আ.লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে বিএনপি পার্লামেন্টে বসতে চায় কি-না এ বিষয়ে দলটির অবস্থান পরিষ্কারের আহ্বান জানিয়েছেন ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা। রোববার (৩ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে 'ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতা' ব্যানারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, বিএনপির মহা সচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের একটি বক্তব্য আমাদের দৃষ্টি গোচর হয়েছে। যেখানে তিনি বলেছেন বিএনপি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ চায় না। আ.লীগ, জাতীয় পার্টিসহ ফ্যাসিবাদের দোসরদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা নিষিদ্ধের লড়াইকে দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেছেন। ওনার কাছে ভুল তথ্য থাকায় এমন কথা বলেছেন নাকি এটা তাদের দলীয় অবস্থান?
বিএনপিকে অবস্থান পরিস্কার করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, টিএসসিতে শত শত শহীদ-আহত পরিবারের লোকজন এসে বিচারের দাবি জানাচ্ছে, তারা আ.লীগ ও তার দোসরদের পুনরুত্থান আর চান না। যারা গুম, খুন হত্যা করেছে তাদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। জাতীয় পার্টি রাজনৈতিক অপতৎপরতা বন্ধের দাবি জানাচ্ছি। আপনারা বৃহৎ রাজনৈতিক দল। আপনারা যদি আ.লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নিয়ে পার্লামেন্টে বসতে চান? জনগণ আপনাদের সুস্পষ্ট অবস্থান জানতে চায়।
বিএনপি দুর্বল বিরোধী দল নিয়ে নির্বাচনের খেলা খেলতে চাচ্ছে কি-না এমন প্রশ্ন ছুঁড়ে তিনি বলেন, এই মুহুর্তে আ.লীগ ও জাতীয় পার্টি হলো সবচেয়ে দুর্বল বিরোধী দল। এদের নির্বাচনে এনে নিজেদের বিজয় সুনিশ্চিত করার জন্য বিএনপি কোনো খেলা খেলতে চাচ্ছে কি-না তা বিএনপির কাছে প্রশ্ন রইলো।
তিনি আরও বলেন, জাতীয় পার্টি ইনিয়েবিনিয়ে আ.লীগ ফিরিয়ে আনার কাজ করছে। গতকাল তারা রংপুরে লাঠিসোঁটা নিয়ে জঙ্গি মিছিল করেছে। তাদের সমাবেশে আ.লীগ সারাদেশ থেকে লোক পাঠাচ্ছে, জি এম কাদের এটা স্বীকারও করেছেন। জাতীয় পার্টি অফিসের সামনে মশাল মিছিলে আ.লীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা হামলা চালিয়েছে। অথচ সরকার কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। ২৪ এর নির্বাচনে যারা অংশ নিয়েছে, দুদকের মাধ্যমে সকল এমপি-মন্ত্রীদের সম্পদের তদন্ত করার দাবিও জানান তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ফ্যাসিবাদী কাঠামোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদী দলগুলোর বিরুদ্ধে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কোনো যথাযথ ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছ। ছাত্রলীগকে যেভাবে গ্যাজেটের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা হয়েছে সেভাবে আওয়ামী লীগ,জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদী দলগুলোকে নিষিদ্ধ করুন, দোষীদের গ্রেফতার করুন। কেননা জনতার রায় হলো এই ফ্যাসিবাদী শত্রুদের নিষিদ্ধ করতে হবে।
তিনি বলেন, সরকারকে জনগণের ভাষা বুঝতে হবে। গণ অভ্যুত্থান আইন মেনে হয়নি তাই আইনের বাইরে গিয়ে সরকারকে একশন নিতে হবে। জাতীয় ঐক্যমতে সরকার /বিপ্লবী সরকার গঠন করতে হবে। গণভবনের মতো জাতীয় পার্টির কার্যালয়কে জুলাই স্মৃতি সংগ্রহশালা বানাতে হবে। সংবিধান পরিবর্তন করে ফ্যাসিবাদী প্রথার বিলোপ সাধন করতে হবে নাহলে জনগণকে ভুগতে হবে।
পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা দিয়ে তিনি বলেন, আগামীকাল (সোমবার) দুপুর দুইটায় টিএসসিতে আমরা আ. লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদী দলের নেতাদের প্রতীকী ফাঁসি দেব। সেখানে শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদের, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের,মহাপরিচালক মুজিবুল হক চুন্নুসহ ফ্যাসিবাদী নেতাকর্মীদের প্রতীকী ফাঁসি দেওয়া হবে।
এসময় সংবাদ সম্মেলনে ফ্যাসিবাদ বিরোধী ছাত্র শ্রমিক জনতার পক্ষে দুটি দাবি জানানো হয়- আ.লীগ, জাতীয় পার্টি ও ফ্যাসিবাদের দোসর যে দলগুলো গুম, খুন, গণহত্যা করেছে তাদের রাজনৈতিক অপতৎপরতা নিষিদ্ধ করতে হবে এবং আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
ভোরের আকাশ/ সু
মন্তব্য