চাকরিতে যোগদানের দাবি নিয়ে মাঠে নেমেছেন নিয়োগ বঞ্চিত ৭৫৭ এসআই ও সার্জেন্ট। গতকাল শুক্রবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তারা বলেছেন, তাদের নিয়োগ দিতে হবে। নিয়োগ পেলে তারা পুলিশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল করতে প্রস্তুত রয়েছেন। মানবিক পুলিশ হয়ে তারা একটি মানবিক বাংলাদেশ গঠনে ভূমিকা রাখবেন।
তাদের দাবি- ২০০৭ সালে ‘দলীয় বিবেচনায়’ তাদের নিয়োগ বাতিল করা হয়। চাকরিতে যোগ দিতে না পেরে পরিবার নিয়ে তারা অসহায় হয়ে পড়েছেন। তারা বলেন, আমরা বৈষম্যের শিকার; বর্তমান সরকার জনআকাক্সক্ষার সরকার। আপনাদের কাছে আমাদের ন্যায্য দাবি চাকরিতে আমাদেরকে নিয়োগ দিয়ে ৭৫৭টি পরিবারকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করুন।
নিয়োগবঞ্চিত এসআই ও সার্জেন্টদের প্রতিনিধি এস এম সুজন চৌধুরী লিখিত বক্তব্যে বলেন, ২০০৭ সালে তৎকালীন আইজিপি নূর মোহাম্মদ তাদের নিয়োগ বাতিল করেন। শুধুমাত্র ‘দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ’ দেওয়া হয়েছেÑ এই অজুহাতে ২০০৭ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি ৫৩৬ জন এসআই এবং ২২১ জন সার্জেন্টসহ মোট ৭৫৭ জনের চূড়ান্ত নিয়োগ বাতিল করা হয়।
লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, ২০০৫ সালের ১৭ নভেম্বর একটি দৈনিক যুগান্তর প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক বাংলাদেশ পুলিশের এসআই পদে নিয়োগের জন্য ওই বছরের ২০ ডিসেম্বর বাংলাদেশ পুলিশের সব রেঞ্জ ডিআইজিদের তত্ত্বাবধানে শারীরিক পরীক্ষাসম্পন্ন হয়। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ২০০৬ সালের ১৭, ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা ২২ সেপ্টেম্বর থেকে ১২ অক্টোবর পর্যন্ত পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়। মৌখিক পরীক্ষায় চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ২২ অক্টোবর থেকে ৩০ অক্টোবর ও পুলিশ ভেরিফিকেশন ২২ অক্টোবর থেকে ৫ নভেম্বর পর্যন্ত সম্পন্ন হয়।
অপরদিকে ২০০৫ সালের ১৪ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি মোতাবেক বাংলাদেশ পুলিশের সার্জেন্ট পদে নিয়োগের জন্য ২ জুলাই রাজারবাগ পুলিশ লাইনে শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করে। শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের ২৭, ২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বরে লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মৌখিক পরীক্ষা ২০০৬ সালের ২ আগস্ট পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত হয়।
তারা আরও বলেন, নির্বাচিত সব প্রার্থীরা কর্মরত বিভিন্ন চাকরি থেকে অব্যাহতি নিয়ে রাজশাহীর পুলিশ ট্রেনিং একাডেমি সারদায় যোগদানের অপেক্ষায় ছিলাম। কিন্তু বিনা কারণে হঠাৎ করে আমাদের চাকরিতে যোগদান বাতিল করে দেন তৎকালীন পুলিশ প্রধান নুর মোহাম্মদ। চাকরিতে যোগদান করতে না পেরে পরবর্তীতে আমরা উচ্চ আদালতে রিট করেছিলাম। উচ্চ আদালতেও আমরা নিয়োগবঞ্চিত ৭৫৭ জন চাকরিপ্রার্থী ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হই। নিয়োগ বাতিল হওয়ার পর অনেকে বিকল্প কর্মসংস্থানে ঢুকলেও বেশিরভাগই মানবেতর জীবন যাপন করছেন। সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে নিয়োগ বঞ্চিতদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, আমরা নিয়োগ পেলে ছাত্র জনতার আন্দোলনের যে আকাক্সক্ষা একটি মানবিক বাংলাদেশের; মানবিক পুলিশ হয়ে আমরা কাজ করবো।
ভোরের আকাশ/মি
মন্তব্য