-->

সহোদরসহ সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ

গোলাম মুজতবা ধ্রুব
সহোদরসহ সাংবাদিক হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ

রাজধানীর হাটখোলায় ফ্ল্যাট নিয়ে বিরোধের জেরে সহোদরসহ খুন হওয়া সাংবাদিক আল আমিন ভূঁইয়া হত্যার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে ওয়ারী থানা পুলিশ। তারা হলেন, মো.আকবর হোসেন (৬০), তার ছেলে মো.আসিফ সুলতান সিফাত(২৭) ও তার বন্ধু আজহারুল ইসলাম খান রিয়ান(২৮)। পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-কমিশনার মো.ছাহেহ উদ্দিন ভোরের আকাশকে এই তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আমরা তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছি।

পরে ওয়ারী থানার ওসি ফয়সাল আহমেদ ভোরের আকাশকে বলেন, পুলিশ শুক্রবার সকালে জোড়া খুনের ঘটনায় তিনজনকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ফ্ল্যাট নিয়ে বিরোধের জের ধরে তারা হত্যায় জড়িত ছিলো বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানায়। তাদের রিমান্ডে নেওয়ার জন্য আবেদন করবো। রিমান্ডে পেলে আরো কারা কারা এই হত্যায় জড়িত ছিলো সেটাও জানা যাবে।

জানা গেছে, গত ১৪ আগস্ট রাজধানীর ওয়ারীর হাটখোলা এলাকায় ফ্ল্যাট নিয়ে বিরোধের জেরে খুন হন বাংলাদেশের আলো পত্রিকার সাংবাদিক আল আমিন ভূঁইয়া (৪০) ও তার সহোদর কাপড় ব্যবসায়ী নুরুল আমিন ভূঁইয়া (৩৫)। এই ঘটনায় নিহতদের বড় ভাই মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া যে জমিতে ফ্ল্যাট নির্মাণ হওয়ার পর তারা কিনেছিলেন, তার মালিক আজগর আলী, আকবর আলী, আকবরের ছেলে মো.আসিফ সুলতান সিফাত(২৭), ক্লাসিক ডেভেলপার কোম্পানির মালিক রিপনসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন। ওয়ারী থানা পুলিশ ওই সময় সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন তারা ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন। সেখান থেকে খুনিদের শনাক্ত করে শিগগির তারা আইনের আওতায় আনবেন।

হত্যার দুই মাসের আগেই খুনীদের আইনের আওতায় আনার খবরে নিহতদের বড় ভাই মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া বলেন, আমরা আনন্দিত যে খুনীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমার বিশ্বাস ছিল পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পারবে। আর এই আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশ অত্যন্ত দায়িত্বশীল ভূমিকায় ছিলো। তবে মামলার আরেক আসামি রিপনকেও গ্রেপ্তার করে শীঘ্রই আইনের আওতায় আনতে হবে।

আগে মো. রুহুল আমিন ভূঁইয়া জানিয়েছিলেন, ওয়ারী থানা পুলিশ আমার দুই ভাই খুন হওয়ার পর আমাকে থানায় ডেকে সেইদিনের ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ দেখিয়েছিল। সেখানে আমি স্পষ্ট দেখি প্রায় দেড় বছর আগে যেখানে আমরা ফ্ল্যাট কিনেছিলাম সেই জমির মালিক আকবর ও আজগর আমার দুই ভাইকে সরাসরি ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় কোপোচ্ছে। আজগরের ছেলে তার সাঙ্গপাঙ্গরা সরাসরি হত্যায় অংশ নেয়। আল আমিন ও নুরুল আমিনের মৃত্যু নিশ্চিত করার পর তারা থামে। পরে খবর পেয়ে আমরা তাদের উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষণা করেন।

রুহুল আমিন জানান, এক সময় তার ছোট ভাই আল আমিন ওয়ারী থানার ৪১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার কারো সঙ্গে ব্যক্তিগত কোনো বিরোধ ছিল না। আর মামলার আসামিরা স্থানীয়ভাবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি বলেন, সরকার পতনের পর তারা এখন পলাতক ছিলেন। তবে তারা আর পালিয়ে থাকতে পারেলো না।

সাংবাদিক আলা আমিন ভূঁইয়া যেদিন খুন হন সেদিন তার স্ত্রী মুনমুন ভূঁইয়া সাংবাদিকদের অভিযোগ করে বলেন, আমরা প্রায় দেড় বছর আগে রিপন নামে ডেভেলপার (ফ্ল্যাট) ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় দেড় কোটি টাকা দিয়ে পারিবারিকভাবে ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। ফ্ল্যাট রেডি হলেও তা বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছিল না। এসব নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সকালে আমার স্বামী হাটখোলা এলাকায় গিয়েছিলেন ওই ফ্ল্যাটের ওখানে। এসব নিয়ে বিরোধে রিপন তার লোকজন নিয়ে আমার স্বামী ও তার ভাইকে হত্যা করেছে।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version