শীতকালে দেশের বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সংকট প্রকট আকার ধারণ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ঢাকাসহ আশপাশের এলাকাগুলিতে নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ বিঘ্নিত হচ্ছে, আর শিল্পাঞ্চলেও গ্যাসের অভাব স্থায়ী সমস্যায় পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শীতকালে চাহিদা বেড়ে যাওয়ার ফলে ঘাটতিও বাড়বে, যদি এলএনজি আমদানি পর্যাপ্ত পরিমাণে অব্যাহত না রাখা যায়।
বর্তমানে দেশে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা প্রায় ৪ হাজার মিলিয়ন ঘনফুট। দেশীয় উৎস এবং আমদানিকৃত এলএনজি মিলিয়ে প্রতিদিন ২ হাজার ৯০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে। এতে দৈনিক প্রায় ১ হাজার ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট ঘাটতি দেখা দিচ্ছে। পেট্রোবাংলার তথ্যমতে, শীতের চাহিদা মেটাতে সরকারের আরও ১১টি এলএনজি কার্গো আমদানির পরিকল্পনা রয়েছে, যা সংকট কিছুটা কমাবে। তবে, সম্পূর্ণ চাহিদা পূরণ সম্ভব হবে না।
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির এক কর্মকর্তা জানান, পেট্রোবাংলা থেকে গ্যাস সরবরাহ বাড়ালে তিতাসও সরবরাহ বাড়াতে পারবে। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান জনেন্দ্রনাথ সরকার জানান, আগামী বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত গ্যাসের স্বাভাবিক সরবরাহ নিশ্চিত করতে অন্তত ১০৫টি এলএনজি কার্গো আমদানির প্রয়োজন, যার জন্য সরকারকে ১৬ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হবে।
এদিকে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান জানান, শীতকালের আগেই সংকট নিরসনে উদ্যোগ নেয়া হবে। তবে, এলএনজি আমদানির জন্য প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয় হওয়ায় দেশের অভ্যন্তরে গ্যাস অনুসন্ধান কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে। ২০২৫ সাল পর্যন্ত ৫০টি কূপ খননের পরিকল্পনা রয়েছে, যার মধ্যে ইতোমধ্যে ১৫টি থেকে প্রতিদিন ১৭৬ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস পাওয়া যাচ্ছে।
কর্তৃপক্ষের মতে, গ্যাস সংকট উত্তরণে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহের বিল নিয়মিত আদায়ও অপরিহার্য।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য