-->
শিরোনাম

গত ২৪ ঘণ্টায় সড়কে ঝরল ১০ প্রাণ

ভোরের আকাশ ডেস্ক
গত ২৪ ঘণ্টায় সড়কে ঝরল ১০ প্রাণ

গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন ও নরসিংদীতে মাইক্রোবাস-কভার্ড ভ্যান সংঘর্ষে চারজন নিহত হয়েছে। শনিবার রাত ও রোববার সকালে দুর্ঘটনাগুলো ঘটে। বিস্তারিত প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-

গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

এখন পর্যন্ত নিহত ছয়জনের মধ্যে পাঁচজনের নাম পাওয়া গেছে। তারা হলেন- সামাদ আলী (৪০), সাকিবুর রহমান (৩৫), রহিজ শেখ (২৪), তানিয়া আফরোজ (২৮) ও তার মা তহুরা বেগম (৫৫)। এছাড়া নিহত বাকি একজনের পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। নিহতরা সবাই বাসের যাত্রী ছিলেন।

ভাঙ্গা হাইওয়ে থানার উপ-পরিদর্শক আব্দুল্লাহ হেল বাকি জানান, খুলনা থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস ঘটনাস্থলে পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলে পাঁচজন ও হাসপাতালে নেওয়ার পথে আরও একজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে অন্তত ২০ জন যাত্রী। পরে তাদের মুকসুদপুর ও কাশিয়ানী উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, সকালে বিকট আওয়াজ পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে দেখি ইমাদ পরিবহনের একটি বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়েছে। গিয়ে দেখি বাসের একপাশে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। ডানপাশের পাঁচটি সিটে থাকা পাঁচজন যাত্রীই ঘটনাস্থলে নিহত হয়েছেন। বাকি যাত্রীদের মধ্যে অনেকেই গুরুতর আহত হয়ে কাতরাচ্ছে। পরে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে স্থানীয়দের সহযোগিতায় হতাহতদের উদ্ধার করে।

কাশিয়ানী ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন মাস্টার রেজাউল মাওলা বলেন, সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটের দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কাশিয়ানী উপজেলার মাঝিগাতি এলাকায় ঢাকাগামী ইমাদ পরিবহনের সঙ্গে বিপরীতগামী একটি ট্রাকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় বাসটি দুমড়ে মুচড়ে যায়। এতে নারীসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। পরে আরও একজনের মৃত্যু হয়েছে। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পৌঁছে নারীসহ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করেন। এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় ১০ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। নিহতদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। কাশিয়ানী থানার উপ-পরিদর্শক সেলিম মিয়া বলেন, আমরা এখন পর্যন্ত ছয়জনের নিহতের মধ্যে পাঁচজনের নাম শনাক্ত করতে পেরেছি। মরদেহগুলো ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।

নরসিংদী : নরসিংদীতে মাইক্রোবাসের সঙ্গে কভার্ড ভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষে এক পরিবারের চারজনের প্রাণ গেছে; আহত হয়েছেন মাইক্রোবাসের চালকসহ আরো চার যাত্রী। গত শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে নরসিংদী সদর উপজেলার দগরিয়া এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে জেলা ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. রায়হান জানান। নিহতরা হলেন- নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়নের বাটখোলা গ্রামের বাসিন্দা কামরুন্নাহার বেগম (৩৫), তার ছেলে সাজিদ (১২), পুত্রবধূ তানজিনা আক্তার (২৪) ও সাজিদের চাচাত বোন সাবিহা (১৪)।

ঢাকার মিরপুরে এক আত্মীয়র বাড়িতে বেড়ানো শেষে তারা রায়পুরার বাড়িতে ফিরছিলেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন তাদের আত্মীয় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী আফজাল বিন হারুন। তিনি জানান, কামরুন্নাহারের বড় ছেলে ইমরান আহমেদের সঙ্গে তানজিনার বিয়ে হয়েছে কয়েকদিন আগে। ঢাকার মিরপুরে তানজিনার বোনের বাড়িতে বাড়িতে গিয়েছিলেন তারা। সেখান থেকে রায়পুরায় গ্রামের বাড়িতে ফিরছিলেন। তাদের মাইক্রোবাসটি দগরিয়া এলাকায় পৌঁছলে বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টবাহী একটি কভার্ডভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। তাতে মাইক্রোবাসটি দুমড়ে মুচড়ে গিয়ে ঘটনাস্থলেই চারজনের মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা আহত চারজনকে উদ্ধার করে নরসিংদী জেলা হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়।

নরসিংদীর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. রায়হান বলেন, খবর পেয়ে আমরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাইক্রোবাস ও কভার্ডভ্যান উদ্ধার সরিয়ে মহাসড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক করি। জেলা সদর হাসপাতালের চিকিৎসক মোহাম্মদ রাকিব আসকারী বলেন, আহত অবস্থায় চারজনকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে। তাদের মধ্যে দুইজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। নরসিংদী সদর মডেল থানার এসআই ইউসুফ আলী খান বলেন, মাইক্রোবাসটি দ্রুতগতিতে অপর একটি প্রাইভেটকারকে পাশ কাটানোর সময় কভার্ডভ্যানের সামনে পড়ে গেলে মুখোমুখী সংঘর্ষ হয়। কভার্ডভ্যানটি জব্দ করা হলেও চালক পালিয়ে গেছে। আইনগত পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version