-->

গরিব কী খেয়ে বাঁচবে

নিখিল মানখিন
গরিব কী খেয়ে বাঁচবে

বাজারে ফার্মের মুরগির এক ডজন বাদামি ডিম ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা ও সাদা ডিম ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এ হিসেবে প্রতি পিস বাদামি ডিমের দাম পড়ছে ১৫ টাকা থেকে ১৫ টাকা ৮৩ পয়সা করে। আর সাদা ডিমের দাম পড়ছে ১৪ টাকা ১৬ পয়সা থেকে ১৫ টাকা করে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পতিত শেখ হাসিনা সরকারের আমলে ফার্মের মুরগির এক ডজন ডিমের দাম ছিল সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা। অথচ অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে এখন ডজন প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা করে ডিমের দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের মূল্য আকাশছোঁয়া। গরিব মানুষের আমিষের চাহিদা পূরণের প্রধান উৎস ছিল এই ডিম। সেটিও এখন ক্রমেই নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। ডিমের সরবরাহ তুলনামূলক কম বলেও জানিয়েছেন বিক্রেতারা। তবে ক্রতাদের অভিযোগ বলেছেন, বাজারে পর্যাপ্ত ডিম থাকার পরও সিন্ডিকেট করে দাম বাড়ানো হচ্ছে।

পতিত শেখ হাসিনার আমলে পণ্যের মূল্য বাড়লে সিন্ডিকেটকে দায়ী করা হতো। শেখ হাসিনার বিদায়ের পর সব সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা। সর্বোচ্চ বিচারালয় থেকে মাঠ প্রশাসন সর্বত্রই পরিবতর্ন এনে ফ্যাসিবাদের দোসরদের সরিয়ে দেয়া হয়েছে। সিন্ডিকেটও পলাতক। এরপরও নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি পণ্যের দাম হু হু করে বাড়ছে। দিনমজুর, নিম্ন মধ্যবিত্ত, মধ্যবিত্ত, সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী সবাই সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে। এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠেছে, বাজারের নিয়ন্ত্রণ আসলে কার হাতে।

জানা গেছে, গত ১৬ সেপ্টেম্বর ফার্মের মুরগির ডিম এবং ব্রয়লার ও সোনালি মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকারি সংস্থা কৃষি বিপণন অধিদপ্তর। বেঁধে দেওয়া দাম অনুসারে, উৎপাদক পর্যায়ে প্রতিটি ডিমের দাম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি পর্যায়ে ১১ টাকা ১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে তা ১১ টাকা ৮৭ পয়সা হওয়ার কথা। সে হিসাবে খুচরা পর্যায়ে এক ডজন ডিমের দাম হয় ১৪২ টাকা। কিন্তু খুচরা বাজারে এখন ১৭০-১৮০ টাকায় ডিম বিক্রি হচ্ছে। ডিমের এমন উচ্চ দাম বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিম উৎপাদক ও পাইকারি ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেই তারা ডিমের ‘যৌক্তিক দাম’ নির্ধারণ করেছিল।

গতকাল সোমবার দুপুরে কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এই বাজারের কোনো দোকানে ফার্মের মুরগির বাদামি রঙের ডিম বিক্রি হচ্ছে না। শুধু একটি দোকানে কয়েকটি লাল ও দুই ডজনের মতো সাদা রঙের ডিম পাওয়া গেছে। এসব ডিমের ডজন ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা। যদিও সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতেই লাল ডিমগুলো বিক্রি হয়ে যায়। ওই দোকানের ডিম বিক্রেতা ফজুলল হক বলেন, ‘ফার্মের মুরগির যে ডিম দেখছেন, তা গতকালের। তাও কাঁঠালবাগান বাজার থেকে আনা হয়েছে। তেজগাঁও ডিমের আড়ত থেকে গত দুই দিনে কোনো ডিম কিনতে পারিনি। এর মধ্যে গত রাতে সেখানে ডিম বিক্রি বন্ধ ছিল; আর তার আগের রাতে সরবরাহ ছিল খুবই কম।’

গত ১৫ সেপ্টেম্বর প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হকের সই করা চিঠিতে উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে সোনালি ও ব্রয়লার মুরগি এবং ডিমের দাম নির্ধারণ এবং তা বাস্তবায়নের নির্দেশনা দেয়া হয়।

নির্দেশনায় বলা হয়, ডিম উৎপাদক পর্যায়ে প্রতি পিস ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারি ১১ টাকা ০১ পয়সা ও খুচরা পর্যায়ে ১১ টাকা ৮৭ পয়সা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে সব বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালক ছাড়া বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন, ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, ওয়ার্ল্ড পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ পোলট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল, বাংলাদেশ পোলট্রি খামার রক্ষা জাতীয় পরিষদ, অ্যানিমেল হেলথ কোম্পানিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, বাংলাদেশ অ্যাগ্রো ফিড ইনগ্রেডিয়েটস ইমপোর্টার্স অ্যান্ড ট্রেডিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি/সাধারণকে চিঠি পাঠানো হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ডিমের দাম নিয়ে বিপরীত অবস্থানে সরকার এবং ডিম ব্যবসায়ী সমিতি। সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে ডিম কিনতে হচ্ছে বলে দাবি ডিম ব্যবসায়ীদের। নির্ধারিত দামে বিক্রির বিষয়ে অনড় সরকার। সরকার ও ডিম ব্যবসায়ীদের এমন দর কষাকষির ফাঁদে পড়ে অসহায় দেশের মানুষ। ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে ডিমের দাম বাড়ানোর অভিযোগ দীর্ঘদিনের। গতকাল সোমবার ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকার পাইকারি বাজারের আড়তে ডিম বিক্রি বন্ধ করে দেয় ব্যবসায়ীরা। ফলে খুচরা বাজারে ডিম সংকটের তীব্রতা কয়েকগুণ বেড়ে যায়। গতকাল সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, ঢাকার পাইকারি বাজার তেজগাঁও আড়তে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। ফার্মের মুরগির ডিমের বাড়তি দামের মধ্যে বাজারে ডিমের সরবরাহে সমস্যা শুরু হয়েছে। রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও আড়তে ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। গত রোববার রাতে তেজগাঁও আড়তে ডিমের কোনো ট্রাক আসেনি। গত শনিবার রাতেও খুব কম পরিমাণে ডিম বিক্রি করেছেন আড়তের বিক্রেতারা।

তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা বলছেন, সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে তাদের ডিম কিনতে হচ্ছে। কিন্তু কেনা দামের ভিত্তিতে তা বিক্রি করতে পারছেন না। সরকার নির্ধারিত দাম নিশ্চিত করতে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে। তাই ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযান ও জরিমানার ভয়ে তারা মুরগির ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। ফলে গত রোববার রাতে তেজগাঁওয়ে ডিমের কোনো গাড়ি আসেনি; কোনো ডিমও বিক্রি হয়নি।

রাজধানীতে ডিম বিক্রির অন্যতম বড় পাইকারি বাজার হচ্ছে তেজগাঁও আড়ত। দেশের বিভিন্ন স্থানের খামার থেকে ট্রাকে করে এখানে ডিম আসে। এরপর তেজগাঁও থেকে ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজার ও পাড়া-মহল্লায় ডিম সরবরাহ হয়। ফলে তেজগাঁওয়ে ডিম বিক্রি বন্ধ রাখলে সাধারণত খুচরা বাজারে তার প্রভাব পড়ে।

অভিযানের ভয়ে বিক্রি বন্ধকৃষি বিপণন অধিদপ্তর জানিয়েছে, ডিম উৎপাদক ও পাইকারি ব্যবসায়ীসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেই তারা ডিমের ‘যৌক্তিক দাম’ নির্ধারণ করেছিল। সরকার নির্ধারিত এই দাম বাস্তবায়ন করতে ডিমের বাজারে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। যৌক্তিক মূল্যে ডিম বিক্রি না করলে প্রতিষ্ঠানটি ব্যবসায়ীদের জরিমানাও করছে। মূলত অভিযানের ভয়েই ডিম বিক্রি বন্ধ রাখার কথা জানিয়েছেন তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা।

তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ জানান, সরকার খুচরা পর্যায়ে ডিমের যে দাম নির্ধারণ করেছে, তার চেয়ে বেশি দাম দিয়ে খামারিদের কাছ থেকে ডিম কিনছেন তারা। এ কারণে বিক্রিও করতে হচ্ছে বাড়তি দামে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, গতকাল রাতে তারা পাইকারিতে ডিম বিক্রি করেছেন প্রতিটি ১২ টাকা ৫০ পয়সা দরে। এই ডিম তারা কিনেছেন ১২ টাকা থেকে ১২ টাকা ২০ পয়সা দরে।

আমানত উল্লাহ আরও জানান, তেজগাঁওয়ে দৈনিক ১৪-১৫ লাখ ডিম আসে। ঢাকায় ডিমের চাহিদা এক কোটি। তেজগাঁওয়ের বাইরে কিছু জায়গায় অনেকে ঠিকই উচ্চ দামে ডিম বিক্রি করছেন। কিন্তু বাড়তি দামে কেনাবেচার কারণে শুধু তাদের দায়ী করা হচ্ছে, অভিযান চালানো হচ্ছে। এ জন্য ডিম বিক্রি বন্ধ রেখেছেন তাঁরা।

ডিম ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আরও বলেন, ‘সরকারের নিয়ম না মানলে জরিমানা ও শাস্তি হতে পারে। তাই এখন বিক্রি বন্ধ রেখে কী করা যায়, সে উপায় খুঁজছি। আজকে (সোমবার) সকালে ভোক্তা অধিদপ্তরের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। তবে সেখানে সভা থাকায় কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলতে পারিনি। বিকেলে আবার কথা বলতে যাব।’

তবে তেজগাঁও থেকে নিয়মিত ডিম কেনেন এমন কয়েকজন খুচরা বিক্রেতা জানান, তেজগাঁওয়ে ডিমের গাড়ি না ঢুকলে তা শহরেরই ভিন্ন এলাকায় সরিয়ে নেওয়া হয়। আজ ভোরে এমন কিছু জায়গা থেকে খুচরা বিক্রেতারা ডিম কিনেছেন। তবে এ বিষয়ে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতির কারও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুমন হাওলাদার অভিযোগ করে বলেন, ঢাকা কেন্দ্রিক এক গোষ্ঠী সিন্ডিকেট করে ডিমের দাম বাড়িয়ে দেয়। কিন্তু এর সুফল প্রান্তিক পর্যায়ের খামারিরা পায় না। ক্রেতাদের বাড়তি দামে ডিম খেতে হয়। বাড়তি মুনাফার টাকা যায় সিন্ডিকেটের পকেটে।

সরকারের নজরদারি এবং আমদানির খবরে ডিমের দাম কিছুটা কমলেও তা খুব একটা স্থায়ী হবে না বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, ডিমের দাম এখন কিছুটা কমে আসলেও আবারও বেড়ে যাবে। সরকারের উচিত উৎপাদন পর্যায়ে খরচ কমিয়ে আনতে কার্যকারী পদক্ষেপ নেওয়া। এর পাশাপাশি অসাধু সিন্ডিকেট ভাঙতে কঠোর হওয়ার পরামর্শ তাদের।

ডিমের দাম বাড়ার সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলায় সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বন্যা একটি বড় কারণ বলছেন তারা। বন্যার কারণে ডিমের সরবরাহ কমেছে বলছেন খাত সংশ্লিষ্টরা।

বাংলাদেশ এগ প্রোডিউসারস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি তাহের আহমেদ সিদ্দিকী বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ডিম উৎপাদনে পরিপূরক খাদ্যের দাম কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। ডিমের উৎপাদন খরচ না কমলে ডিমের দাম কমবে না।

শেষ দু’বছর দেশের বাজারে ডিমের দাম চড়া। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) হিসেব বলছে, ২০২২’র শুরু দিকে ডিমের ডজন বাজারে ছিল ৮০ থেকে ১১০ টাকার মধ্যে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পর কয়েক মাসের ব্যবধানে তা গিয়ে ঠেকে ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকায়। ২০২৩ সালে ডিসেম্বরে এই ডিমের দাম দেড়শ’ টাকা পার হয়। এরপর আর দাম তেমন একটা কমেনি। সর্বশেষ চলতি সপ্তাহের শুরুতে ডিম ১৮০-১৯০ টাকা ডজনে গিয়ে ঠেকে।

ভারতের চেয়ে দাম বেশি যে কারণেবাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন হিসাব বলছে, ডিম ও মুরগির উৎপাদনে ৭৫ শতাংশ খরচ খাবারের। ভারত ও বাংলাদেশে এই খরচের পার্থক্য অনেক বেশি জানিয়ে সংগঠনের নেতারা বলছেন, খাবারের দাম কমালেই কেবল ডিম ও মুরগির দাম কমানো সম্ভব।

এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ পোল্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, ভারতে প্রতি কেজি ফিডের দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় ৩৬ টাকা, আর আমাদের দেশে দাম ৬০ টাকা, প্রায় দ্বিগুণ। ভারতে বাচ্চার দাম ২৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩৫ টাকা, আমাদের দেশে বর্তমানে ৮০ টাকা। কখনও কখনও ১২০ টাকা পর্যন্ত দাম উঠে যায়।

ভারতের তুলনায় বাংলাদেশে মুরগির ওষুধের দামও তিন গুণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে যে ডিমের উৎপাদন খরচ প্রতিটি ৫ টাকার আশপাশে, বাংলাদেশে সেটা সাড়ে ১০ টাকার বেশি হবে কেন। ভারতে ব্রয়লার মুরগির উৎপাদন খরচ ভারতে ৮২ টাকা, বাংলাদেশে তা কেন ১৭০ টাকা হবে। এর প্রধান কারণ, পোল্ট্রি খাদ্যের দাম। পোল্ট্রি খাদ্যশিল্পে ‘সিন্ডিকেট’ রয়েছে।

জুন মাসের প্রথম সপ্তাহে ভারতে প্রতি ডজন ডিমের দাম ছিল বাংলাদেশি মুদ্রায় ৮১ থেকে ৯৬ টাকা। পাকিস্তানে ছিল ৭৩ থেকে ১১৮ টাকা। বাংলাদেশে ওই সময় ডিম বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকায়।জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশে এখন দৈনিক ডিমের চাহিদা ৫ কোটি পিস। পোল্ট্রি খাতের উদ্যোক্তাদের সংগঠন বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের (বিপিআইসিসি) হিসাবে, দেশে দৈনিক ডিমের উৎপাদন সাড়ে ৪ কোটি পিস। দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বন্যায় ৫০ লাখ পিস ডিমের উৎপাদন কম হওয়ার কারণে উৎপাদন নেমেছে ৪ কোটিতে। অন্যদিকে ভারত থেকে আনার অনুমতি দেওয়া হয়েছে সাড়ে চার কোটি। অর্থাৎ ভারত থেকে আনা ডিমে চলবে মাত্র একদিন।

আমি তো মেশিন দিয়ে ডিম বানাতে পারব না -বাণিজ্য উপদেষ্টাবাজারে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ না থাকায় ডিমের দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, মেশিন দিয়ে তো ডিম বানানো যাবে না।গতকাল সোমবার রাজধানীর কারওয়ানবাজারে ডিম, ব্রয়লার মুরগিসহ অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম ও সরবরাহ পরিস্থিতি তদারকি শেষে এ কথা জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, বাজারে ডিমের চাহিদা সাড়ে চার থেকে পাঁচ কোটি। বাজারে চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নেই। ডিম তো আর আমি মেশিন দিয়ে তৈরি করতে পারব না। বাজারে সরবরাহ নেই, তাই দাম বেড়েছে বলে জানান বাণিজ্য উপদেষ্টা।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version