-->
শিরোনাম

আ.লীগের সামাজ্য চুরমার

নিজস্ব প্রতিবেদক
আ.লীগের সামাজ্য চুরমার

প্রথম তিন মেয়াদে ১৫ বছর নির্বিঘ্নে পার করলেও চতুর্থবার সরকার গঠনের মাত্র সাত মাসের মাথায় এসে হোঁচট খেয়েছে আওয়ামী লীগ। কোটা আন্দোলনে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে ভারতে চলে যান শেখ হাসিনা। পতন ঘটে টানা ১৬ বছরের শাসনের। শেখ হাসিনার পতনের তিন দিন পর নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব গ্রহণ করেই ড. ইউনূস রাষ্ট্রীয় সংস্কারের ঘোষণা দেন। সে অনুযায়ী সর্বস্তরে চলছে পদত্যাগ, পদোন্নতি, নিয়োগ, অব্যাহতি দেওয়াসহ রদবদলের ঘটনা।

শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পরপরই আত্মগোপনে চলে গেছেন দলের শীর্ষ থেকে তৃণমূল পর্যায়ের নেতৃত্বদানকারী নেতারা। সাবেক এমপি, মন্ত্রী ও দলীয় নেতারা একের পর এক হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারের শিকার হচ্ছেন। সরকারের প্রশাসন থেকে দলটির অনুগত ও সুবিধাভোগী কর্মকর্তাদের সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সর্বোচ্চ বিচারালয় থেকে শুরু করে সামরিক বাহিনী, জনপ্রশাসন, পুলিশ, সরকারি-বেসরকারি বিশ^বিদ্যালয়, কলেজ, ব্যাংক, বিমাসহ সব পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানে গণহারে চলছে অপসারণ, রদবদল ও নতুন নিয়োগ। স্থানীয় সরকারের অধীনে সিটি মেয়র, জেলা পরিষদ প্রশাসক, পৌর মেয়র, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান সবাইকে অপসারণ করে প্রশাসক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। ইউনিয়ন পরিষদদের চেয়ারম্যান-মেম্বারদেরও অপসারণের প্রক্রিয়া চলছে। স্থানীয় সরকারের জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ৮০ ভাগের ওপরে ছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারা। বাদ যায়নি গণমাধ্যমও। কয়েকটি গণমাধ্যমের শীর্ষ পদে পরিবর্তন এসেছে। আটক হয়েছেন সাংবাদিকরাও। টানা প্রায় ১৬ বছর ক্ষমতায় থেকে আওয়ামী লীগ সর্বস্তরে নিজেদের অনুগত ব্যক্তিদের নিয়ে যে সাম্রাজ্য গড়ে তুলেছিল তা মাত্র ১৬ দিনেই চুরমার হয়ে গেছে।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, গত ১৬ বছরের মধ্যে শেষ ৬ বছর মানুষ সরকারের ওপর ক্ষুব্ধ হতে শুরু করে। নিত্যপণ্যেও লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, সীমাহীন দুর্নীতিসহ সবক্ষেত্রে বঞ্চনা ও শোষণে ফলে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের সর্বশেষ বিস্ফোরণ ঘটে গত ৫ আগস্ট। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে শেখ হাসিনার দীর্ঘ ১৬ বছরের শাসনের পতন ঘটে। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সময় ধরে ক্ষমতায় থাকা মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী দলটির অস্তিত্ব এখন অনেকটাই হুমকির মুখে। এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভবনা আপাতত নেই বললেই চলে বলে মনে করেন তারা।

রদবদল ও নিয়োগসংস্কার কার্যক্রমের প্রশাসন, বিচার বিভাগ, পুলিশসহ সর্বত্রই রদবদল, অপসারণ ও নিয়োগ কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। সর্বত্রই আওয়ামী লীগের আশীর্বাদপুষ্ট ও সুবিধাভোগীরা অধিষ্ঠিত থাকার অভিযোগ উঠার ভিত্তিতে এমন সংস্কার কার্যক্রম চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে।

ইতোমধ্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকেও দাবি তোলা হয়েছে, বিগত সরকারের সময় যারা প্রশাসনের শীর্ষ পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন বা যাদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে তাদের সরিয়ে দিতে হবে। বিশেষ করে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিবদের।

ছাত্রদের দাবির মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন দেশের প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতি। এর আগেই পদত্যাগ করেন অ্যাটর্নি জেনারেল। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিলের পর সরিয়ে দেওয়া হয়েছে পুলিশের আইজি, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিবকে। পদত্যাগ করেছেন বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যসহ অনেকেই। বাংলাদেশ ব্যাংকের একদল কর্মকর্তা কর্মচারীদের দাবির মুখে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন, চাকরি ছেড়ে চলে গেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর। এর আগে পদত্যাগ করেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চার ডেপুটি গভর্নর।

সম্প্রতি পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, শিল্পকলা একাডেমি ও বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক। বিক্ষোভের মুখে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগরসহ বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা সিটি কলেজের অধ্যক্ষসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধানের পদ থেকে সরে যাচ্ছেন দায়িত্বপ্রাপ্তরা। জননিরাপত্তা বিভাগের সচিব জাহাঙ্গীর আলমকে চাকরি থেকে অবসরে পাঠানো হয়েছে। পর ১৭ আগস্ট প্রথমবারের মতো অবসরে চলে যাওয়া পাঁচ কর্মকর্তাকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে।

এরইমধ্যে ১১তম থেকে ২৯তম বিসিএস পরীক্ষায় নিয়োগ পেয়ে দীর্ঘদিন ধরে সিনিয়র সহকারী সচিব পদমর্যাদায় আটকে থাকা ১১৭ জনকে উপ-সচিব হিসেবে ভূতাপেক্ষভাবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

এরপর ২৮তম থেকে ৪২তম বিসিএসে নিয়োগ বঞ্চিত ২৫৯ জনকে নিয়োগে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নবনিয়োগ শাখা থেকে প্রজ্ঞাপান জারি করা হয়েছে। গত রোববার ২০১ কর্মকর্তাকে উপ-সচিব থেকে যুগ্ম-সচিব পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে।

প্রত্যাহার করা হয়েছে ২৫ জেলা প্রশাসককে (ডিসি)। পুলিশের সব বিভাগের প্রধানদের সরানো হয়েছে অনেক আগেই। আর পুলিশের ১২ উপ-পুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) এবং ১১ পুলিশ সুপার (এসপি) পদে রদবদল করা হয়েছে। এর আগে ডিএমপির উপ-কমিশনার (ডিসি) এবং বিভিন্ন জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) পদমর্যাদার ২৮ জনকে রদবদল করা হয়েছে। পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার ৩০ কর্মকর্তাকে পুলিশ সুপার (এসপি) হিসেবে পদোন্নতি দেওয়া হয়েছে। এর আগে গত রোববার পুলিশের ৭৩ কর্মকর্তাকে সুপারনিউমারারি উপপুলিশ মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) পদে পদোন্নতি দেওয়া হয়।

গত তিন বছরের বেশি সময় একই বিভাগে দায়িত্বে থাকা ব্যাংকটির ২২ জন অতিরিক্ত পরিচালক (সাবেক উপ-মহাব্যবস্থাপক) পর্যায়ের কর্মকর্তাকে বদলি করা হয়েছে। একই সঙ্গে দপ্তর পরিবর্তন করা হয়েছে আরও ৬৩ জন যুগ্ম পরিচালকের। সব মিলিয়ে ৮৫ কর্মকর্তাকে একযোগে বদলি করা হয়েছে। এভাবে বিভিন্ন সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পদত্যাগ, রদবদল ও পরিবর্তনের মিছিল গত কয়েক দিন ধরে ক্রমশ লম্বা হচ্ছে।

হামলা, মামলা ও গ্রেপ্তারগত ৫ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতা, মন্ত্রী ও এমপিদের বাসাবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে।

আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউর দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দলীয় সভাপতির ধানমণ্ডির রাজনৈতিক কার্যালয় এবং তেজগাঁওয়ের ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ ভবন। বাদ যায়নি ধানমণ্ডি-৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধু ভবনও, যেখানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘর গড়ে তোলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ের অধিকাংশ দলীয় নেতা নানাভাবে আক্রান্তের র্শিকার হচ্ছেন। অধিকাংশ দলীয় নেতা ও এমপি দেশে অবস্থান করলেও বাসাবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ স্থান বেছে নিয়েছেন।

হামলা ও ভাঙচুরের মাত্রা হ্রাস পাওয়ার পর শুরু হয়েছে আওয়ামী লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার হিড়িক। অব্যাহত রয়েছে গ্রেপ্তার। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং দলীয় শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদের বিরুদ্ধে মামলার যেন শেষ নেই।

ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, দ্বাদশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী এবি তাজুল ইসলাম, কক্সবাজারের আলোচিত সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিসহ অনেকে। আওয়ামী লীগ আমলের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের বেশির ভাগ নেতার বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এবার সরকারের নজর তৃণমূল পর্যায়ের আওয়ামী নেতা এবং সংসদ সদস্যদের দিকে।

দলীয় জনপ্রতিনিধিদের অপসারণজনপ্রতিনিধিত্বহীন হয়ে পড়েছে আওয়ামী লীগ। খর্ব হয়েছে ক্ষমতা ও ভরসার মাত্রার। ১২টি সিটি করপোরেশনের মেয়র, ৬০টি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং সারা দেশের সব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, নারী ভাইস চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের অপসারণ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। স্থানীয় সরকারের এই চার স্তরে সব মিলিয়ে ১ হাজার ৮৭৬ জন জনপ্রতিনিধিকে অপসারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১২ সিটি মেয়র, ৬০ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ৪৯৩ উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ৩২৩ জন পৌর মেয়র রয়েছেন। বাকিরা হলেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও নারী ভাইস চেয়ারম্যান। এসব জনপ্রতিনিধিদের প্রায় শতভাগই ছিলেন আওয়ামী লীগের দলীয় নেতা ও আশির্বাদপুষ্ট লোকজন।

অভিভাবকহীন দলীয় কর্মী ও সমর্থকেরা :সরকার পতন এবং দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার দেশত্যাগে বিপর্যস্ত আওয়ামী লীগ। দলীয় নেতারা আত্মগোপনে থাকায় অভিভাবকহীন হয়ে পড়েছেন কর্মী ও সমর্থকেরা। নির্দেশনা ও নিরাপত্তা দেওয়ার কেউ নেই। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তারা। পরিস্থিতি সামাল দিয়ে আওয়ামী লীগের ঘুরে দাঁড়াতে বেশ সময় লাগবে বলে জানান দলীয় কর্মী ও সমর্থকেরা।

ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলা শ্রমিক লীগের আহ্বায়ক পিবলু মানখিন গতকাল বুধবার ভোরের আকাশ’কে বলেন, আওয়ামী লীগ নেতাদের কোনো খবর নেই। আত্মগোপনে আছেন তারা। সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের করার কিছুই নেই। কর্মীদের বেশির ভাগই বাসাবাড়ি থেকে বের হচ্ছেন না। এলাকায় দলের অবস্থা ভালো না বলে জানান পিবলু মানখিন।

নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলা যুবলীগের কার্যকরি কমিটির সদস্য মো. আবুল কালাম ভোরের আকাশ’কে বলেন, আমাদের করার কিছু নেই। বর্তমানে চুপচাপ আছি। নেত্রীর দেশত্যাগের পর কয়েকদিন আমরাও বাড়িতে থাকতে পারিনি। বাড়িতে ফিরলেও আগের মতো স্বাধীনভাবে চলাফেরা বন্ধ রয়েছে। এমন অস্তিত্ব সংকটে পড়তে হবে তা কল্পনাও করিনি বলে জানান মো. আবুল কালাম।

টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার শোলাকুড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ ভোরের আকাশ’কে বলেন, রাজনীতি বন্ধ রয়েছে। বর্তমানে নিরাপত্তা নিশ্চিত করাটাই মূল কথা। দলীয় কোনো নির্দেশনা পাইনি। নেতারা এখনও আত্মগোপনে। দলীয় কর্মসূচি পালনের কোনো পরিবেশ নেই বলে জানান ফয়সাল আহমেদ।

নেতারা যা বলেন : আত্মগোপনে থাকায় দলের শীর্ষ নেতাদের খোঁজ মিলছে না। তাদের মুঠোফোনও খোলা পাওয়া যাচ্ছে না। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের কেউ কেউ নিরাপদ অবস্থান থেকে কথা বলছেন। তারা বলছেন, এমন পরিস্থিতি তারা কখনো চিন্তাও করেননি। অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের।

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, বিদায়ী সংসদ সদস্য মাহমুদুল হক সায়েম ভোরের আকাশ’কে বলেন, বড় ক্ষতি হয়ে গেছে আওয়ামী লীগের। শুধু ইমেজ সংকট নয়, দলীয় নেতাকর্মীদের বিপদের শেষ নেই। পুড়ে যাওয়া বাড়িঘর নির্মাণ করা যাবে, কিন্তু ইমেজ উদ্ধার করে ঘুরে দাঁড়ানো খুব কঠিন হয়ে যাবে। তবে আমরা আশাবাদী হতে চাই। আন্দোলন-সংগ্রামের দল আওয়ামী লীগ। দলীয় নির্দেশনা পেলে মাঠে নেমে পড়ব বলে জানান মাহমুদুল হক।

আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল ভোরের আকাশ’কে বলেন, বড় ধাক্কা খেয়েছে আওয়ামী লীগ। কিন্তু এর আগেও দলটি এমন পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আমরা শিগগির রাজনৈতিক মাঠে ফিরব বলে জানান সাংগঠনিক সম্পাদক।

জনবান্ধব হওয়ার চেষ্টায় বিএনপি-জামায়াত :রাজনৈতিক মাঠে নেই আওয়ামী লীগ। ফাঁকা মাঠ পাওয়ার পরও সংযত কৌশলে এগোচ্ছে বিএনপি ও জামায়াত। ইমেজ ও অস্তিত্ব সংকটে থাকা আওয়ামী লীগকে ভোটের মাধ্যমে পরাজিত করতে বেশ সতর্ক তারা। নেতাকর্মীদের বাড়াবাড়ি দমনে কঠোর হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএনপি-জামায়ত দল দুটির শীর্ষ নেতারা মনে করছেন, এখনই লাগাম টানা না গেলে মানুষের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। তাই যখন যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আসবে, ঘটনা বিবেচনায় তাকে তখনই দল থেকে সতর্ক করা, কারণ দর্শানোর নোটিশ, পদ স্থগিত কিংবা বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর সারা দেশে নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে দলটির নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। এর পরপরই এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বিএনপি ও জামায়াতের শীর্ষ নেতারা বলছেন।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version