-->
শিরোনাম

উত্তরাঞ্চলে ২৩৬১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

হেলাল সাজওয়াল
উত্তরাঞ্চলে ২৩৬১ হেক্টর
জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

চলমান দ্বিতীয় দফা বন্যায় উত্তরাঞ্চলে ৮টি জেলায় প্রায় ২ হাজার ৩৬১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতি হয়েছে। সবচে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছে রোপা আমন। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, নাটোর, নওগাঁ ও সিরাজঞ্জে ৯৬ লাখ ৯ হাজার ১৬৭ হেক্টর জমিতে রোপা আমনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ হাজার ৬৫০ হেক্টর। এছাড়া শাক-সবজি, পেঁয়াজ, কলাবাগান, হলুদ, পেঁপে, মাসকলাই ও মরিচ ক্ষেত ক্ষতির মুখে পড়েছে। ২১ হাজার ৭০২ হেক্টর শাক-সবজির মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ৩৮৩ হেক্টর। ১১৪ হেক্টর গ্রীষ্মকালীন পেঁয়াজের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ১০ হেক্টর। ৯৭ হেক্টর জমির মরিচ ক্ষেতের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ১৫ হেক্টর। ৩ হাজার ৯৪৬ হেক্টর জমির মাসকলাইয়ের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ২৭৪ হেক্টরের। ১ হাজার ৭৭৫ হেক্টর কলা বাগানের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ১৫ হেক্টরের। ১ হাজার ৬৪৬ হেক্টর হলুদ ক্ষেতের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ৭ হেক্টরের। ১৬৯ হেক্টর পেঁপে ক্ষেতের মধ্যে ক্ষতি হয়েছে ৭ হেক্টরের।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সরেজমিন উইং এর উপ-পরিচালক (মনিটরিং) ড. মো. আবু জাফর আল মনসুর বলেন, টানা বর্ষা, পাহাড়ি ঢল ও উজান থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্টি হওয়া বন্যায় ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৩৬১ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষতির পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। পানি নেমে যাওয়ার পরে ক্ষয়ক্ষতির চূড়ান্ত হিসাব পাওয়া যাবে। তিনি বলেন, কিছু আমন ধান আছে; যা দেরিতে চাষ করা যায়। বন্যার পর সেগুলো চাষ করার চিন্তা-ভাবনা আছে। বিআর ২২ ও বিআর ২৩ জাতের ধান দেরিতে রোপণ করলেও অল্প দিনে ফলন পাওয়া যায়।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য মতে, গত ১৬ থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত বৃষ্টি ও বন্যায় মোট এক লাখ ৯৪ হাজার ৭৫২ হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসলের প্রাথমিক ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করা হয়েছে। আক্রান্ত ২৩টি জেলায় কৃষি অঞ্চলের মাঠে দণ্ডায়মান মোট ফসলি জমির পরিমাণ ছিল ১৩ লাখ ৬৫ হাজার ৮০০ হেক্টর।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কৃষকদের জন্য বন্যা-পরবর্তী সময়ে উঁচু এলাকায় আপৎকালীন নাবী জাতের রোপা আমন বীজতলা তৈরি, ভাসমান বীজতলা তৈরি, স্থানীয় জাতের পরিবর্তে উফশী জাত আবাদের উদ্যোগ নেবে। এ ছাড়া স্বল্পমেয়াদি রোপা আমন ধানের (ব্রি ধান-৫৬, ৫৭, ৭৫, ৮৭) আবাদ, বন্যা সহনশীল জাত ব্রি ধান-৫১, ৫২, ৭৯ জাতের আবাদ বৃদ্ধি, ভাসমান বেডে শাক-সবজি আবাদের ব্যবস্থা করা হবে। বস্তায় লতা ও মসলা (মরিচ, আদা) জাতীয় শস্যের আবাদ, নাবী জাতের রোপা আমন, বিআর-২২, ২৩ এবং স্থানীয় গাইঞ্জা, আবছায়া, ডাবল ট্রান্সপ্লান্টিং পদ্ধতিতে রোপা আমন চাষ বাড়ানো হবে।

ধানের অঙ্কুরিত বীজ সরাসরি বপন করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া চলমান কৃষি প্রণোদনা ও পুনর্বাসন কর্মসূচি জোরদার করা হবে। আগাম জাতের শীতকালীন সবজি উৎপাদনের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণ করা হবে।

পানি নেমে গেলেই পুরোপুরি ক্ষতি নির্ধারণ করে কৃষকের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে। এ ছাড়া উপকরণ সহায়তা দেওয়া হবে। তবে এখনো বন্যাকবলিত সব উপজেলার তথ্য চূড়ান্ত করতে পারেনি তারা।

এ ব্যপারে উপ-পরিচালক (মনিটরিং) ড. মো. আবু জাফর আল মনসুর বলেন, মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা প্রতিদিন ক্ষয়ক্ষতির আপডেট সংগ্রহ করছেন। পানি সরে গেলেই ক্ষতির পূর্ণ চিত্র পাওয়া যাবে; ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে বিকল্প সব ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এজন্য হয়তো আমাদের ১০ থেকে ১২দিন সময় লেগে যাবে।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version