সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের এক দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিলে ছাত্রলীগের হামলার ঘটনার পর থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ক্যাম্পাস। পুরো ক্যাম্পাস নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ফটকে ছাত্রলীগের প্রবেশ নিষেধ উল্লেখ করা পোস্টার ঝুলছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) রাতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ দিলেও তা প্রত্যাখ্যান করেছেন আন্দোলনকারীরা। আর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় ক্ষোভ প্রকাশ করে আন্দোলনের সঙ্গে সংহতি জানিয়েছেন জাবি শিক্ষক সমিতি।
মঙ্গলবার দিনগত রাতে জাবির বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সন্ধানে তল্লাশি চালিয়েছেন কোটা আন্দোলনকারীরা। এ সময় ছাত্রত্ব শেষ হওয়া ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের অবৈধভাবে দখলে থাকা ১৯টি কক্ষ ভাঙচুর করা হয়।
আন্দোলনকারীদের অভিযোগ, যেসব কক্ষ ভাঙচুর করা হয়েছে সেগুলোর বেশিরভাগই ছাত্রত্ব শেষ হওয়া ছাত্রলীগের নেতারা অবৈধভাবে দখল করে থাকতেন।
এ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান পোষ্যকোটায় ভর্তি হওয়া। নিয়ম অনুযায়ী পোষ্য কোটায় ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা হলে থাকতে পারেন না। তা সত্ত্বেও তিনি একাই বঙ্গবন্ধু হলের দুটি কক্ষ অবৈধভাবে দখলে নিয়ে থাকতেন।
এর আগে, সোমবার রাতে ছাত্রলীগের হামলার ভয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবন চত্বরে আশ্রয় নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। রাত ১২টার দিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করেন। এতে শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে রাত আড়াইটার দিকে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা এসে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিলে তারা বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন আমবাগান ফটক দিয়ে পালিয়ে যান। পরে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের সভাপতি আকতারুজ্জামান ও সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের অবৈধভাবে দখলে থাকা কক্ষ ভাঙচুর করেন।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর টহলও জোরদার করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য