-->

রথযাত্রা উপলক্ষে ইসকনের ৯ দিনব্যাপী কর্মসূচি

নিজস্ব প্রতিবেদক
রথযাত্রা উপলক্ষে ইসকনের ৯ দিনব্যাপী কর্মসূচি

আগামী ৭ জুলাই উদযাপিত হবে শ্রী শ্রী জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা উৎসব। এ উপলক্ষে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (ইসকন) ৯ দিনব্যাপী কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ১৫ জুলাই উল্টো রথের মধ্য দিয়ে উৎসবের সমাপ্তি ঘটবে। প্রতি বছর চন্দ্র আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে শুরু হয় এ উৎসব। এর ৯ দিনের মাথায় হয় উল্টো রথযাত্রা।

শুক্রবার (২৮ জুন) রাজধানীর স্বামীবাগে ইসকন মন্দিরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় বিস্তারিত কর্মসূচি তুলে ধরা হয়। এবারের রথযাত্রা উপলক্ষে বিশ্বশান্তি কামনায় অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, পদাবলী কীর্তন, ধর্মীয় নাটক, সংকীর্তনসহ থাকছে নানা আয়োজন।

প্রতি বছররর মতো এবারও রথযাত্রা শুরুর দিন ইসকনের পক্ষ থেকে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা রাজধানীর স্বামীবাগ থেকে বের হয়ে ঢাকেশ্বরি জাতীয় মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। দাবি করা হচ্ছে, বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম রথশোভাযাত্রা এটি।

উৎসবের প্রথম দিনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, উদ্বোধক থাকবেন বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা।

ইসকনের উদ্যোগে বিশাল শোভাযাত্রা স্বামীবাগ ইসকন আশ্রম থেকে যাত্রা শুরু করে জয়কালী মন্দির, মতিঝিল, দৈনিক বাংলা, রাজউক ভবন, গুলিস্তান মোড়, পুলিশ হের্ড কোয়ার্টার, সরকারি কর্মচারী কোয়ার্টার, হাইকোর্ট, দোয়েল চত্বর, রমনা কালী মন্দির, টিএসসি মোড়, জগন্নাথ হল, পলাশী মোড় ও ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গিয়ে শেষ হবে। রথযাত্রার শোভাযাত্রায় তিনটি স্থানে অভ্যর্থনা দেওয়া হবে। পূরীর রথের পর এটি পৃথিবীর বৃহত্তম রথযাত্রা।

মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন, বাংলাদেশ ইস্কনের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ, সাধারণ সম্পাদক শ্রী চারু চন্দ্র দাস বহ্মচারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জগৎগুরু গৌরাঙ্গ দাস, জয় মহাপ্রভু দাস ব্রহ্মচারী প্রমুখ।

আয়োজকরা বলেন, রথযাত্রা একটি সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হচ্ছে। শোভাযাত্রা শুরুর পর দুই থেকে তিন লাখ মানুষের অংশগ্রহণ এটিই প্রমাণ করেছে। অথচ এই উৎসবে সরকারিভাবে ছুটির ব্যবস্থা আজও হয়নি।

এবার রথযাত্রা উপলক্ষে ৭ জুলাই সকাল ৮টা থেকে অগ্নিহোত্র যজ্ঞ, দুপুর দেড়টায় রাষ্ট্রীয় অতিথিবৃন্দের আলোচনা সভা, দুপুর আড়াইটায় রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার উদ্বোধন, তিনটায় স্বামীবাগ আশ্রয় থেকে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের উদ্দেশে যাত্রা শুরু, সাড়ে ৬টায় সন্ধ্যা আরতি ও রাত ৮টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান-নৃত্যনাট্য।

এছাড়া ১২ জুলাই শ্রী চৈতন্যচরিতামৃত পাঠ, সকাল ১০টায় কীর্তন মেলা, দুপুর ১ টায় জগন্নাথ লীলামৃত, বিকাল ৩টায় ভজন কীর্তন, বিকাল ৪টায় আলোচনা সভা, সন্ধ্যা আরতি ও রাতে বৈদিক নাটক অনুষ্ঠিত হবে।

১৫ জলুাই স্বামীবাগ মন্দিরে শ্রী চৈতনচরিতামৃত পাঠ, সকাল ৯টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। আর উল্টো রথযাত্রা উপলক্ষে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে ড. তাপসী ঘোষের পরিবেশনায় পদাবলী কীর্তন, আলোচনা সভা ও বিকেলে উল্টো রথের বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের হয়ে পুনরায় স্বামীবাগ ইসকন মন্দিরে পৌঁছাবে।

ইসকনের বাংলাদেশের সভাপতি সত্যরঞ্জন বাড়ৈ বলেন, এবারও উৎসবমুখর পরিবেশে রথযাত্রা হবে। শোভাযাত্রায় পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োজিত থাকবে। মহোৎসব সফল করতে সরকারের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া শোভাযাত্রাসহ উৎসব উপলক্ষে নিরাপত্তায় নিজস্ব প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক নিয়োজিত থাকবে।

উৎসব এবং শোভাযাত্রায় সবাইকে অংশ নেওয়ার জন্য সনাতন সম্প্রদায়সহ ভক্তদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, সাত জুলাই সকাল থেকেই রথযাত্রার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস- জগন্নাথ দেব হলেন জগতের নাথ বা অধীশ্বর। জগৎ হচ্ছে বিশ্ব আর নাথ হচ্ছেন ঈশ্বর। তাই জগন্নাথ হচ্ছেন জগতের ঈশ্বর। তার অনুগ্রহ পেলে মানুষের মুক্তিলাভ হয়। জীবরূপে তাকে আর জন্ম নিতে হয় না। এ বিশ্বাস থেকেই ভক্তরা রথের ওপর জগন্নাথ, শুভদ্রা ও বলরামের প্রতিকৃতি স্থাপন করে সেই রথ টেনে নিয়ে যাবেন এক মন্দির থেকে অন্য মন্দিরে। এই উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে মেলা। সেখানে দূর-দূরান্ত থেকে আসবেন ভক্ত ও দর্শনার্থীরা।

 

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version