-->

বছরে লোপাট ৩৬৫০ কোটি টাকা

মধ্যস্বত্বভোগীর কবলে ডিম

ভোরের আকাশ প্রতিবেদক
বছরে লোপাট ৩৬৫০ কোটি টাকা

অক্টোবর মাসের শুরুতে রেকর্ড ১৮০ টাকা ছুঁয়েছিল ডজনপ্রতি ডিমের দাম। সরকারের হস্তক্ষেপে দাম কিছুটা কমলেও এখনো আসেনি নিম্নবিত্তের নাগালে। ডিমের দাম কেন হঠাৎ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ে, সেটা নিয়ে অনুসন্ধানে পৌঁছা হয় প্রান্তিক খামারি থেকে ঢাকার বড় আড়তদার পর্যন্ত। এতে দেখা যায়, ডিমের দামে মধ্যস্বত্বভোগীদের একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ। উৎপাদক খামারিদের কোনো ভূমিকাই নেই। বিক্রির সময়ও খামারিরা জানেন না ডিমের দাম কত করে ধরা হবে। সরবরাহ যেমনই হোক, নিজেদের বিনিয়োগ নিরাপদ রাখতে মোবাইলে মেসেজের আশ্রয় নেন আড়তদাররা। মেসেজের মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হয় বিভিন্ন পর্যায়ের দাম। বিভিন্ন পন্থায় খামারিদের জিম্মি করে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখিয়ে চলছেন ডিম সিন্ডিকেটের সদস্যরা। অনেক সময় ট্রাকে থাকতেই হাতবদল হয়ে বেড়ে যায় দাম।

প্রতিটি ডিমের দামের দুই টাকাই চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, দেশে প্রতিদিন গড়ে পাঁচ কোটি ডিম উৎপাদন হয়। এই হিসাবে প্রতিদিন প্রায় ১০ কোটি টাকা ও বছরে প্রায় তিন হাজার ৬৫০ কোটি টাকা তুলে নিচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীরা। দেশের সবচেয়ে বেশি ডিম উৎপাদন হয় টাঙ্গাইলে; এর মধ্যে আবার উৎপাদনের হাব ঘাটাইল উপজেলা। প্রতিদিন প্রায় ১১ লাখ ডিম সেখান থেকে আসে ঢাকার বিভিন্ন বাজারে। খামারি আছে সাড়ে নয়শো। প্রান্তিক খামারি, স্থানীয় আড়তদার, মিডিয়া (মধ্যস্বত্বভোগী), ঢাকার আড়তদার ও পাইকারদের হাত ঘুরে ডিম পৌঁছায় ভোক্তার হাতে। পাঁচ দফা হাতবদলে ১১ টাকা ১০ পয়সার ডিম ভোক্তাকে কিনতে হয় ১৩ টাকা ৩৩ পয়সায় (২৯ অক্টোবরের দাম)।

ঘাটাইল উপজেলার জামুরিয়া ইউনিয়নের কর্ণা গ্রাম। মধ্য কর্ণায় বিল্লাল হোসেনের ছয়টি শেডে ১৭ হাজার লেয়ার মুরগি। প্রতিদিন ডিমের উৎপাদন ১২শ থেকে ১৩শ পিস। ঘাটাইলের স্থানীয় আড়তদার মোস্তফা এন্টারপ্রাইজের কর্মীরা দুদিন পরপর এসে খামারে উৎপাদিত ডিম নিয়ে যান। ২৯ অক্টোবরও ওই আড়তে আড়াই হাজার পিস ডিম দেন বিল্লাল। কিন্তু তখন তিনি ডিমের দাম কত পাবেন জানেন না। বিকেলে মোস্তফা এন্টারপ্রাইজ থেকে খামারি বিল্লাল হোসেনকে মোবাইলে জানানো হয়, প্রতি পিস ডিম ১১ টাকা ১০ পয়সা দর নির্ধারণ হয়েছে। এরপর ওই আড়তে গিয়ে কথা হয় স্বত্বাধিকারী মোস্তফা কামালের সঙ্গে। তিনি বলেন, ঢাকা থেকে খামারির এ রেট এসেছে। ওই রেটের চেয়ে ২০ পয়সা কমিশন রেখে আমি ডিম বিক্রিও করেছি। এর মধ্যে প্রায় ১০ পয়সা ক্যারিং কস্ট (পরিবহন খরচ) ও ডিম ভাঙার খরচ। কিছুক্ষণ পরে ট্রাকে সেগুলো ঢাকায় পাঠানো হবে।

ঢাকায় কোন আড়তে ডিম বিক্রি করা হলো আর দাম কীভাবে নির্ধারণ হলো জানতে চাইলে মোস্তফা কামাল বলেন, আমরা চার-পাঁচটা আড়তে রেট নেই। এরপর যেখানে ভালো দাম পাই, সেখানে বিক্রি করি। আর খামারিদের রেট আসে মেসেজের মাধ্যমে। বিল্লাল হোসেনসহ বেশকিছু খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এখন প্রতিটি ডিম উৎপাদনে প্রায় সাড়ে ১০ টাকা খরচ হচ্ছে। বাজার ভালো থাকায় প্রতিটি ডিমে ওই দিন ৬০ পয়সা লাভ পাচ্ছেন তারা। তবে গত সপ্তাহ থেকে দ্রুত ডিমের দাম কমছে। এ লাভ বেশি দিন টিকবে না বলে শঙ্কা তাদের। খাতা-কলমে বিল্লাল হোসেন ডিম উৎপাদনের যে হিসাব দিয়েছেন তাতে দেখা যায়, তার খামারে প্রতিটি মুরগির জন্য দিনে ১২০ গ্রাম খাবার লাগে, এর দাম ৭ টাকা। একটি মুরগি ডিম দেওয়ার আগে ২২ থেকে ২৮ সপ্তাহ শুধু খাবার খায়, সে জন্য তার খরচ দিনে আরও ২৫ পয়সা বাড়ে। লেয়ারের বাচ্চার দাম বাবদ যোগ হয় আরও ২৫ পয়সা। এক হাজার মুরগির শেডে পানি তোলা ও বিদ্যুৎ খরচ মাসে চার হাজার টাকা, ওষুধের খরচ আরও প্রায় ১০ হাজার টাকা। খামারের জায়গার ভাড়া, ১২ জন শ্রমিকের খরচ আলাদা রয়েছে। এছাড়া ব্যাংক ঋণের সুদসহ অন্যান্য খরচের হিসাব যুক্ত হয় প্রতিটি ডিমের দামে। বিল্লাল হোসেন বলেন, এখন ডিমে কিছুটা লাভ হচ্ছে। কিন্তু যখন ডিমের দাম ৮ টাকায় নেমে যায়, তখন তো উৎপাদন খরচ কমে না। লোকসান দিতে হয়। দেড় কোটি টাকা বিনিয়োগ করে এখানে নিজে প্রতিদিন ১৪ ঘণ্টা পরিশ্রম করি। মাঝে মধ্যে এর প্রাপ্যও পাই না।

বড় বিনিয়োগ করে ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করছেন এসব খামারি। কিন্তু তাদের উৎপাদিত ডিমের দাম ঠিক করেন অন্যরা। আড়তদার মোস্তফার কথায় বোঝা গিয়েছিল তিনি তার কেনা ডিমের মুনাফা ঠিক করেছেন দরকষাকষির মাধ্যমে, কিন্তু খামারিরটা হয়েছে ‘অদৃশ্য’ মেসেজে। আড়তদার মোস্তফা ওইদিন ডিমের দামের মেসেজ পেয়েছিলেন মুন্সীগঞ্জের এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে। তবে তিনি ওই ব্যবসায়ীর নাম প্রকাশ করেননি। বাজারের হালচাল বুঝে এই অসাধু ব্যবসায়ীরা খামারিকে জিম্মি করে নিজেদের সুবিধামতো দামে ডিম কিনছেন মেসেজের মাধ্যমে। এতে নিশ্চিত হচ্ছে তাদের মুনাফা, লোকসানের ঝুঁকি থাকছে না।

ঘাটাইলের জামুরিয়ার খামারি সুজা মিয়া বলেন, ঢাকার ব্যবসায়ীরা আড়তদারদের দামের যে মেসেজ দেন, ওই দামেই ডিম বিক্রি করতে হয়। উৎপাদন করেও আমরা দাম নির্ধারণ করতে পারি না। এটা শুধু ডিমের ক্ষেত্রে হয়, অন্য কোনো পণ্যে হয় না। ডিমের দাম বাড়ার পেছনের সবচেয়ে বড় কারণ এটি।

ঘাটাইলের ডিমের পরিস্থিতি দেখে ও তথ্য নিয়ে কয়েকদিন অনুসন্ধান চালানো হয় ঢাকার তেজগাঁও আড়ত ও কাপ্তানবাজারে। দেখা যায়, তেজগাঁও আড়তে একটি বড় সিন্ডিকেট রয়েছে, যেখানে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির বেশ কয়েকজন নেতা জড়িত। তারা প্রতিদিন বিকেল থেকে সন্ধ্যার মধ্যে বসে এ দাম ঠিক করছেন, যা সারাদেশে ছড়িয়ে দিচ্ছে তাদের অনুসারী কয়েকশ ব্যবসায়ী ও ডিম কেনাবেচার ‘মিডিয়া’। ডিমের দাম বাস্তবায়ন করেন ছোট পর্যায়ের ব্যবসায়ীরা। সারাদেশে এরা বিস্তৃত। তাদের মধ্যে বেশিরভাগের নেই কোনো আড়ত ও খামার। তাদের বলা হয় ‘মিডিয়া’।

রাজধানীতে ডিম বিক্রির অন্যতম বড় পাইকারি বাজার তেজগাঁও আড়ত। তেজগাঁওয়ে দৈনিক ১৪ থেকে ১৫ লাখ ডিম আসে। ঢাকায় ডিমের চাহিদা এক কোটি। দেশের বিভিন্ন স্থানের খামার থেকে ট্রাকে এখানে ডিম আসে। এরপর তেজগাঁও থেকে ঢাকার বিভিন্ন খুচরা বাজার ও পাড়া-মহল্লায় ডিম সরবরাহ হয়। তবে সবচেয়ে বড় বাজার হওয়ার কারণে তেজগাঁওয়ে ডিমের দাম সারাদেশের খুচরা বাজারে প্রভাব ফেলে। এ সুযোগ নিয়ে প্রতিদিন কোটিখানেক ডিমের কারবার করছেন এখানকার মাত্র কয়েকজন ব্যবসায়ী। তারা মূলত প্রান্তিক এলাকা থেকে সংগৃহীত ডিম কিনে পাইকারি বড় ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। ডিম কেনাবেচার কোনো রসিদ থাকে না কারও কাছে। লেনদেন হয় খুদে বার্তায় পাঠানো ‘ডিজিটাল রসিদে’।

এদিকে এসব ব্যবসায়ীর নামে দীর্ঘসময় ধরে অভিযোগ করে আসছে প্রান্তিক খামারিদের সংগঠন বাংলাদেশ পোলট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএ)। সংগঠনের সভাপতি মো. সুমন হাওলাদার বলেন, সুনির্দিষ্ট তথ্য-প্রমাণ দিয়ে অনেক আগে থেকে বলা হচ্ছে যে অবৈধভাবে ডিমের দাম নির্ধারণ করে ডিম ব্যবসায়ী সমিতিগুলো। বেচাকেনার রসিদ ব্যবহার করে না, যে কারণে প্রতিদিন ডিমের দাম ওঠানামা করে। বাজার অস্থিতিশীল হয়। এ তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট প্রতিটি দপ্তরে আমি দিয়েছি।

সুমন হাওলাদার বলেন, এর পেছনে নিশ্চয় বড় কোনো সিন্ডিকেট কাজ করছে। প্রতিযোগিতা কমিশনে এদের নামে মামলাও হয়েছে বাজার সিন্ডিকেট করার কারণে। তারপরেও তারা বহাল তবিয়তে। এরা প্রান্তিক খামারিদের ধ্বংস করে নিজেরা কোটি কোটি টাকার সম্পদ গড়ছে। খামারিদের কয়েক পয়সা বাড়িয়ে দিয়ে তারা প্রতিটি ডিমে দুই টাকা হাতিয়ে নেন। সব সময় তারা এভাবে খামারির ডিমের দাম নির্ধারণ করেন, যাতে তাদের হাতে দুই টাকা থাকে। এতে তারা বছরে হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট করছেন। খামারি থেকে দু-চার দিন পরপর ডিম কেনেন আড়তদাররা। খামারি চাইলেও অন্য কারও কাছে ডিম বিক্রি করতে পারেন না, একই পাইকারের কাছে ডিম বিক্রি করতে হয়।

এ বিষয়ে ঘাটাইলের কর্ণা এলাকার সবচেয়ে পুরোনো খামারি কোরবান আলী বলেন, একদিন ভালো দাম পেয়ে অন্যখানে ডিম বিক্রি করলে যখন দাম কমে যাবে, তখন আগের পাইকার ডিম নেবে না। হাজার হাজার ডিম পচে নষ্ট হবে। এ ভয়ে বাধ্য হয়ে সবাই নির্ধারিত খামারির কাছে ডিম বিক্রি করে। এছাড়া অনেক খামারি ডিম উৎপাদনের আগেই আড়তদার ও ডিলারদের কাছ থেকে খাদ্যসহ অন্য আর্থিক সুবিধা নেন। তারা অন্য কোথাও ডিম বিক্রি করতে পারেন না।

সাত বছর ঘাটাইলে কর্মরত উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা বাহাউদ্দীন সারোয়ার রিজভী বলেন, খামারিদের স্বাধীন করতে হবে। এরা জিম্মি। অন্যের টাকায় শুধু কামলা দিচ্ছে।

ঘাটাইল থেকে আড়তদার মোস্তফা কামালের ডিম কোথায় যাচ্ছে, কে বা কারা এটা কিনছেন সেটা জানার চেষ্টা করা হয়। আড়তদার ট্রাকে ডিম দেওয়ার পরে দুবার হাতবদলের খোঁজ পাওয়া যায়। তৃতীয়জন কাপ্তানবাজার ও তেজগাঁও আড়তে নেন। এরপর ঢাকার পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ী হয়ে যায় ভোক্তার কাছে। আড়তদার মোস্তফা মুন্সীগঞ্জের যে ব্যবসায়ীর কাছে ডিম বিক্রি করেন, তিনি ডিম কিনেছিলেন এক ট্রাক, দেড় লাখ পিস। তিনি এর মধ্যে চট্টগ্রামে ৫০ হাজার ডিম বিক্রি করেছেন। বাকি এক লাখ পিস বিক্রি করেন কাপ্তানবাজারে মাসুদ মোল্লা নামে এক ব্যবসায়ীর কাছে। সেখান থেকে কিছু ডিম আবার তেজগাঁও আড়তেও এসেছে। এরপর ভ্যানে কিছু গেছে শান্তিনগর ও নিউমার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা আবার দোকান থেকে পাইকারি ও খুচরায় পাড়া-মহল্লার দোকানে বিক্রি করেন। এরপর সেটা যায় ভোক্তার কাছে।

জানা গেছে, ডিমের দামের মেসেজের হোতা তেজগাঁওয়ের ব্যবসায়ীরা। যার মধ্যে তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতির সাবেক সভাপতি মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ, মো. হানিফ, নাসির উদ্দিন, আল-আমিনসহ ১৪ থেকে ১৭ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। এছাড়া আছেন চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী দেলোয়ার হোসেন, শাহজাহান, লিটন, ইমন, মাইনুদ্দিন, দিদার, সেলিমসহ অন্যরা। পাশাপাশি ঢাকার কাপ্তানবাজারের মাসুদ, জহিরসহ নারায়ণগঞ্জের আহম্মদ আলীর কথাও জানা যায়। তবে বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করে মোহাম্মদ আমানত উল্লাহ বলেন, মেসেজ দিয়ে ডিমের দাম আমরা নির্ধারণ করি না। এটা কে করে সেটাও জানি না। আমরাও এ নিয়ে ভোক্তা অধিদপ্তরসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ করেছি। তাহলে প্রতিদিন এসব ব্যবসায়ীর মধ্যে একটি বড় অংশ কী বিষয়ে মিটিং করেন- এমন প্রশ্নের জবাবে আমানত উল্লাহ বলেন, আমরা বাজার নিয়ে কোথাও বসি না। মাঝেমধ্যে নিজেদের ব্যক্তিগত সমস্যা নিয়ে মিটিং হয়। তিনি বলেন, মেসেজ-ট্যাসেজ এগুলো ভুয়া। যারা করছে তারা ভণ্ডামি করছে।

ডিমের দাম নির্ধারণে ভূমিকা রাখেন ‘মিডিয়া’ ব্যক্তিরাও। অথচ তাদের মধ্যে বেশিরভাগেরই নেই কোনো আড়ত ও খামার। এই ‘মিডিয়া’ হিসেবে কাজ করা ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছেন নরসিংদীর আলমগীর, ভৈরবের রাশেদ, ময়মনসিংহের সাইফুল তালুকদার, মনির তালুকদার, আবু সাঈদ, আজমল, রানা, আলামিন, রহম আলী, আরিফ হোসেন ও কামাল, টাঙ্গাইলের কালাম ও মঞ্জু মিয়া, গাজীপুরের বছির, আবু কালাম, রানা মিয়া, ফারুক মিয়া, হারুন ও শাকিল। ডিমের দাম নির্ধারণের বিষয়ে তাদের কয়েকজনকে ফোন দিলেও অধিকাংশই মন্তব্য করতে রাজি হননি।

কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ‘ডিমের কয়েক দফা হাতবদল খুব বড় সমস্যা। এটা আমরা বহুবার বলে আসছি। আবার উৎপাদন ক্ষেত্রে খামারিরা যে দাদন চক্রে আটকে আছে সেটা নিয়েও বলছি। কিন্তু এক্ষেত্রে যতটা গুরুত্ব দেওয়া দরকার ছিল, কখনো সরকার বা কেউ সেটা দেখায়নি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপরিচালক (খামার) শরিফুল হক বলেন, ডিমের বাজার ব্যবস্থাপনায় প্রান্তিক খামারি, মাঝারি খামারি এবং বৃহৎ খামারি অন্তর্ভুক্ত। ডিমের মূল্য উল্লেখ করে এসএমএস দেওয়ার বিষয়টি বিভিন্ন ডিম ব্যবসায়ী সমিতিও স্বীকার করেছে। তবে প্রমাণিত হয়নি কখনো। এটা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে একাধিকবার তথ্য দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন বৈঠক থেকে। তারপরও বিষয়টি নিয়ে ধোঁয়াশা আছে। তিনি বলেন, পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে ক্যাশমেমো দিতে ইতোমধ্যে ব্যবসায়ীদের বলা হয়েছে। এ বিষয়ে লিখিত নির্দেশনা জারির কাজ চলছে।

কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের উপরিচালক মোহাম্মদ রেজা আহমেদ খান বলেন, প্রাইস ফিক্সিং আইনসম্মত নয়। কৃষি বিপণন আইন, ২০০৮ মোতাবেক রসিদ ছাড়া কেউ পণ্য বিক্রি করতে পারবে না। উৎপাদনকারীর কাছ থেকে যারা ডিম কেনেন তারা সেই ক্রয়মূল্য প্রকাশ করেন না। এটা বেআইনি।

 

ভোরের আকাশ/রন

মন্তব্য

Beta version