলাদেশের বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্যকে আরও শক্তিশালী করেছে।

 

ভূমিমন্ত্রী এ সময় আয়োজিত অনুষ্ঠান সম্পর্কে বলেন, বাংলাদেশের সনাতন সম্প্রদায়ের জন্য এই অনুষ্ঠান অপরিসীম সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় গুরুত্ব বহন করে। ঐতিহ্যবাহী এই মন্দিরে শান্তিপূর্ণভাবে পূজনীয় গীতা পাঠ করে এত বড় সমাবেশ প্রত্যক্ষ করা ছিল অসাধারণ অভিজ্ঞতা। এ সময় ভূমিমন্ত্রী কাহারোলবাসীকে ধন্যবাদ জনান আয়োজনে সহোযোগিতা করার জন্য।

 

অনুষ্ঠানে ভূমিমন্ত্রী বাংলাদেশের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও উন্নয়নের ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং সহনশীলতা, বোঝাপড়া ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মূল্যবোধ সমুন্নত রাখার জন্য আয়োজক ও অংশগ্রহণকারীদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন।

 

এ সময় শব্দসৈনিক মনোরঞ্জন ঘোষাল বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০ হাজার কণ্ঠে গীতাপাঠ এটাই প্রথম। তিনি আরও বলেন, এই পবিত্র মন্দিরে ২০ হাজার কণ্ঠে পবিত্র গ্রন্থপাঠ তাদের অনন্য এক অভিজ্ঞতা। এই ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানের আয়োজনে সহযোগিতার জন্য এবং ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য সরকারেরকে কৃতজ্ঞতা জানান।

 

এর আগে ভূমিমন্ত্রী কর্তৃক জাতীয় পতাকা উত্তোলন করার মধ্যে দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। প্রদীপ প্রজ্বলন ও শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা স্থাপন পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। পরবর্তীতে ধ্বজা উত্তোলন ও বেদ মন্ত্রপাঠ, সূর্য্য নমস্কার ও সমবেতভাবে পবিত্র বেদমন্ত্র পাঠ পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। এরপর শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি (সমবেতভাবে) পর্বের পর সমবেত কণ্ঠে শ্রীমদ্ভগবদ্গীতা পাঠের মূল পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। শেষে অতিথিরা বক্তব্য দেন। এর আগে মন্দির কমপ্লেক্সে এসে কান্তজিউ মন্দির ভবন পরিদর্শন করেন ভূমিমন্ত্রী।

 

অনুষ্ঠানে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালা, সাবেক সংসদ সদস্য ও হিন্দুকল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট, মনোরঞ্জন শীল গোপাল, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের প্রকল্প পরিচালক সুশান্ত রায়, আওয়ামী লীগের যুব ও ক্রীড়া উপ-কমিটির সদস্য শিপংকর শীল, শিল্পপতি ও রাজনীতিবিদ কালিপদ মজুমদার, ভারতের বিবেকানন্দ মিশনের অধ্যক্ষ ড. মানস ভট্টাচার্য।

 

অনুষ্ঠানস্থলে আরও উপস্থিত ছিলেন দিনাজপুরের পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নূর-এ-আলম, কাহারোল উপজেলার ইউএনও মো. আমিনুল ইসলামসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ।গীতাপাঠ অনুষ্ঠানে উত্তরবঙ্গের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কান্তজিউ মন্দির প্রাঙ্গণে হাজার হাজার ভক্ত উপস্থিত হয়েছিলেন।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version