ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ওরিয়ন গ্রুপের

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ওরিয়ন গ্রুপের

ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করেছে ওরিয়ন গ্রুপ। ওরিয়ন গ্রুপের ৬টি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সালমান ওবায়দুল করিমের পক্ষে ওরিয়ন গ্রুপের সিনিয়র সহকারি ব্যবস্থাপক মো. মোখলেসার রহমান এই মামলা করেছেন। মামলায় ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশন, গণমাধ্যমটির সিইও(প্রধান সম্পাদক) এম শামসুর রহমান এবং রিপোর্টার আব্দুল্লাহ আল রাফীকে বিবাদী করা হয়েছে। মামলায় ৫শ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকার চতুর্থ যুগ্ম জেলা জজ আদালতে এই মামলা করা হয়েছে।

‘বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নামে ওরিয়নের হাজার কোটি টাকা পাচার’ শিরোনামে গত ১৩ সেপ্টেম্বর ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনে সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রতিবেদনে অভিযোগ করা হয়েছে, সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে সরকারকে কোনো বিদ্যুৎ না দিয়েও ওরিয়ন সরকারি অর্থ আত্মসাৎ ও বিদেশে অর্থ পাচার করেছে, ব্যবসায় রাজনৈতিক যোগাযোগ ব্যবহার করেছে। ওরিয়ন বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পের জন্য নেওয়া ঋণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে এবং এ টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এই প্রতিবেদনকে বিভ্রান্তিকর, মানহানিকর এবং মিথ্যা দাবি করেছে ওরিয়ন গ্রুপ।

মামলায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অন্যতম অবদান রাখা প্রতিষ্ঠান ওরিয়ন গ্রুপ। এ কোম্পানি সবসময় জাতীয় নিয়মনীতি পুরোপুরি মেনে চলেছে, এবং বাংলাদেশের আরও শতাধিক বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের মতো একই বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) করেছে ওরিয়ন। দেশের বিদ্যুৎ চাহিদার প্রতি প্রতিশ্রুতি বজায় রেখে ২০১১ সাল থেকে ওরিয়ন তাদের ছয়টি অত্যাধুনিক, সাশ্রয়ী, পরিবেশবান্ধব এবং সম্পূর্ণরূপে চালু বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে জাতীয় গ্রিডে ১৬.৯ বিলিয়ন কিলোওয়াট-ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে।

ওরিয়ন গ্রুপের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, ওরিয়ন গ্রুপ নিশ্চিত করছে যে, কোম্পানির নিজস্ব অর্থায়নে এবং স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ঋণের সমন্বয়ে সমস্ত বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপন ও পরিচালনার অর্থায়ন করা হয়েছে। কোনো টাকা বিদেশে পাচার হয়নি। ব্যবসায়িক কার্যক্রমের জন্য প্রায়ই ঋণের প্রয়োজন হয় এবং ওরিয়ন ধারাবাহিকভাবে তার সমস্ত ঋণ সময়মতো পরিশোধ করেছে।

এামলায় বলা হয়েছে, দুবাই ও চীনের দুটি বিদেশি কোম্পানি ওরিয়ন গ্রুপের মালিকানাধীন হওয়ার অভিযোগও মিথ্যা। এই কোম্পানিগুলোর সঙ্গে ওরিয়নের অংশীদারত্ব বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের জন্য বিডিং প্রক্রিয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং কোম্পানি দুটির কোনোটিই ওরিয়নের চেয়ারম্যান বা কোন বাংলাদেশি ব্যক্তির মালিকানাধীন নয়। ওরিয়ন গ্রুপের কোনো কোম্পানিতে কোনো বহিরাগত রাজনৈতিক মালিকানা নেই। রাজনৈতিক অংশীদারত্বের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে প্রভাব খাটানো এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। ওরিয়নের সবগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র স্বাধীনভাবে নির্মাণ ও পরিচালিত হয়েছে, কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা বহিরাগতের সম্পৃক্ততা নেই। ওরিয়ন গ্রুপের কোনো কোম্পানিতে কোনো বাহ্যিক রাজনৈতিক মালিকানা নেই। সমস্ত ব্যবসা এককভাবে ওরিয়নের চেয়ারম্যান এবং তার পরিবারের সদস্যদের দ্বারা পরিচালিত হয়। সেইসঙ্গে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ ওরিয়ন দ্ব্যর্থহীনভাবে অস্বীকার করছে। ওরিয়নের সমস্ত বিনিয়োগ ও অর্থ বাংলাদেশেই রয়েছে, বিদেশে কোনো অর্থ পাচার হয়নি।

মামলায় বলা হয়েছে, মানহানিকর যে সংবাদ প্রচার করা হয়েছে তা শুধু বিভ্রান্তিকরই নয়, দায়িত্বশীল সাংবাদিকতার লঙ্ঘনও। যাচাই না করে প্রমাণ ছাড়া এসব প্রতিবেদন প্রকাশের উদ্দেশ্য ইচ্ছাকৃতভাবে ওরিয়ন গ্রুপের সুনাম নষ্ট করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে সত্য প্রতিষ্ঠা এবং মিথ্যা তথ্য ছড়ানোর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ওরিয়ন গ্রুপ আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য