-->

আলোচনার কেন্দ্রে ছাত্রশিবির

এম. সাইফুল ইসলাম
আলোচনার কেন্দ্রে ছাত্রশিবির
  • ঢাবির সভাপতি-সেক্রেটারির নাম প্রকাশের পর আলোচনা শুরু
  • বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কার্যক্রম নিয়েও সক্রিয়
  • পরিচয় গোপন করে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বে দেওয়া নিয়ে প্রশ্ন
  • ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা ঐক্য বিনষ্টের ষড়যন্ত্র থেকেই প্রশ্ন তোলা হচ্ছে-শিবির

রাজনীতির মাঠের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইসলামী ছাত্রশিবির। শেখ হাসিনার সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারী থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবিরের সভাপতি সাদিক কায়েম ও সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ রাজনৈতিক পরিচয় নিয়ে হঠাৎ সামনে আসায় শিবির নিয়ে বিস্তর আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ওই দুইজনের রাজনৈতিক পরিচয় সামনে আসায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রশিবিরের সক্রিয় সাংগঠনিক কার্যক্রম এখন নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

তবে এনিয়ে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় ও ঢাবি শাখার নেতারা বলছেন, রাজনৈতিক বাস্তবতায় গত ১৫ বছর তারা প্রকাশ্যে কাজ করতে পারেননি। এছাড়া ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে উঠা বৃহত্তর ছাত্র আন্দোলন সমুন্নত রাখতে তারা দলীয় পরিচয় সামনে আনেননি। কারণ ওই আন্দোলন ছিল গণমানুষের। আর যারা পরিচয় গোপন রেখে ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা মূলত ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার গড়ে উঠা ঐক্য বিনষ্ট করতে চাইছেন বলেও অভিযোগ সংগঠনটির নেতৃবৃন্দের। এ বিষয়ে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম গতকাল সোমবার এক ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম থাকবে না এটা কিভাবে সম্ভব! তিনি বলেন, ‘৩৬ জুলাই’র বৈপ্লবিক সফলতা শুধুমাত্র ছাত্রশিবিরের একক প্রচেষ্টার নয়। বরং দল, মত, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের প্রচেষ্টার ফল। সংগত কারণে এ আন্দোলনের সফলতার ক্রেডিট সবার।

জানা গেছে, ইসলামী ছাত্রশিবির মূলত বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর ছাত্র সংগঠন হিসেবে পরিচিত। ১৯৭১ সাল পর্যন্ত জামায়াতে ইসলামীর এই ছাত্রসংগঠনের নাম ছিল ‘ইসলামী ছাত্রসংঘ’। দেশ স্বাধীনের পর ১৯৭৭ সালে ছাত্রসংগঠনটি ‘বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির’ নামে নতুন করে কার্যক্রম শুরু করে। মাঝে মধ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সাময়িক ঝামেলায় পড়লেও তারা সেখানে অন্তরালে থেকে কার্যক্রম চালিয়ে গেছে। ২০০৬ সালের ১/১১’র পরিস্থিতির পর থেকে ইসলামী ছাত্র শিবিরের প্রকাশ্যে কার্যক্রম অনেকটাই স্থিমিত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ২০০৯ সালে সরকার গঠনের পর শিবিরের প্রকাশ্য কার্যক্রম বন্ধের উপক্রম হয়। ক্ষমতায় এসে আওয়ামী লীগ যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে জামায়াতে ইসলামীর নেতাদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর পর থেকে ছাত্র শিবির আরো চাপে পড়ে।

গত ১৫ বছর বিগত সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের একচ্ছত্র আধিপত্যে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলোতে ছাত্রশিবিরকে মাঠে নামতে দেয়া হয়নি। এমনকি শিবির ট্যাগ দিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের অত্যাচার ছিল নিত্যনৈমিত্যিক ব্যাপার। একারণেই ওই সময়ে ‘নিরব’ এবং ‘কৌশলী ভূমিকায়’ ছাত্রশিবির কাজ করেছে। মেধাবী নেতৃত্ব তৈরিতেও মনোযোগী ছিল এই সংগঠনটি।

এছাড়া সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ (এইচ এম) এরশাদের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা ৯০’র আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তখনকার শাসক দল জাতীয় পার্টির ছাত্র সংগঠন জাতীয় ছাত্র সমাজ এবং ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ করেছিল স্বৈরাচারবিরোধী ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ। সেই থেকে ঢাবি ক্যাম্পাসে প্রকাশ্য রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা থেকে বিরত ছিল ছাত্রশিবির।

এখন হঠাৎ করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ইসলামী ছাত্রশিবির। বিশেষ করে ‘ছাত্র-জনতার আন্দোলনে’ শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের একজন সমন্বয়কারী ছাত্রশিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি হিসেবে প্রকাশ পাওয়ার পর থেকে সংগঠনটি আলোচনায় এসেছে। গত শনিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস শুরুর আগের দিন ১০ ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে বৈঠক করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক নিয়াজ আহমেদ খানসহ প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ সময় শিবিরের পক্ষ থেকে বৈঠকে যোগ দেন সভাপতি সাদিক কায়েম ও সাহিত্য সম্পাদক রেজাউল করিম শাকিল। পরে বের হয়ে গণমাধ্যমের সামনে কথা বলেন সাদিক। এরপর ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে নিজেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি হিসেবে পরিচয় দেন সাদিক। তিনি ঢাবিতে ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। তিনি সম্প্রতি রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেছেন। গত পাঁচবছর তিনি ঢাবি হলে গোপনে চালিয়েছেন সাংগঠনিক কার্যক্রমও। কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরুর আগে খাগড়াছড়ির বাসিন্দা কায়েমকে ক্যাম্পাসে অনেকেই চিনতেন পার্বত্য চট্টগ্রাম ছাত্র সংসদের সাবেক সভাপতি এবং হিল সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রনেতা হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। সেই পরিচয়ে শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে একজন সামনের সারির একজন সমন্বয়কারী হিসেবে দাঁড়ানোর সুযোগ পান।

সেই সাদিক কায়েমের রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশের পর ফেসবুক জুড়ে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। তাকে সাম্প্রতিক আন্দোলনে সক্রিয় অংশগ্রহণকারী হিসেবে জানতেন সবাই। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পতনের পর বঙ্গভবনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানেও গিয়েছিলেন সাদিক কায়েম। সাদিক কায়েমের প্রকাশ্যে আসার পর ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সেক্রেটারি এস এম ফরহাদের পরিচয় সামনে আসে। ফরহাদ সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী। তার রাজনৈতিক পরিচয় প্রকাশ্যে আসার পর এ নিয়ে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে। কারণ, ফরহাদ ছাত্রলীগেরও পদধারী ছিলেন বলে গুঞ্জন রটে। তিনিও নেতৃত্বে ছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেরও।

তবে, ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি বা কার্যক্রমের সঙ্গে নিজের কোনোরকম সম্পৃক্ততা থাকার বিষয়টি সরাসরি অস্বীকার করেছেন ঢাবি শিবির সেক্রেটারি এস এম ফরহাদ। গতকাল সোমবার ভোরের আকাশকে তিনি বলেছেন, ঢাবির সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট শাখা ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচি ও কার্যক্রমের সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। তিনি বলেন, ডিপার্টমেন্টের কমিটিতে কাকে রাখা হবে সেটা সংশ্লিষ্ট ছাত্রলীগের সিদ্ধান্ত। সেখানে আমাকে কেন জড়ানো হচ্ছে, যেখানে আমি ডিপার্টমেন্ট ছাত্রলীগের কোনো কর্মসূচির সঙ্গে কোনোভাবেই সম্পৃক্ত নই। এ বিষয়টিকে আমরা ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের স্পিরিট ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র মনে করি। ছাত্রলীগ নেতাদের ফুল দেয়ার ছবি ভাইরাল প্রসঙ্গে তিনি জানান, ডিবেটিং ক্লাবের সভাপতি ও ডিপার্টমেন্ট ডিবেটিং ক্লাবের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করার সময় বিভিন্ন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের উপস্থিত থাকার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে।

তিনি বলেন, এস এম ফরহাদ নামে ছাত্রলীগের এক নেতার নামের সঙ্গে আমার নামে,ও মিল থাকায় ওই নেতা হিসেবে আমার নাম চালানো হচ্ছে। তবে ছাত্রলীগ নেতা এস এম ফরহাদ নিজেই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয়ায় বিষয়টি এখন পরিষ্কার। ছাত্রলীগের সেই কমিটির এস এম ফরহাদ নিজে ফেসবুকে বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন। ছাত্রলীগ হল শাখার নেতা এস এম ফরহাদের শিক্ষাবর্ষ ২০১৬-১৭। বিভাগ ফারসি ভাষা ও সাহিত্য। বাড়ি সাতক্ষীরা। ঢাবি শিবিরের সেক্রেটারিকে তিনি উইশ করে লিখেছেন, ‘ফরহাদ আমার হলের ছোট ভাই। অমায়িক ছেলে। হল ডিবেটিং ক্লাবের খুবই কাছের জুনিয়র। ছোট ভাইয়ের জন্য অনিঃশেষ শুভকামনা।’

ছাত্রশিবিরের নেতাদের নাম প্রকাশ্যে আসার পর বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং অন্যান্য ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। অনেকেই প্রশ্ন তাহলে পরিচয় গোপন রেখে কেন তাহলে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শিবিরের অনেকেই নেতৃত্ব দিয়েছেন। মূলত শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে গড়ে ওঠা আন্দোলন সফল করতেই নিজেদের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রাখে ইসলামী ছাত্রশিবির, বিএনপির ছাত্র সংগঠন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের ছাত্রসংগঠনগুলো। তার প্রমাণ, ছাত্র ফেডারেশেনের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব উমামা ফাতেমা সম্প্রতি তার রাজনৈতিক পরিচয় সামনে এনেেেছন। তিনি ওই সংগঠন থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। এই উমামাও শেখ হাসিনা বিরোধী গড়ে ওঠা ছাত্র-জনতার আন্দোলনের একজন অন্যতম সমন্বয়ক ছিলেন। ওই আন্দোলন দমনে শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের শিবির হিসেবে ট্যাগ দেয়ার চেষ্টা করেছিলেন। আর একারণেই আন্দোলনের সমন্বয়ক সাদিক কামেয়ের রাজনৈতিক পরিচয় পরিচয় সামনে আসায় আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সাদিকের মতবিনিময় করা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন মহলে নানান আলোচনা-সমালোচনা ও পক্ষে বিপক্ষে প্রশ্ন করতে দেখা যাচ্ছে। যদিও ছাত্র শিবির বাদেও কয়েকটি বাম সংগঠনের নেতারা সমন্বয়ক হলেও সেটি নিয়ে তেমন কারো প্রশ্ন তুলতে দেখা যায়নি। যে কারণে টিভি টক শোসহ ফেসবুক ও বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে শিবিরকে নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপনকারীদের নিরপেক্ষতা নিয়েও অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন।

বিষয়টি নিয়ে আবু সাদিক কায়েম ভোরের আকাশকে বলেছেন, পরিস্থিতির কারণে এতোদিন নিজের রাজনৈতিক পরিচয় গোপন রাখতে বাধ্য হয়েছেন তিনি। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ও তার ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের তাণ্ডবে কেউ ক্যাম্পাকে স্বাভাবিকভাবে ছাত্র রাজনীতি করতে পারেনি। এমনকি রাজনীতি করা তো দূরের কথা সবসময় সাধারণ ছাত্ররা থাকতেন আতঙ্কে। ছাত্র আন্দোলন কোন দলীয় প্লাটফর্ম ছিল না বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এটি ছিল গণমানুষের আন্দোলন।

ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক সাদেক আবদুল্লাহ ভোরের আকাশকে বলেন, গত ১৫ বছর দেশের পরিবেশ কেমন ছিল সেটা আগে ভাবতে হবে। দলীয় পরিচয় ব্যবহার করে কেউ স্বাভাবিক জীবনে থাকতে পেরেছেন কিনা সে প্রশ্নও তোলেন তিনি।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সব শ্রেণী পেশার মানুষের অংশগ্রহণ ছিল। সেখানে কারো দলীয় পরিচয়ের চেয়ে ‘স্বৈরাচার’ শেখ হাসিনাকে মুক্ত করাটা ছিল প্রধান লক্ষ্য। সেই টার্গেটে আমরা কাজ করেছি। তিনি বলেন, কোনো ক্যাম্পাসেই শিবিরের কার্যক্রম বন্ধ ছিল না। তবে কোথাও প্রকাশ্যে আবার কোথাও নেপথ্যে থেকে কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এখনকার পরিবেশ পরিস্থিতিতে আমরা যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত নিয়ে চলেছি।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version