-->
শিরোনাম

বাংলাদেশের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহযোগিতা জরুরি

এম সাইফুল ইসলাম
বাংলাদেশের নিরাপত্তায় যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহযোগিতা জরুরি
সাংবাদিক মুশফিকুল ফজল আনসারী

দেশ-বিদেশে যার রয়েছে ব্যাপক পরিচিতি। বিশেষ করে গত এক দশকের বেশি সময় ধরে জাতিসংঘ ও হোয়াইট হাউসে স্থায়ী সংবাদদাতা হিসেবে কাজের সুবাদে প্রেস ব্রিফিংয়ে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন ও নির্যাতনের তথ্য তুলে ধরে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের মুক্ত সাংবাদিকতা ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা যখন সংকুচিত তখন তিনি বিশ্বব্যাপী বাংলাদেশের গণতন্ত্র এবং মুক্তিকামী মানুষের কথা তুলে ধরে তাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় নিজের নাম লিখিয়েছেন। এক দশকের বেশি সময় নির্বাসিত মুশফিকুল ফজল আনসারী কয়েকদিনের জন্য সম্প্রতি মাতৃভূমি বাংলাদেশে এসেছিলেন। সে সময়ে দৈনিক ভোরের আকাশকে দেওয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা বিষয়ে। সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন ভোরের আকাশ-এর সিনিয়র রিপোর্টার এম সাইফুল ইসলাম।

ভোরের আকাশ : মুশফিকুল ফজল আনসারী আপনাকে স্বাগতম।

মুশফিকুল ফজল আনসারী : ধন্যবাদ আপনাকেও।

ভোরের আকাশ : দীর্ঘদিন পর আপনি যখন দেশে এসেছেন তখন ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতনের পর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশ চালাচ্ছে। আপনার অনুভূতি কি?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : দীর্ঘদিন পর দেশের মাটিতে এসে স্বাশ নিতে পারছি, এর চেয়ে ভালো লাগার আর কি হতে পারে? স্বভাবত কারণেই খুবই ভালো লাগছে। কারণ, আওয়ামী লীগের পতন না হলে তো দেশেই ফিরতে পারতাম না। শুধু আমি কেন, দীর্ঘদিন স্বৈরাচারের যাঁতাকলে পিষ্ট হওয়ার পর দেশের মানুষ এখন মুক্ত বাতাসে শ্বাস নিতে পারছে। এখন মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন। বুক ফুলিয়ে কথা বলতে পারছেন। মানুষ গণতান্ত্রিক স্বাদ পেতে শুরু করেছেন। মৌলিক অধিকার ফিরে পেতে শুরু করেছেন। যার পুরো ক্রেডিট আমি দেশের মুক্তিকামী ছাত্র-জনতাকে দিতে চাই। তাদের আত্মত্যাগকে আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করি।

ভোরের আকাশ : অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে আপনি কেমন দেখছেন?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : আপনারা জানেন, এই সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস একজন নোবেল বিজয়ী। ভাবতে ভালো লাগে বাংলাদেশের সরকার প্রধান নোবেল বিজয়ী। তিনি যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশের সর্বোচ্চ অ্যাওয়ার্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি। সারাবিশ্বে তিনি অত্যন্ত পরিচিত মুখ। এছাড়া তার সরকারের যারা যোগ দিয়েছেন তারা সংশ্লিষ্ট সেক্টরের সর্বোচ্চ দক্ষ ও জানাশোনা। সুতরাং এই সরকার কার্যত একটি সংস্কারের মাধ্যমে দেশকে গণতান্ত্রিক সিড়িতে উঠাতে কাজ করবে বলে আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি।

ভোরের আকাশ : সংস্কারের প্রাথমিক ধাপ হিসেবে রাষ্ট্রীয় ৬ প্রতিষ্ঠান সংস্কারে গঠিত কমিশনকে আপনি কিভাবে দেখছেন?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : বাংলাদেশের বিগত স্বৈরাচার সরকার দেশের সব গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান আসলেই ধ্বংস করে দিয়েছে। প্রকৃত গণতান্ত্রিক স্বাদ পেতে হলে আসলে এগুলোর আমূল সংস্কার প্রয়োজন। সংস্কারের মাধ্যমেই দেশ একটি গণতান্ত্রিক সিঁড়িতে পৌঁছাবে। যাদের প্রধান করে সংস্কার কমিশন গঠন করা হয়েছে তারা অত্যন্ত দক্ষ মানুষ। তারা দীর্ঘ সময় থেকেই দেশের মানুষের পক্ষে কথা বলে আসছেন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান একটি চমৎকার কাজ করেছেন কমিশন গঠন করে। আমি আশাবাদী সকল কিছু বিবেচনায় এনে কমিশন প্রধানরা একটি ভালো সংস্কারের দিকে দেশকে নিয়ে যাবে।

ভোরের আকাশ : বিগত সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিচার কোন প্রক্রিয়ায় হওয়া উচিত বলে আপনি মনে করেন?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : আমি মনে করি এগুলো আন্তর্জাতিক আদালতে হওয়া উচিত। কিন্তু এখানে কিছু ইডস অ্যান্ড বার্টস আছে। যে অপরাধী তার বিচার করতে হবে। কে খুশি হলো এবং কে নারাজ হলো এটা কোনো বিষয় না। ঘটনা হলো যার বিচার হচ্ছে সে অন্যায়কারী কিনা, তার ন্যায়বিচার হচ্ছে কিনা, জাস্টিস এনসিওর করতে হবে। এটা দিনের মতন পরিষ্কার, শেখ হাসিনা শুট অ্যান্ড সাইট অর্ডার দিয়েছে। দেখামাত্র গুলির নির্দেশ দিয়েছে। মানুষকে খুন করেছে। সে নিজেই স্টেটমেন্ট দিয়েছে কিভাবে শায়েস্তা করতে হয় আমি জানি। এগুলোই তার বিচারের জন্য যথেষ্ট। তার অফিসাররাও জানে কিভাবে তাদের ব্যবহার করেছে গুলি করার জন্য, ছাত্র-জনতাকে দমন করার জন্য। সুতরাং এই সাপসেনসিয়াল এভিডেন্সিয়াল ভিত্তিতে তাকে বিচারের মুখোমুখি করা এটাতো স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটা করতেই হবে। সে সাবেক প্রধানমন্ত্রী হোক আর সাধারণ নাগরিক হোক তাকে তো বিচারের আয়ত্তে আনতেই হবে।

ভোরের আকাশ : আপনার সাংবাদিকতা যুক্তরাষ্ট্রের বাংলাদেশ নীতিতে কোনো পরিবর্তন বা প্রভাব ফেলেছে কিনা?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : প্রথমত হলো যুক্তরাষ্ট্র তার নীতির ক্ষেত্রে নিজেদের পলিসি তারা গ্রহণ করে। কোনো সাংবাদিকের কারণে তাদের নীতি পরিবর্তন হয় না। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের যেটা হচ্ছে অ্যাটেনশন বা দৃষ্টি আকর্ষণ এবং নীতিগুলোকে সামনে আগানোর ক্ষেত্রে, ধরেন আপনি আমাকে প্রশ্ন করছেন বলে আমি আমার ইন্টারভিউ দিচ্ছি। সম্ভবত, এই ইন্টারভিউ এর কারণে আমার কিছু প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবে আমি যাদের প্রশ্ন করছি, তাদেরও প্রস্তুতি নিতে হয়েছে। প্রস্তুতি নিতে হলে বিষয়গুলো সামনে চলে আসে। তখন একটা কাজ হয়। এই বিষয়গুলো একটা প্রভাব রাখে যে, এটা হলো জবাবদিহিতার ক্ষেত্র। সব দেশেরই সাংবাদিকরা জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে দেশে এবং দেশের বাইরে। যুক্তরাষ্ট্রেরও জবাবদিহিতার ব্যাপার আছে। বরং যুক্তরাষ্ট্র এখন একটা বৃহৎ রাষ্ট্র। তাদের জবাবদিহিতা অনেক বেশি। কারণ, তারা সুপার পাওয়ার হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। এটা নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে। কিন্তু সারা বিশ্বের গণতন্ত্র, মানবাধিকার অনেক অংশে তারা দেখভাল করছে। অন্যান্য বিষয়ে তাদের ভূমিকা আছে। সে জন্য তাদের জবাবদিহিতার ব্যাপার আছে। যেমন জাতিসংঘ একটি ইন্টারন্যাশনাল গ্লোবাল প্ল্যাটফর্ম। তাদেরও জবাবদিহিতা ব্যাপার আছে। শুধু বাংলাদেশ নিয়ে নয়, বিভিন্ন বিষয়ে সাংবাদিকরা আপনারা দেখবেন তাদেরকে জবাবদিহিতায় আনতে প্রশ্ন করে। এই প্রশ্নগুলো করার ফলে যেটা হয় তারা যে উত্তরগুলো দেয় তা যেন একটা হোম ওয়ার্ক হয়। এই হোম ওয়ার্কটা যেকোনো দেশের ডেমোক্র্যাসি, হিউম্যান রাইটস, রুল অব ল, ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশনগুলোতে কাজ হয়।

ভোরের আকাশ : প্রচলিত আছে যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভারতীয় চোখে দেখে। আপনার কি তাই মনে হয়?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : আমিও তাদেরকে একই প্রশ্ন করেছি আপনি যে প্রশ্নটা আমাকে করেছেন। সেই প্রশ্নটি আমি যুক্তরাষ্ট্রের পলিসি মেকারদের করি তোমরা কি আমাদের সরাসরি দেখো কিনা। তবে, একটা বিষয় হল ইন্দো-প্যাসেফিক স্টাট্রেজি নির্ধারণ করে সেখানে লিডারশিপ তারা ভারতের ওপর দিয়ে রেখেছে। কারণ, এখানে চাইনিজ ব্যাপার আছে। মানে জিও পলিটিক্যাল নিয়ে একটা ইস্যুজ আছে। সেটা নিয়ে একটা বিস্তার আলোচনা। তবে যেটা হলো, তারা বাংলাদেশকে যেটি বলেছেন, যেটি আমাদের প্রায়ই আশ্বস্ত করে প্রাইভেট এবং পাবলিক লেভেলে। তারা এনগেজ হয়েছেন বলেই তারা অনেক ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বিষয়ে নীতির পরিবর্তন আনছেন। ভিসা নীতি পরিবর্তন করেছেন। তারা র‌্যাবের ওপর স্যাংশন দিয়েছেন। তারা বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক পরিবর্তনের জন্য অনেক এনগেজ হয়েছেন। অনেক পয়সা খরচ করেছেন। বাজেট দিয়েছেন ইস্টার্ন ট্রেনিং ডেমোক্র্যাসি অ্যান্ড হিউম্যান রাইট ইনস্টিটিউশন বিল্ডআপ করতে। এন্টি করাপশন, গণতন্ত্রের স্বার্থে দেশের মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠাতার ক্ষেত্রে কাজ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রে নীতি নির্ধারকরা।

ভোরের আকাশ : আপনি ইন্দো প্যাসিফিকের কথা বলেছেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইন্দো প্যাসিফিকের কৌশলগত জায়গায় বাংলাদেশের গুরুত্ব কতটুকু বলে আপনি মনে করেন?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : বাংলাদেশের গুরুত্ব আছে বলেই তারা অনেক বেশি এনগেজ হয়েছেন। এখন এনগেজমেন্ট অনেক বেশি। সেই এনগেজমেন্ট যাতে সরাসরি হয়, ঢাকা-ওয়াশিংটন একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে তা নিয়ে বিস্তর কাজ রয়েছে। বাংলাদেশকে তারা একটা পার্টনারশিপের আওতায় নিয়ে নিয়েছে। অন অব দি বাংলাদেশকে যুক্তরাষ্ট্র পার্টনার হিসেবে নিয়ে নিয়েছে। অল অব দি লার্জেস্ট ডেভেলপমেন্ট পার্টনার। অর্থনৈতিক অংশীদার, সামাজিক, পলিটিক্যাল নানান অংশীদারিত্ব যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রয়েছে। সুতরাং আমার দেশের গুরুত্ব নানা কারণে। বাংলাদেশের ট্রেড ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্র হচ্ছে লার্জেস সিঙ্গেল ডেস্টিনেশন। আমাদের জাতীয় যে টোয়েন্টি পার্সেন্ট এফডিআই বা ফরেন ডাইরেক্ট ইন ইনভেসমেন্ট যেটা ২০% এর মত। আমাদের টোটাল এক্সপোর্টের ১৮% যুক্তরাষ্ট্রের। নানা প্রতিষ্ঠান যেমন আইএমএফ, ওয়ার্ড ব্যাংক তাদের যে ইনভলমেন্ট রয়েছে এখানে। সুতরাং নানা কারণে বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্ব আছে এবং এই গুরুত্বটা আরো বেড়েছে এখন।

ভোরের আকাশ : বর্তমান প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশেল নিরাপত্তার জন্য সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী হওয়ার প্রয়োজন আছে কীনা? থাকলে বৃহৎ কোনা শক্তির কাছ থেকে সামরিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা দেখছেন কিনা? ডবশেষ কওে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সামরিক চুক্তির প্রয়োজন আছে কীনা?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তি তো আছেই। এ চুক্তি দীর্ঘকাল ধরেই আছে। আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্র না চাইলেও বাংলাদেশের সিকিউরিটির স্বার্থে তাদের সামরিক সহযোগিতা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, আমাদের এখানে নানামুখী থ্রেট আছে। জঙ্গিবাদের উত্থান একটা বিশেষ জায়গা থেকে কিন্তু ইনক্রেস করা হয়। আপনি হঠাৎ দেখবেন জঙ্গিবাদের উত্থান হচ্ছে আবার হঠাৎ দেখবেন নেই। তো এগুলো কোথাও না কোথাও থেকে ঢুকিয়ে দেওয়া হয় অথবা ইনক্রেস করা হয়। বাংলাদেশের একটা স্থায়ী নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এনগেজমেন্টে আরও অগ্রসর হওয়া উচিত। আরো ওয়ান স্টেপে যাওয়া উচিত।

ভোরের আকাশ : আপনার কি মনে হয় বাংলাদেশ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের বিশেষ সুবিধা নিতে পারবে?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : আপনি দেখবেন সেদিনও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি দল এসেছে, হাই লেভেলের ডেলিকেশন দল। ২০০ মিলিয়নের মত এসিস্ট্যান্ট তারা সাইন করেছে। আরো সহযোগিতার ক্ষেত্রেও থাকবে। নানা ধরনের এনগেজমেন্ট বাড়বে। তারা একটি এস্টাবিলিটি চায়। সেটি হলে এখানে বিনিয়োগও বাড়বে। অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাড়বে। সেটা খুব জরুরি।

ভোরের আকাশ : বাংলাদেশের ইসলামপন্থি রাজনীতি দলের উত্থান নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দৃষ্টিভঙ্গি কিভাবে দেখেন আপনি?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : রাজনীতি এবং ইসলাম এ দুটি বিষয়ে একটা ধারণা তো আমাদের আছে। কারণ, আমি নিজে একজন প্রাক্টিসিং মুসলিম। আমরা বিভিন্ন সময় দেখেছি ধর্ম তথা ইসলামকে ব্যবহার করে সবচেয়ে বেশি রাজনীতি করেছেন শেখ হাসিনা। যখন যে সময় দরকার তখন সে পট্টি বেঁধেছেন, হাতে তজবি নিয়েছেন। যখন দরকার নেই তখন ছুড়ে ফেলেছে। যখন দরকার তখন সে আল্লামা শফির সঙ্গে চুক্তি করেছেন। তারপর সে মদিনা সনদ এর ওপর দেশ চালাবে বলেও বিভিন্ন সময়ে বলেছে। কিন্তু বাস্তবে দেখেছি যদিও তিনি ভিতরে ভিতরে একটা সেকুলার ভাব প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা ও জঙ্গি কার্ড খেলেছেন। এটা নিয়ে নিউ ইয়র্ক টাইমস কলাম লিখেছে। শেখ হাসিনা কিভাবে বিদেশিদের বোঝানোর চেষ্টা করেছে যে আমরা থাকলে জঙ্গিবাদের উত্থান হবে না তা তুলে ধরা চেষ্টা করা হয়েছে। কিন্তু এটাও যে তার একটা অভিনয় তা সারা দুনিয়া জানে। রিলিজিয়াস পয়েন্ট অফ ভিউ থেকে এটার কোনো স্থানই নেই। ইন দা নেম অব ইসলাম জঙ্গিবাদের কোনো স্থান নেই। পৃথিবী কোনো জায়গায় ঠাঁই নেই। মানে যুক্তরাষ্ট্র খুব এনগেজ হয়। এসব বিষয় তারা বোঝার চেষ্টা করে। নিজেরা বিষয়টা কতটুকু তারা ডেমোক্র্যাট, কতটুকু তারা মডারেট কতটুকু তারা প্র্যাকটিস করছে এসব বিষয়ের ওপর।

ভোরের আকাশ : আরাকানের যে পরিস্থিতি তাতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের কি ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে বলে আপনি মনে করেন?

মুশফিকুল ফজল আনসারী : রোহিঙ্গাদের ক্ষেত্রে প্রথমত সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন চায় তারা। কারণ তাদেরকে যেভাবে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে তাদের জীবন যেখানে হুমকির মুখে। তাদের জীবনহানি হয়েছে। তারা এখানে আশ্রিত হয়েছে। তো আবার তাদের হুমকির মুখে ফেলা যায় না যতক্ষণ না পর্যন্ত যতক্ষণ না তাদের সেফটি অ্যান্ড সিকিউরিটি ইনশিউর না হবে। জাতিসংঘ এটা বলে যে একটা পরিবেশ তৈরি করা একটা ডায়ালগে যাওয়া। কিন্তু আমরা বিগত সরকারের আমলে দেখিনি যে তারা মিনিংফুল কোনো ডায়লগে গেছে। তাদের প্রত্যাবর্তনটা নিরাপদ হতে হবে। আপনি তাদের তো আবার গর্তের ভিতর ফেলে দিতে পারেন না। তারাও তো মানুষ। সুতরাং এ বিষয়টাতে আমার মনে হয় যুক্তরাষ্ট্র প্রত্যাবর্তনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট কনসার্ন রয়েছে। নিরাপদ তাদের প্রত্যাবর্তন না হলে যুক্তরাষ্ট্র বলেন, জাতিসংঘ বলেন বা ওয়েস্টার্ন মানবতাবাদী রাষ্ট্র বলেন কেউ এটা সমর্থন করবে না।

ভোরের আকাশ : ব্যস্ততার মাঝেও সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

ভোরের আকাশ/ সু

মন্তব্য

Beta version