সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইনসহ সব সদস্য পদত্যাগ করেছেন। তবে তাদের মধ্যে দুজন সদস্য আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি। তারা আজ বুধবারের মধ্যে তা জমা দেবেন বলে পিএসসি সূত্র জানিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার চেয়ারম্যানসহ অন্য সদস্যরা পিএসসি সচিবের কাছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বরাবর পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। তবে কোন দুজন এখনো পদত্যাগপত্র জমা দেননি তাদের নাম জানা যায়নি।
পিএসসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মতিউর রহমান জানিয়েছেন, চেয়ারম্যানসহ সব সদস্যই পদত্যাগপত্র জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরের দিকে দুজন ছাড়া অন্যরা একযোগে পদত্যাগপত্র দিয়েছেন। অনুপস্থিত থাকায় দুজন সদস্যের পদত্যাগপত্র এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে জমা হয়নি।
এ বিষয়ে পিএসসি সচিব আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, গতকাল মঙ্গলবার যারা পদত্যাগপত্র জমা দেননি তারা আজকের (বুধবার) মধ্যে তা জমা দেবেন। যারা জমা দিয়েছেন তাদের পদত্যাগপত্র রাষ্ট্রপতি বরাবর পাঠানো হয়েছে।
অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইনকে পিএসসির নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দিয়ে ২০২০ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে আদেশ জারি করা হয়। ওই বছরের ২১ সেপ্টেম্বর তিনি কর্মস্থলে যোগ দেন। ২০২৫ সালের ২১ সেপ্টেম্বর তার মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সরকার পতনের পর থেকেই পিএসসি চেয়ারম্যানসহ পুরো কমিশনের পদত্যাগের দাবি ওঠে। সম্প্রতি পিএসসি সংস্কারের দাবিও জানান বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সমন্বয়কেরা। গত শনিবার পিএসসি সংস্কার করার কথা বলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক সারজিস আলম। তিনি বলেন, এ সপ্তাহের মধ্যে পিএসসি সংস্কার করে চাকরিপ্রত্যাশীদের চাকরির পরীক্ষাগুলো শুরু করতে হবে। যে তরুণ প্রজন্ম এই অভ্যুত্থানের অগ্রনায়ক তাদের প্রায়োরিটির কথা ভুলে গেলে চলবে না।
সোহরাব হোসাইন ১৯৬১ সালের নোয়াখালী জেলার চাটখিল উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন ক্যাডারের ১৯৮৪ ব্যাচের কর্মকর্তা। ২০১৫ সালের ১৪ ডিসেম্বর অবিভক্ত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে নিয়োগ পান তিনি, ২০১৯ সালের ৩০ জানুয়ারি সিনিয়র সচিব হন। এর আগে সোহরাব হোসাইন বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর ছিলেন। সোহরাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন। পদত্যাগপত্র জমা দেওয়া সদস্যরা হলেন, ফয়েজ আহম্মদ, এন সিদ্দিকা খানম, অধ্যাপক ডা. উত্তম কুমার সাহা, জাহিদুর রশিদ, অধ্যাপক ড. মুবিনা খোন্দকার, অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন, কে এম আলী আজম, মো. খলিলুর রহমান, অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক, মো. মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী, হেলালুদ্দিন আহমদ, ড. মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুম, মোহা. শফিকুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. প্রদীপ কুমার পাণ্ডে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য