-->

উদ্ধার ত্রাণ সমন্বয়ের চেষ্টা

বিশেষ প্রতিবেদক
উদ্ধার ত্রাণ সমন্বয়ের চেষ্টা

লাখো বন্যার্ত এখনও উদ্ধারের অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ায় কুল-কিনারা পাচ্ছেন না তারা। চলছে সর্বাত্মক উদ্ধার কার্যক্রম। পাশাপাশি চলছে ত্রাণ সংগ্রহ ও বিতরণ। তাই বন্যাদুর্গত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ তৎপরতা সমন্বয়ের চেষ্টা চলছে। শুরু থেকেই সরকার ও শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন পেশাজীবী মানুষ বিশেষ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক দলের স্বেচ্ছাসেবীরা দিনরাত এই মহৎ কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। দুর্গম এলাকায় এখনো ত্রাণ পৌঁছায়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে যথেষ্ট ত্রাণ আছে। অনেক জায়গায় নৌকা দিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম চালানো অসম্ভব; সেখানে স্পিডবোট দরকার। একই সঙ্গে উদ্ধারকারীর সংখ্যাও বাড়ানো দরকার।

গতকাল রোববার দুপুরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান গণমাধ্যমকে জানান, বন্যাজনিত কারণে মৃতের সংখ্যা আগের মতো ১৮ রয়েছে। মৌলভীবাজারে দুজন নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্যার কবলে পড়েছে ১১ জেলার ৭৩ উপজেলা, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৫৪৫টি ইউনিয়ন ও পৌরসভা। এ পর্যন্ত ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ৫২ লাখ ৯ হাজার ৭৯৮ জন। বন্যা দুর্গতদের জন্য তিন হাজার ৬৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ জন। সেই সঙ্গে ২২ হাজার ২৯৮টি গবাদি পশুকে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বন্যার্তদের চিকিৎসায় মোট ৭৪৮টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলে জানান সচিব কামরুল হাসান।

উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম : বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে চলছে সর্বাত্মক উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের ২০ জনের একটি উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা জানান, কুমিল্লার বুড়িচংয়ের বাকশিমূল গ্রামে খাবার নয়, প্রয়োজন স্পিডবোট। গ্রামের ভেতর পানিবন্দি হয়ে আছে কয়েক সহস্রাধিক মানুষ। সাধারণ নৌকায় এদের উদ্ধার করা কোনোভাবেই সম্ভব নয়। এই এলাকায় যে পরিমাণ ত্রাণ সহায়তাকারীরা প্রবেশ করেছে, সে অনুসারে উদ্ধারকারীর সংখ্যা হাতেগোনা কয়েকজন। এমনকি খালিহাতে কিংবা সাধারণ নৌকা নিয়ে উদ্ধারকাজ চালানো হচ্ছে। ফলে তীব্র স্রোতের কারণে তেমন অগ্রগতি নেই।

উদ্ধারকারী দলের একজন হাবিবুর রহমান বলেন, আমরা তিন ভাগে ভাগ হয়ে সকাল থেকে উদ্ধার তৎপরতা চালাচ্ছি। পুরো গ্রামে বুক সমান পানি। কিছু লোক নৌকার জন্য বের হতে পারছেন না, অনেকেই সংসারের মায়ায় ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এদের উদ্ধার করতে হলে স্পিডবোট বা ইঞ্জিনচালিত নৌকার প্রয়োজন। পানির স্রোতের কারণে সাধারণ নৌকায় উদ্ধার কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। তাই সকলের কাছে অনুরোধ থাকবে, আপনারা যারাই এই এলাকায় আসবেন খাবার নয়, মানুষ বাঁচাতে স্পিডবোট বা ইঞ্জিনচালিত নৌকা নিয়ে আসুন। খাবার কিনে টাকা আপচয় না করে বোট বা নৌকা কিনুন। এটি মানুষের উপকারে আসবে বলে জানান হাবিবুর রহমান।

পরিবার নিয়ে সড়কের ওপরে আছি। ঘরবাড়ি সব শেষ। অনেকে ত্রাণ নিয়ে আসে, ত্রাণ পাচ্ছি। কিন্তু এলাকার ভেতরে আমার বোন-ভাগনিরা আছে। তাদের কাছে কেউই যায় না ত্রাণ দিতে।’ কথাগুলো বলছিলেন কুমিল্লায় গোমতী নদীর বাঁধ ভাঙায় সড়কে আশ্রয় নেওয়া বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকার বাসিন্দা মতিন মিয়া। মতিন মিয়ার মতো অনেকে অভিযোগ করেছেন, প্রত্যন্ত এলাকার অনেক পানিবন্দী মানুষের কাছেই গতকাল পর্যন্ত কোনো সহায়তা পৌঁছায়নি; বিশেষ করে ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও লক্ষ্মীপুরের প্রত্যন্ত এলাকায় ত্রাণের জন্য হাহাকার তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, নৌকার সংকটে ত্রাণ দিতে আসা লোকজন প্রত্যন্ত এলাকায় যেতে পারছেন না। সড়কের পাশে যাদের পাওয়া যাচ্ছে, তাদের মধ্যেই বারবার ত্রাণ বিতরণ করা হচ্ছে বলে জানান মতিন মিয়া।

বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনী সারাদেশে বন্যার্তদের উদ্ধার, চিকিৎসাসেবা ও ত্রাণ সহায়তায় কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বমোট ২৩০০ জনকে বন্যা দুর্গত ব্যক্তিদের হেলিকপটার ও বোট যোগে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে।গতকাল রোববার আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর (আইএসপিআর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

আইএসপিআর জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় সর্বমোট ২৩০০ জন বন্যা দুর্গত ব্যক্তিকে হেলিকপটার ও বোট যোগে উদ্ধার করে বিভিন্ন আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ১৮৩৯৪ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী বন্যার্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে ৭টি অস্থায়ী মেডিকেল টিমের মাধ্যমে সর্বমোট ৮৬৪ জনকে চিকিৎসা সহায়তা দেয়া হয়েছে। আইএসপিআর আরও জানিয়েছে, সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, বিজিবি ও র‌্যাবের হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আকাশ পথে ৪৪৮২ প্যাকেট খাদ্য সামগ্রী দুর্গম এলাকায় পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।

আইএসপিআর জানিয়েছে, সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে সর্বমোট ১৯ জন রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে, বন্যা কবলিত পরশুরাম মডেল স্কুল হতে বিমান বাহিনীর হেলিকপ্টার যোগে ৫ জন এবং ফেনী জেলার লালপুর হতে একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীকে উদ্ধার করে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে আনা হয়েছে। বন্যা দুর্গত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য সশস্ত্র বাহিনীর স্থাপিত ১১টি ক্যাম্পের পাশাপাশি সেনাবাহিনীর ৫টি, বিমান বাহিনীর ৭টি, র‌্যাবের ২টি ও বিজিবির ১টি হেলিকপ্টার ইউনিট মোতায়েন রয়েছে।

উল্লেখ্য যে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যান চলাচলের উপযোগী রাখার লক্ষ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রাম হতে সেনাবাহিনীর ২টি ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড প্রাথমিকভাবে কাজ শুরু করেছে। এছাড়াও বন্যা দুর্গত এলাকায় মোবাইল সংযোগ সচল করার লক্ষ্যে সেনাবাহিনীর সহায়তায় বেসামরিক মোবাইল কোম্পানিগুলো টাওয়ার মেরামতের কাজ চলমান রেখেছে। খাগড়াছড়ি জেলার সাজেক পর্যটন কেন্দ্রে আটকাপড়া ২৬০ জন পর্যটককে ৭৩টি যানবাহন যোগে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনা হয়েছে বলে জানায় আইএসপিআর। গত কয়েক দিন ধরে চলমান বন্যা পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উদ্যোগে অব্যাহত রয়েছে গণত্রাণ কর্মসূচি। গতকাল রোববারও সকাল থেকে বৃষ্টি হলেও এখন স্বতঃস্ফূর্তভাবেই ত্রাণ দিতে আসছেন অনেকে। তবে ইতোমধ্যে টিএসসিতে ত্রাণ মজুদ রাখার স্থান সংকুলান না হওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিমনেসিয়ানে ত্রাণ নেওয়া হচ্ছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে গিয়ে দেখা যায়, নগরীর নানা স্থান থেকে অনেকেই সাহায্য করতে আসছেন। সকালে বৃষ্টির ফলে কিছুটা ভোগান্তি হলেও তা উপেক্ষা করে এসেছেন অনেকেই। তবে টিএসসিতে আপাতত আর ত্রাণ নেওয়া হচ্ছে না, শুধু নগদ অর্থ গ্রহণ করা হচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকরা কিছু সময় পর পর মাইকে বলছেন, ত্রাণ সাহায্য জিমনেসিয়াম ও ডাকসু ভবনে নেওয়া হচ্ছে। এক স্বেচ্ছাসেবক বলেন, প্রতিটি ত্রাণ প্রস্তুত করে আমরা ট্রাকে করে তা পাঠিয়ে দিচ্ছি। এছাড়া জিমনেসিয়ামেও এখন অনেক ত্রাণ আসছে। আমরা ধীরে ধীরে সব ত্রাণই পৌঁছে দেবো।

নানা প্রতিকূল পরিস্থিতির মাঝেও বন্যার্তদের ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতায় অভূতপূর্ব ঐক্য দেখা যাচ্ছে। বানভাসি মানুষের জন্য একাট্টা হয়েছে সবাই। ছাত্র-জনতা, রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ীগোষ্ঠী, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ও ব্যক্তিগত উদ্যোগে ত্রাণ কার্যক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়েছে সবাই। তরুণসমাজের এগিয়ে আসার আগ্রহ সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে। বিশেষ করে দলীয় পরিচয়ে ছাত্রদের উপস্থিতি না থাকায় এবার তা অন্য রূপে হাজির হয়েছে। উদ্ধার তৎপরতার জন্য কেউ কেউ দলীয়ভাবে নৌকা বা স্পিডবোটের ব্যবস্থা করছেন, ত্রাণের ব্যবস্থা করছেন। আবার বন্যাকবলিত এলাকায় যাদের বড় ভবন রয়েছে, তারা তা আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য ছেড়ে দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ভরা এখন ত্রাণকাজের ছবি, ভিডিও আর এসংক্রান্ত হরেক রকম আবেদনে।

বিভিন্ন গ্রুপ, সংগঠন, সংস্থা, প্রতিষ্ঠান, এমনকি ব্যক্তিগত উদ্যোগেও মানুষ এই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরেছে তাদের আহবান, অনুরোধ, অভিমত, অভিজ্ঞতা। মুঠোফোন নম্বর, ব্যাংকের সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর, যোগাযোগের ঠিকানা-এসব তুলে দিচ্ছে। মানুষ তাতে সাড়াও দিচ্ছে।

গত শুক্রবার প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিল খোলা হয়েছে। বন্যার্তদের সহযোগিতায় এক দিনের বেতনের সমপরিমাণ অর্থ দিয়েছেন সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনী, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি), র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র‌্যাব) সব পদবির সদস্যরা। একই সঙ্গে তারা উদ্ধার তৎপরতায় সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি পৃথকভাবেও ত্রাণ দিচ্ছেন। সরকারি-বেসকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান প্রধান উপদেষ্টার ত্রাণ তহবিলে সহায়তা করছে। কোনো সংস্থা এক দিনের বেতন, আবার কেউ অর্থসহ নানা সহায়তা করছে। সরকারের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসন ও উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে।

বন্যার্তদের মধ্যে সরবরাহের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ত্রাণ সংগ্রহ করতে দেখা গেছে বিভিন্ন বাম ছাত্রসংগঠনের নেতাকর্মীদের। রাজধানীর পল্টন মোড়, বংশাল, শ্যামপুর ও গোলাপশাহ মাজার এলাকায় মাইকিং করে বন্যার্তদের জন্য শুকনা খাবার, পানি, স্যালাইন ও অর্থ সংগ্রহ করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। নোয়াখালী ও কুমিল্লার বিভিন্ন এলাকায় ত্রাণ সহায়তা ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করেছে সংগঠনটি। বন্যাকবলিত অঞ্চলে চিকিৎসা ও ত্রাণ সহায়তা দিয়েছেন সামজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন, গণতান্ত্রিক ছাত্র কাউন্সিলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ উদ্ধারকাজ পরিচালনা। পূর্বাঞ্চলের মানুষ বন্যার সঙ্গে পরিচিত নয়। ফলে কিভাবে নিজেদের রক্ষা করতে হয় সে বিষয়ে তাদের কোনো অভিজ্ঞতা ছিল না। তবে এখন দীর্ঘদিন ত্রাণ লাগবে তাদের। সেটা বিতরণে একটি সমন্বিত পরিকল্পনা করা জরুরি। সবাই যার যার জায়গা থেকে সহায়তা করবেন, কিন্তু সেটা বিতরণের ব্যাপারে যদি সমন্বিত রূপ না থাকে তাহলে দেখা যাবে এক অঞ্চলের মানুষ বেশি সাহায্য পাবে, আবার কোনো কোনো জায়গার মানুষ বঞ্চিত রয়ে যাবে।

সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে : উজান থেকে নেমে আসা ঢল ও অতি ভারি বৃষ্টিতে দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে যে ভয়াবহ বন্যা চলছে তা উন্নতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়।

গতকাল রোববার দুপুরে মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুল হাসান বলেন, ফেনী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, খাগড়াছড়ি, নোয়াখালী, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সিলেট, লক্ষীপুর ও কক্সবাজারের বন্যা পরিস্থিতি ‘উন্নতির দিকে’। নতুন করে কোনো জেলা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা নেই।”

ফেনী, কুমিল্লা, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ কয়েকটি জেলায় বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির দিকে যাচ্ছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। তবে বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। রোববার সকাল ৯টায় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের বুলেটিনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় ত্রিপুরা সীমান্তবর্তী অঞ্চলে এবং ত্রিপুরা প্রদেশে তেমন বৃষ্টি হয়নি। এতে উজানের নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস অব্যাহত রয়েছে। ফলে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামের নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় ফেনীর বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে। তবে কোনো কোনো স্থানে স্থিতিশীল থাকতে পারে। আবহাওয়া সংস্থারগুলো বরাত দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও এর কাছাকাছি উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের শঙ্কা নেই। এ সময় উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মৌলভীবাজার ও হবিগঞ্জের মনু, খোয়াই, ধলাই নদীর পানি সমতল হ্রাস পেতে পারে এবং নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত থাকতে পারে।

আগামী ২৪ ঘণ্টায় দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও এর কাছাকাছি উজানে ভারি বৃষ্টিপাতের আশঙ্কা রয়েছে। এতে বান্দরবান, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের সাঙ্গু, মাতামুহুরি, কর্ণফুলী, হালদা ও অন্যান্য নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পেতে পারে।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। অন্যদিকে গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে, যা আগামী ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version