-->
শিরোনাম
ঋণ শোধের ‘মেগা’ চাপ

মেগা প্রকল্পের দুই-তৃতীয়াংশই বিদেশি ঋণ

নিখিল মানখিন
মেগা প্রকল্পের দুই-তৃতীয়াংশই বিদেশি ঋণ

দেশের মেগা প্রকল্পগুলোর বেশিরভাগই বাস্তবায়িত হচ্ছে বৈদেশিক ঋণে। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, অর্থ সংকটে ব্যাহত হতে পারে চলমান মেগাপ্রকল্পসমূহের যথা সময়ে যথাযথ বাস্তবায়ন। মেগা প্রকল্পগুলো সময়মতো ও দুর্নীতিমুক্তভাবে বাস্তবায়ন করা না গেলে বিদেশি দায়দেনা পরিশোধে ঝুঁঁকি তৈরি হতে পারে। এছাড়া গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়ে যাওয়ায় বিদেশি ঋণ পরিশোধের সময়ও এগিয়ে আসছে। ২০২৪ সাল থেকে এসব প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়তে থাকবে। ২০২৬ সাল নাগাদ ঋণ পরিশোধের পরিমাণ দ্বিগুণ হতে পারে। তাই ২০২৪ থেকে ২০২৬ সালের মধ্যে অর্থনীতিতে বড় ধাক্কার শঙ্কা প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদরা। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় এখনই সুক্ষ্ম পরিকল্পনা দরকার।

২০টি মেগা প্রকল্প আলোচনায় এলেও আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ২০০৯ সালে দায়িত্ব গ্রহণের পর ১০ মেগা প্রকল্পের কাজ শুরু করে। পরে অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্প হিসেবে এগুলো বাস্তবায়নে বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হয়। এর মধ্যে অন্যতম প্রকল্প পদ্মা সেতু। সরকারের মেগা প্রকল্পে সরকারের পাশাপাশি বিদেশি সহযোগীরা অর্থায়ন করছে। বাস্তবায়নে আসা মেগা প্রকল্পসমূহের মধ্যে রয়েছেÑ খুলনা-মোংলা রেল প্রকল্প, পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্প, কক্সবাজার রেল সংযোগ প্রকল্প, আখাউড়া-আগরতলা আন্তঃদেশীয় রেল সংযোগ প্রকল্প, মেট্রোরেল প্রকল্প, ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর তৃতীয় টার্মিনাল ইত্যাদি।

দুই তৃতীয়াংশ বিদেশি ঋণসেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মেগা প্রকল্পসমূহে এ পর্যন্ত বিনিয়োগ হচ্ছে ৭০ বিলিয়ন ডলার, যার দুই-তৃতীয়াংশই বিদেশি ঋণ। এসব প্রকল্পের বেশিরভাগ ভৌত অবকাঠামো-সম্পর্কিত। এ খাতে বিনিয়োগ হয়েছে ৫০ শতাংশ। বিদ্যুৎ খাতে ৩৫ শতাংশ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে ১২ শতাংশ। বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের প্রকল্পগুলোর গড় আয়তন ও ব্যয় অনেক বড় এবং বিদেশি অর্থনির্ভর। গত ২০১০ সাল থেকে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু হলেও সবচেয়ে বেশি প্রকল্প এসেছে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে। এই সময়ে আসা দুই-তিনটি প্রকল্প ছাড়া বাকিগুলো বাস্তবায়নের অবস্থা ভালো নয়। বিশেষ করে ২০১৮ সালের পর যেসব প্রকল্প এসেছে, সেগুলোর বাস্তবায়ন নগণ্য বা সন্তোষজনক নয়।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বৈদেশিক ঋণের রেয়াতকালের (গ্রেস পিরিয়ড) দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে চীন, তারপর জাপান ও রাশিয়া। তাই ঋণ পরিশোধের চাপটা আগে চীন থেকেই আসবে। আশঙ্কার কথা, বৈদেশিক দায়দেনা জিডিপির ১৭ শতাংশের নীচে ও অভ্যন্তরীণ দায়দেনা ১৭ শতাংশের ওপরে। লক্ষণীয় হলো, এটা আস্তে আস্তে বাড়ছে। ২০১৮ সালের পর দায়দেনা আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। আর মেগা প্রকল্পের ঋণ পরিশোধের সবচেয়ে বড় অংশ ৩৬.৬ শতাংশ যাবে রাশিয়ার কাছে, এরপর জাপানে যাবে ৩৫ শতাংশ এবং চীনের কাছে প্রায় ২১ শতাংশ। যদিও পরিমাণের হিসেবে চীন তৃতীয় হলেও দায়দেনা পরিশোধের সময়সূচি অনুযায়ী সবচেয়ে বেশি পরিশোধ করতে হচ্ছে চীনকে। বিরাট ধাক্কা সামলাতে কর আহরণ বাড়াতে হবে। কারণ কর-জিডিপির অনুপাত এখনও ১০ শতাংশের নীচে।

ঋণ পরিশোধ :

দেশে সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মা সেতু, মেট্রো রেল, কর্ণফুলী টানেলসহ বেশ কয়েকটি মেগাপ্রকল্প চালু হয়েছে। কিন্তু অধিকাংশ প্রকল্প এখনও বাস্তবায়নাধীন। প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়নে বিপুল অঙ্কের বৈদেশিক ঋণ নিতে হয়েছে। গ্রেস পিরিয়ড শেষে এবার শুরু হচ্ছে ঋণ পরিশোধের পালা।

মেগাপ্রকল্পে ঋণ শোধের চাপ বাড়ছে। গত অর্থবছরে (২০২২-২৩) যেখানে ২.৭ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হয়েছিল, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৩.৭ বিলিয়ন ডলারে। আগামী অর্থবছরে (২০২৪-২৫) এই ঋণ পরিশোধের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার। ফলে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে গিয়ে অর্থনীতিতে আরেকটি চাপ তৈরির আশঙ্কা রয়েছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) প্রাক্কলিত হিসাব অনুযায়ী, ২০২৬ সালের পর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে নেওয়া বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ঋণের আসল পরিশোধ শুরু হবে। এ ছাড়া একই সময়ে মেট্রো রেল প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ঋণের আসল পরিশোধও শুরু হবে। এতে ঋণ পরিশোধের বোঝা আরো বাড়বে। এদিকে আগামী বছরগুলোতে বৈদেশিক ঋণের অর্থছাড়ও কমে আসতে পারে বলে ইআরডি সূত্রে জানা গেছে।ইআরডির তথ্য মতে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে এডিপিতে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের লক্ষ্যমাত্রা সাড়ে ৩ বিলিয়ন ডলার থাকলেও সংশোধিত এডিপিতে ৩.৭ বিলিয়ন ডলার ধরা হয়।

চলতি অর্থবছরে সুদ-আসল মিলিয়ে পরিশোধ করতে হবে প্রায় সাড়ে চার বিলিয়ন ডলার, যা ২০২৫-২৬ অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়াবে প্রায় পাঁচ বিলিয়ন ডলার। ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ বৈদেশিক ঋণের সুদ-আসল বাবদ পরিশোধ করেছে ২.৭ বিলিয়ন ডলার।

ইআরডিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, পদ্মা সেতু রেল সংযোগ ও বঙ্গবন্ধু টানেলের মতো বেশ কিছু মেগাপ্রকল্পের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ায় বাংলাদেশের ওপর এসব প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের আসল ও সুদ পরিশোধের চাপ ক্রমে বাড়ছে। রূপপুর পারমাণকি বিদ্যুৎ প্রকল্প, মেট্রো রেলের মতো বড় প্রকল্পগুলোর ঋণ পরিশোধ শুরু হলে চাপ আরো বেড়ে যাবে।

ইআরডির প্রক্ষেপণ অনুযায়ী, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে মোট অর্থায়ন বেড়ে দাঁড়ায় ৯.৪ বিলিয়ন ডলার, যা ২০২২-২৩ অর্থবছরে ছিল ৮.৫৬ বিলিয়ন ডলার। তবে ২০২৪-২৫ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে তা কমে যথাক্রমে ৭.৯২ ও ৭.৪১ বিলিয়ন ডলার হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ইআরডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১৮ সালের এপ্রিলে পদ্মা রেল সংযোগ প্রকল্পের জন্য চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের ২.৬৬৭ বিলিয়ন ডলারের ঋণচুক্তি হয়। এই ঋণের পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ড শেষ হয়েছে গত এপ্রিলে। ফলে ২০২৩-২৪ অর্থবছর থেকে এ ঋণের আসলের কিস্তি পরিশোধ করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। ১৫ বছরে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। ২০২৬ সালের শেষে রূপপুর পারমাণকি বিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য নেওয়া ১১.৩৮ বিলিয়ন ডলারের ঋণ পরিশোধ শুরু হবে। ২০ বছর মেয়াদের এ ঋণের জন্য প্রতিবছর ৫০০ মিলিয়ন ডলারের বেশি আসল পরিশোধ করতে হবে। একই সময়ে মেট্রো রেল প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ঋণের আসল পরিশোধও শুরু হবে। তখন বার্ষিক আসল পরিশোধ পাঁচ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে। এতে ২০২৬-২৭ অর্থবছরে ঋণ পরিশোধে বড় উল্লম্ফন ঘটবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এসব ঋণের টেকসই হওয়াটা নির্ভর করছে বাংলাদেশের এসব মেগাপ্রকল্পের সুফল আদায় এবং স্থানীয় উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর সক্ষমতার ওপর। গত অর্থবছর থেকে আর্থিক হিসাবে যে ঘাটতি দেখা দিয়েছে, সেটি আগের মতো উদ্বৃত্তে আনার পথে ঋণের আসল পরিশোধ বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে। একের পর এক বড় ঋণগুলোর গ্রেস পিরিয়ড শেষ হওয়ার কারণে আর্থিক হিসাবে আসল পরিশোধ আগামী দিনে বাড়তেই থাকবে।

তারা বলছেন, ঋণের আসল পরিশোধের চাপ মোকাবিলায় সরকারকে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে অর্থছাড় বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। তবে আগামী বছরগুলোতে অর্থছাড় বাড়ানো গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ হবে বলে উল্লেখ করেন। বহুপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার ঋণ পরিশোধে দীর্ঘ সময় পাওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে ৩০ বছর পর্যন্তও ঋণ পরিশোধের সময় পাওয়া যায়। আবার ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত গ্রেস পিরিয়ডও থাকে। কিন্তু দ্বিপক্ষীয় উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার বেশির ভাগ ঋণ ৩ থেকে ১৫ বছরে পরিশোধ করতে হয়। দ্বিপক্ষীয় ঋণ বেড়ে যাওয়ায় ঋণ পরিশোধের বোঝা বাড়বে। আবার দ্বিপক্ষীয় ঋণের ডাউন পেমেন্টও দিতে হয়, যা এই ঋণকে আরো ব্যয়বহুল করে তোলে। কাজেই দ্বিপক্ষীয় ঋণ বাড়লে দেশের ব্যালান্স অব পেমেন্টের ওপর চাপ বাড়বে।

ডলার সংকটের এই মুহূর্তে বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ অর্থনীতিতে বড় একটি চাপ তৈরি করছে। সরকার কি ঋণ নিয়েই বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করবেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ঋণ নিয়ে ঋণ পরিশোধ করলে তো ঋণের বোঝা বাড়তেই থাকবে। এ ক্ষেত্রে ঋণগুলোর ব্যবহারে উৎপাদনশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। ঋণ ব্যবহার করে রিটার্ন যাতে সময়মতো পাওয়া যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। আর বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে তো বৈদেশিক মুদ্রাই লাগবে। তাই বৈদেশিক মুদ্রা আসার ক্ষেত্রে যাতে কোনো প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি না হয়, সে জন্য পলিসিগুলো ঠিক রাখা দরকার। বৈদেশিক মুদ্রা না এলে তো পরিশোধে চাপ পড়বেই।’

বাস্তবায়ন পরিস্থিতি ২০২২ সালের জুনে পদ্মা সেতু দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়। একাধিকবার সংশোধনের পর এখন ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩২ হাজার ৬০৫ কোটি টাকায়। পদ্মা সেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের খরচ ৩৯ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা। গত মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩১ হাজার ৮৭ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। আর্থিক অগ্রগতি ৮১ দশমিক ২৮ শতাংশ। ইতোমধ্যে পদ্মা রেলসেতু হয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।

রাজধানীতে সবচেয়ে বড় প্রকল্প মেট্রোরেল। ইতোমধ্যে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার মেট্রোরেল চালু হয়েছে। এখন কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারিত করা হচ্ছে। ৩৩ হাজার ৪৭১ কোটি টাকার এই প্রকল্পে মার্চ পর্যন্ত অগ্রগতি ৮৭ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুনে এই প্রকল্প শেষ হবে। জাইকা এই প্রকল্পে অর্থায়ন করছে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র দেশের প্রথম পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১৬ সালে। প্রকল্পটির ব্যয় ধরা হয়েছে ১ লাখ ১৩ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। গত মার্চ মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পের অগ্রগতি ৬৫ শতাংশ।

২০১৪ সালে ১২০০ মেগাওয়াটের মাতারবাড়ি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্প নেওয়া হয়। ২০২৩ সালের মধ্যে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও মেয়াদ বাড়ানো হয় ২০২৬ সাল পর্যন্ত। গত মার্চ মাস পর্যন্ত এ প্রকল্পে খরচ হয়েছে ৩৯ হাজার ৭৫৯ কোটি টাকা। বাস্তবায়নের হার ৭৬ শতাংশ।

চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলপথের অংশ দোহাজারী থেকে রামু হয়ে মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী ঘুমধুম পর্যন্ত নেওয়ার কথা। আপাতত এই অংশের বাস্তবায়ন স্থগিত করা হয়েছে। এক দফা ব্যয় বৃদ্ধির পর এই প্রকল্পের ব্যয় দাঁড়িয়েছে ১৮ হাজার ৩৪ কোটি টাকা। ইতোমধ্যে দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেলপথ চালু হয়েছে।

পায়রা গভীর সমুদ্রবন্দর প্রকল্প ৪ হাজার ৫১৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে। গত মার্চ পর্যন্ত ব্যয় হয়েছে ৩ হাজার ৭৮২ কোটি টাকা। আর্থিক অগ্রগতি হয়েছে ৮৬ দশমিক ৪৫ শতাংশ। ২০২৫ সালের জুনে প্রকল্পটি শেষ হবে।

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বাইরে ভারত ও বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করা হচ্ছে। ১৬ হাজার কোটি টাকার প্রকল্পটির গত মার্চ মাস পর্যন্ত ৯৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে। চলতি বছর গত জুনে চালু হয়েছে খুলনা-মংলা রেলপথ। কিন্তু প্রকল্পটি তিন বছরে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও সময় লেগেছে ১৩ বছরের বেশি। মেয়াদ বাড়ার সঙ্গে প্রকল্পের খরচ বেড়েছে দ্বিগুণেরও বেশি।

ঢাকা-গাজীপুর রুটের বিআরটি প্রকল্পটিও এক যুগ পার করে ফেলেছে। শুরুতে ব্যয় ধরা হয় দুই হাজার ৩৯ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। এরপর কয়েক দফায় মেয়াদ বাড়িয়ে প্রকল্পের সবশেষ ব্যয় দাঁড়িয়েছে চার হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। প্রকল্পটি বাস্তবায়নাধীন।

বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের প্রায় ৯৩ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক একেএম মাকসুদুল ইসলাম। প্রায় ২১ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে নতুন এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর।

উড়াল মেট্রোরেলের পর এখন দেশের প্রথম পাতাল মেট্রো রেল নির্মাণের কাজ শুরু করেছে সরকার। এক বছর পর এসে প্রকল্পের তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। পাতাল রেলের মূল নির্মাণকাজ তো দূরের কথা, এখনও ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের কাজই শেষ করতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। নাজুক অর্থনীতিতে আসছে বড় ধাক্কা ।

 

ভোরের আকাশ/মি

 

 

 

মন্তব্য

Beta version