আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় গতকাল বুধবার ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন। এনিয়ে দ্বিতীয় দফা জবানবন্দি দিলেন তিনি। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনের জবানবন্দি দেওয়া সম্পন্ন হয়নি। তার আরও জবানবন্দি নেওয়া হবে। এর আগে গত ৮ নভেম্বর ওই আদালতে প্রথম দফা জবানবন্দি দেন চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুন।
জুলাই-আগস্টের গণহত্যা মামলায় প্রথমবারের মতো কোনো সরকারি কর্মকর্তা জবানবন্দি দিচ্ছেন। জবানবন্দিতে ঠিক কি বলছেন তা জানা যায়নি। কঠোর গোপনীয়তার মধ্য দিয়ে এই জবানবন্দি নেওয়া হচ্ছে। তবে এই জবানবন্দির সময় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত টিমের সদস্যরা থাকছেন বলে জানা গেছে। তাদেও তত্ত্বাবধানেই এই জবানবন্দি চলছে। ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নাকি রাজসাক্ষী হিসেবে তিনি জবানবন্দি দিচ্ছেন তা এখনও স্পষ্ট নয়।
ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির গত ২৯ অক্টোবর তার ফেউজবুক পেইজে এক স্ট্যাটাস দেন। তাতে শুধুই লিখেন ‘রাজসাক্ষী’। সাংবাদিক সাগর-রুনী হত্যা মামলায় বাদীপক্ষের এই আইনজীবীর এই স্ট্যাটাস নিয়ে ব্যাপক কৌতূহলের সৃষ্টি হয়। এর কয়েকদিন পর কঠোর গোপনীয়তায় জবানবন্দি দেন সাবেক আইজিপি মামুন।
গতকাল সকালে কঠোর গোপনীয়তায় সাবেক আইজিপি মামুনকে কারাগার থেকে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থার সদস্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন। পরে একজন ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে মামুনের জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশনায় প্রায় আড়াই ঘণ্টা ধরে এই জবানবন্দি নেওয়া হয়। এর আগে গত ৮ নভেম্বর একই কায়দায় তার জবানবন্দি নেওয়া হয়।
গত ৪ সেপ্টেম্বর ঢাকার উত্তরা থেকে মামুনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাকে এ পর্যন্ত ১২৩ হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। তাকে কয়েক দফায় মোট ৬৬ দিন রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। ৮ অক্টোবর ঢাকার মহানগর হাকিম আদালত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকে কেন্দ্র করে রাজধানীর যাত্রাবাড়ী ও নিউমার্কেট থানায় দায়ের করা একাধিক মামলায় তাকে ৪৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগেও বিভিন্ন মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয় তাকে। চৌধুরী আব্দুল্লাহ আল মামুনকে একাধিক মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
চৌধুরী আব্দুল্লাহ মামুনের অবসরে যাওয়ার কথা ছিল দেড় বছর আগে। তারপরও তাকে চুক্তিতে আইজিপি করে রেখেছিলেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইজিপি হওয়ার আগে তিনি র্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। আইজিপি হিসেবে সর্বশেষ গত ৫ জুলাই আরও এক বছরের জন্য তার চুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল। তবে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর ৬ আগস্ট রাতে তার চুক্তি বাতিল করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য