-->
বসুন্ধরা সিটি শপিং মল

কয়েক গুণ বেশি ভাড়া আদায়, সড়কে বিক্ষোভ

বিশেষ প্রতিবেদক
কয়েক গুণ বেশি ভাড়া আদায়, সড়কে বিক্ষোভ

ব্যবস্থাপনা কমিটির বিরুদ্ধে অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে রাজধানীর পান্থপথে রাস্তা অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের শতাধিক দোকান মালিক ও কর্মচারী। গতকাল সোমবার বেলা ১১টা থেকে তারা বিক্ষোভ শুরু করেন। ১২ দফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

পান্থপথ ঘুরে দেখা গেছে, সড়ক অবরোধ করে শতাধিক দোকান মালিক ও কর্মচারীরা বিক্ষোভ করছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা ছিল অনেকটাই নীরব। বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ক্রিয়েটিভ শপিং মলের কর্মচারী আবদুল মালেক বলেন, আমাদের থেকে অনেক বেশি ভাড়া নেওয়া হয়। সার্ভিস চার্জও অনেক বেশি। শপিং মলের ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে যারা আছেন তাদের কোন দায়-দায়িত্ব নেই। যখন যেভাবে পারেন আমাদের শোষণ করেন। আমরা এর প্রতিকার চাই। এসবের জন্য দায়ী বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের মহাব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম ও ইনচার্জ মহসিন করিমের পদত্যাগ চাই আমরা। মোবাইল ফোনের দোকান মালিক মো. কামাল হোসেন বলেন, চুক্তিপত্রের চেয়ে আমাদের বহুগুণ বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে। সার্ভিস চার্জ আর ভাড়া বাড়ানোর পাশাপাশি মোবাইল মার্কেটকে হঠাৎ করে আন্ডারগ্রাউন্ডে (বেজমেন্ট) পাঠানো হয়েছে। ফলে পুরো মোবাইল মার্কেট এখন নষ্ট হওয়ার পথে। এটা এখানকার কিছু মানুষ নষ্ট করছে। আমরা এ সমস্যা থেকে মুক্তি চাই।

দিল্লী দরবার নামের একটি খাবার দোকানের কর্মচারী মো. সোহাগ বলেন, বিভিন্ন শপিং মলে আমরা যারা কাজ করি তাদের ব্যবস্থাপনা কমিটি থেকে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। আমরা কর্মঘণ্টা মেনে কাজ তো করতে পারি না। পাশপাশি আমাদের সরকারি ছুটির দিনেও কাজ করতে হয়। নবাব নামের পাঞ্জাবীর শোরুমের কর্মচারী মো. হাসান বলেন, আমরা চেয়েছিলাম সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কাজ করতে। অথচ তারা বলছে রাত ১০টা পর্যন্ত দোকান খোলা রাখতে হবে। কিন্ত আমরা সেটা মানবো না। কারণ এখানে আমাদের অনেক মা-বোনেরা কাজ করেন। তাদের রাতে বাসায় ফিরতে হয়। এখানে নিরাপত্তার বিষয়টিকে আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখছি।

বসুন্ধরা সিটির একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, আমরা বাধ্য হয়ে রাস্তায় নেমেছি। চুক্তি অনুযায়ী প্রতি বর্গফুটের ভাড়া ২০০ টাকা হলেও নেওয়া হয় তিন থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। ভাড়া নেওয়ার পর রসিদ হিসেবে একটি ফটোকপি করা কাগজ দেওয়া হয়। আমরা অত্যাচারের শিকার। আর তাই বিক্ষোভে আমরা সব ব্যবসায়ীরা অংশ নিয়েছি। সমস্যা সমাধানের পাশাপাশি বসুন্ধরা সিটি শপিং কমপ্লেক্সের মহাব্যবস্থাপক রবিউল ইসলাম ও ইনচার্জ মহসিন করিমকে পদত্যাগ করতে হবে। বিক্ষোভের বিষয়ে রবিউল ইসলাম বলেন, ভাড়া নিয়ে একটু ঝামেলা হয়েছে। এখনো আমরা কথাবার্তা বলছি, আলোচনা চলছে। আশা করি বিষয়টি শীঘ্রই সমাধান হয়ে যাবে।

ব্যবসায়ীদের ১২ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে, ব্যবস্থাপনা কমিটির ইনচার্জ মোহসীন করিমের পদত্যাগ নিশ্চিত করে বসুন্ধরা সিটির বর্তমান ব্যবস্থাপনা কমিটি আবারো গঠন করা, চুক্তিপত্রের বাইরে দোকান ভাড়া নেওয়া বন্ধ করা, বেজমেন্টে দোকান হওয়ায় ট্রেডলাইসেন্সসহ অন্যান্য দলিল পেতে যেসব সমস্যা হয় তার সমাধান, ব্যবসায়ীদের নিয়ে বণিক সমিতি গঠন, দোকানের যেকোন সমস্যা সমাধানে বসুন্ধরা কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনার সুযোগ, দোকান ভাড়ার ক্ষেত্রে অযৌক্তিক ভাড়া নেওয়া বাদ দেওয়া, বেজমেন্টে যেসব দোকান নেওয়া হয়েছে সেখানে ব্যবসা বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করা, মার্কেটের পেছনের গেইট খোলা রাখার ব্যবস্থা রাখা, ব্যবসার সময় সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত করা, বছরে তিনবার অযৌক্তিকভাবে যে সার্ভিস চার্জ বাড়ানো হয়েছে সেটা প্রত্যাহার, সরকারি ছুটিতে মার্কেট বন্ধ রাখা, দোকান সাজানোর জন্য সিন্ডিকেট বিলোপ করে অনিয়ন, দুর্নীতি বন্ধ করা।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version