-->

বিশ্ব তথ্য অধিকার দিবস আজ

হেলাল সাজওয়াল
বিশ্ব তথ্য অধিকার দিবস আজ

বিশ্ব তথ্য অধিকার দিবস আজ। ‘কতৃপক্ষের সকল দ্বার; খুলে দিবে তথ্য অধিকার’ - এই প্রতিপাদ্য সামনে রেখে আজ শনিবার পালিত হচ্ছে দিবসটি। ২০১৫ সালের ১৭ নভেম্বর ইউনেস্কোর নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছরের ২৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস বিশ্বজুড়ে পালিত হয়। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশেও দিবসটি পালিত হয়ে থাকে।

এবারের তথ্য অধিকার দিবস উপলক্ষে তথ্য কমিশন বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মূলধারায় তথ্য অধিকারের সংযুক্তি এবং সরকারি খাতের অংশগ্রহন নিশ্চিতকরণ’ এ গুরুত্ব দিচ্ছে। অবাধ তথ্যপ্রবাহ না থাকলে জনগণের মৌলিক মানবাধিকার আদায় সম্ভব নয়। ব্যক্তির অধিকার আদায়ে তথ্য অধিকার দিবসের গুরুত্ব অনেক। বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে চিন্তা, বিবেক ও বাক-স্বাধীনতা নাগরিকের অন্যতম মৌলিক অধিকার হিসেবে উল্লেখ আছে।

তথ্য কমিশন বাংলাদেশ দিবসটি পালনের জন্য বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সংবাদপত্রে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, সংবাদ সম্মেলন এবং টেলিভিশন ও বেতারে টক শো আয়োজন। আজ সকালে তথ্য কমিশন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে আলোচনা অনুষ্ঠান। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন তথ্যউপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম।

২০০৮ সালের ২০ অক্টোবর ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’ জারি করা হয়। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচিত সরকার ‘তথ্য অধিকার অধ্যাদেশ, ২০০৮’-কে আইনে পরিণত করার উদ্যোগ নেয় এবং নবম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশনে যে কয়টি অধ্যাদেশ আইনে পরিণত হয় তার মধ্যে ‘তথ্য অধিকার আইন-২০০৯’ অন্যতম। ওই অধিবেশনে (২৯ মার্চ, ২০০৯) তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ পাস হয়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ৫ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে এ আইনটিতে সদয় সম্মতি জ্ঞাপন করেন এবং ৬ এপ্রিল, ২০০৯ তারিখে তথ্য অধিকার আইন, ২০০৯ বাংলাদেশ গেজেটে প্রকাশিত হয়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের জনগণের অধিকার বাস্তবায়ন, তাদের সামাজিক ক্ষমতায়নের দ্বারা সরকারি-বেসরকারি সবস্তরের প্রতিষ্ঠানের কাজে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা বৃদ্ধি করে অবাধ তথ্যপ্রবাহ সৃষ্টি করা যায়। গণতন্ত্রকে অর্থবহ করতে তথ্যপ্রাপ্তির সুযোগ সৃষ্টি করাও আবশ্যক। তথ্য অধিকার আইন বাস্তবায়নের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট সরকারি মহলের হলেও সমাজের অন্যান্য অংশ যেমন-বেসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, সচেতন-সুশীল সমাজ, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক-অনলাইন সংবাদমাধ্যম, জনপ্রতিনিধি, রাজনীতিবিদ, এনজিও কর্তাব্যক্তি, আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদিচ্ছা জরুরি। দেশের একজন নাগরিক হিসেবে অধিকার সচেতনতা, তার মুক্তচিন্তা, তার ভাবনা তথ্য অধিকার প্রাপ্তিতে গুরুত্বপূর্ণ। সর্বোপরি যার যার অবস্থান থেকে সর্বস্তরের জনগণের ব্যাপক অংশগ্রহণ জরুরি। সঠিক চিন্তা ও চেতনার সম্মিলনে আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হোক জনগণের তথ্য প্রাপ্তি সহজতর করা এবং সবক্ষেত্রে সঠিক তথ্য প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নিশ্চিত করা। নাগরিক সচেতনতা আর সরকারের সদিচ্ছাই পারে তথ্য অধিকারকে সার্বজনীনতা দিতে। আন্তর্জাতিক তথ্য অধিকার দিবস আমাদের মেজাজে যোগ করুক প্রকৃত মানুষ হয়ে বেড়ে ওঠার সেই মানসিকতা, যে মানসিকতা স্বাধীনতাযুদ্ধে এবং সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ছাত্র-জনতার বিপ্লবে আমাদের জুগিয়েছে মৃত্যুঞ্জয়ী হওয়ার শাশ্বত প্রেরণা।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version