-->

এনআইডি সংশোধনে অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাই নির্বাচন কমিশনের

নিজস্ব প্রতিবেদক
এনআইডি সংশোধনে অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাই
নির্বাচন কমিশনের

অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাইয়ের সুযোগ নেই নির্বাচন কমিশনের (ইসি)। এটিকে সহায়ক দলিল হিসেবে পাসপোর্টের কপি জমা দেওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) সংশোধনের ও নতুন নিবন্ধনের আবেদন দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা মনে করছে ইসি। এ জন্য ইসি অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাইয়ের সুবিধা চেয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে চিঠিও দিয়েছে।

 

বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর বলছে, ইসিকে এই সুবিধা দিতে ডেটা শেয়ারিং নীতিমালার খসড়া তৈরি করা হয়েছে। ইসি সূত্র জানায়, গত ৫ জুন পর্যন্ত এনআইডি সংশোধনের অনিষ্পন্ন ও প্রক্রিয়াধীন আবেদনের সংখ্যা ছিল ৬ লাখের বেশি। এর মধ্যে অনিষ্পন্ন আবেদন ৩ লাখ ৬৪ হাজার ১৬১টি। প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ২ লাখ ৩৮ হাজার ৯০৩টি।

 

নিয়ম অনুযায়ী, আবেদনের তারিখ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে আবেদন নিষ্পত্তির কথা। কিন্তু বর্তমানে আসা অনেক আবেদনের সঙ্গে সহায়ক দলিল হিসেবে পাসপোর্টের কপি দেওয়া হচ্ছে। এমন আবেদনের সংখ্যা ৫ জুন পর্যন্ত ৭০ হাজারের বেশি। অথচ অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাইয়ের সুবিধা নেই ইসির। নতুন নিবন্ধনের আবেদনের ক্ষেত্রেও একই অবস্থা।

 

ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, এনআইডি সংশোধনের পাশাপাশি জাতীয় পরিচয় নিবন্ধনের জন্য আবেদন সারা বছর আসছে। প্রবাস থেকে আসা ব্যক্তিরা আবেদনের সঙ্গে সহায়ক দলিল হিসেবে পাসপোর্টের কপি দেন। অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাইয়ের সুবিধা না থাকায় অনেক সময় আবেদনকারীকে মূল পাসপোর্টসহ কার্যালয়ে ডাকা হয়। এ ছাড়া অনেকে নাম, বয়স, শিক্ষাগত যোগ্যতা পরিবর্তন চেয়ে আবেদনের সঙ্গে এফিডেভিট জমা দেন। এগুলোও অনলাইনে যাচাই করতে না পারায় কাজে বিলম্ব হয়। অনেকে শুধু জন্মনিবন্ধন সনদ দিয়ে ভোটার হন। তাদের অনেকে নতুন জন্মসনদ করে পরিচয়পত্র সংশোধনের আবেদন করেন। এটিও আবেদন নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে।

 

জানা যায়, অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাই করতে না পারায় জটিলতার বিষয়টি বিভিন্ন সময়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা ইসিকে জানান। ২০২২ সালের জুনে ঢাকার আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. ফরিদুল ইসলাম ইসির সচিবকে একটি চিঠিও দেন। চিঠিতে তিনি বলেন, ঢাকা অঞ্চলে ৬টি জেলা ও ৫০টি উপজেলা বা থানা নির্বাচন অফিস ও ৪টি সিটি করপোরেশন রয়েছে।

 

এই অঞ্চলে ভোটারসংখ্যা বেশি হওয়ায় এনআইডি সংশোধনের আবেদনও অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় বেশি। আবেদনকারীদের অনেকে সহায়ক দলিল হিসেবে পাসপোর্টের কপি দেন। অনেক পাসপোর্ট জাল পাওয়া যাচ্ছে, যা তাৎক্ষণিক যাচাই করা সম্ভব হচ্ছে না। এনআইডির মতো অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাই করা না যাওয়ায় সিদ্ধান্ত নিতে বিলম্ব হচ্ছে। তাই জরুরিভিত্তিতে পাসপোর্ট যাচাইয়ের লিংক দেওয়া প্রয়োজন।

 

সূত্র জানায়, মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইসি চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাইয়ের সুবিধা চেয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরে চিঠি দেয়। ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর ২৮ জানুয়ারি চিঠি দিয়ে ইসিকে জানায়, সরকারি সংস্থার চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ডেটা শেয়ারিংয়ের লক্ষ্যে ইন্টারনেট ডেটা এক্সচেঞ্জ (আইডিএক্স) প্ল্যাটফর্ম তৈরির কার্যক্রম চলছে। এ কার্যক্রম সম্পন্ন হলে অ্যাপ্লিকেশন প্রোগ্রামিং ইন্টারফেসের (এপিআই) মাধ্যমে ডেটা শেয়ারিং সম্ভব হবে।

 

অনলাইনে পাসপোর্ট যাচাইয়ের সুবিধা চেয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরকে চিঠি দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মাহবুব আলম তালুকদার। ডেটা শেয়ারিংয়ের অগ্রগতির বিষয়ে জানতে চাইলে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. শিহাব উদ্দিন খান বলেন, ‘ডেটা শেয়ারিং কীভাবে করা যায়, সে বিষয়ে একটি নীতিমালা করার কাজ চলছে। নীতিমালাটির খসড়া তৈরি করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এটি চূড়ান্ত করলে আমরা ডেটা শেয়ারিংয়ের বিষয়ে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে পারব।’

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version