বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া এবং দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় চট্টগ্রামে করা মামলা বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
বিচারপতি এ কে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ রিফাত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল বুধবার এ রায় দেন। আদালতে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার চৌধুরী ইশরাক আহমেদ সিদ্দিকী ও আজমল হোসেন।
বিএনপির বহিষ্কৃত নেতা চৌধুরী তানভীর আহমেদ সিদ্দিকীর ছেলে চৌধুরী ইরাদ আহমেদ সিদ্দিকীর কথিত ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার হুমকি এবং জাতির জনককে অবমাননার অভিযোগে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ২০১৬ সালের ৩ অক্টোবর চট্টগ্রামের আদালতে তথ্যপ্রযুক্তি আইন-২০০৬ এর (সংশোধিত-২০১৩) ৫৭ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়। চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সম্পাদক আব্দুল কাদের সুজন এ অভিযোগ দায়ের করেন। এরপর আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তা মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে বোয়ালখালী থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
ইরাদের নামে খোলা একটি ফেসবুক পেইজ থেকে ২০১৬ সালে ইংরেজিতে একটি পোস্ট দেওয়া হয়। এর বাংলা অর্থ করলে দাঁড়ায়, ‘শেখ হাসিনাকে হত্যা সম্ভব নয়, কারণ শেখ হাসিনার চারদিকে ভারতের বিশেষ নিরাপত্তার চাদর রয়েছে। ভারতীয়রা সরাসরি শেখ হাসিনার নিরাপত্তা বিধান করেছে। কারণ শেখ হাসিনা বাংলাদেশে ভারতের স্বার্থের প্রতিনিধিত্ব করছেন। শেখ হাসিনাকে হত্যা ছাড়া বাংলাদেশের ক্ষমতার ভারসাম্য ও গণতন্ত্র ফেরানো সম্ভব নয়।’ এর আগে একই পেইজ থেকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে ব্যঙ্গাত্মক ছবিও পোস্ট করা হয় বলে অভিযোগ। এরপর বিভিন্ন স্থানে ইরাদের বিরুদ্ধে কয়েকটি মামলা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে আসামি করে এই মামলা করা হয়। পরে মামলা বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়। হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এই রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি শেষে গতকাল মামলাটি বাতিল করে রায় দেন।
রায়ের পর আইনজীবীরা বলেন, একজনের ফেসবুক স্ট্যাটাসকে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে হয়রানি করতে মামলা করা হয়েছে। মামলার বিষয়বস্তুর সঙ্গে আসামিদের বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। দীর্ঘদিনেও আসামিদের বিরুদ্ধে কোনো তথ্য-প্রমাণ হাজির করতে পারেনি বাদী। শুধুমাত্র রাজনৈতিক হয়রানির উদ্দেশ্যে এ মামলা করা হয়েছে।
ভোরের আকাশ/রন
মন্তব্য