প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও তাদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব স্থগিত রাখার নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
গত রোববার সব ব্যাংকে চিঠি দিয়ে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএফআইইউ বলেছে, ওই সব হিসাব খোলার ফরমসহ যাবতীয় তথ্য আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে পাঠাতে হবে। আগামী ৩০ দিনের জন্য এসব অ্যাকাউন্টে লেনদেন স্থগিত রাখতে হবে। জাহাঙ্গীর আলম প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী হিসেবে টানা দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। কিন্তু বিভিন্ন অভিযোগ ওঠায় তাকে ওই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
শেখ হাসিনা বিরোধী দলে থাকার সময়ও জাহাঙ্গীর আলম তার ‘ব্যক্তিগত স্টাফ’ হিসেবে কাজ করেছেন। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনার জন্য যে খাবার পানি বাসা থেকে নেওয়া হত, সেটা বহন করতেন জাহাঙ্গীর। সে কারণে তিনি ‘পানি জাহাঙ্গীর’ নামে পরিচিতি পান। জাহাঙ্গীরের বাড়ি নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার খিলপাড়া ইউনিয়নে। তিনি এর আগে চাটখিল উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ছিলেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী হতে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন ফরমও তুলেছিলেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন জাহাঙ্গীর। তবে পরে তিনি নির্বাচন থেকে সড়ে দাঁড়ান।
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত সহকারী পরিচয় দিয়ে তদবির করে তিনি ‘কোটি কোটি টাকার’ মালিক হয়েছেন এবং নোয়াখালী ও ঢাকায় বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন বলে অভিযোগ এসেছে সংবাদমাধ্যমে। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জাহাঙ্গীরের বিষয়ে সতর্ক করে বলা হয়, তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। রোববার গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার এক সাবেক কর্মীর দুর্নীতির বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমার বাসায় কাজ করেছে, পিয়ন ছিল সে, এখন ৪০০ কোটি টাকার মালিক। হেলিকপ্টার ছাড়া চলে না। বাস্তব কথা। কী করে বানাল এত টাকা? জানতে পেরেছি, পরেই ব্যবস্থা নিয়েছি।’ প্রধানমন্ত্রী সেই কর্মীর নাম না বললেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে আলোচনা শুরু হয়। এরপর তার ব্যাংক হিসাব স্থগিতের নির্দেশ আসে।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য