-->
শিরোনাম

কৃষিতে মনোযোগ সরকারের বিনিয়োগে আগ্রহী রাশিয়াও

সাজেদা হক
কৃষিতে মনোযোগ সরকারের
বিনিয়োগে আগ্রহী রাশিয়াও

কৃষি নির্ভর বাংলাদেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পন্ন বেশ কয়েক বছর ধরেই। এজন্য প্রতিটি সরকারকে বিশেষ মনোযোগ দিতে হয়েছে। বর্তমান সরকারও এর ব্যতিক্রম নয়। কৃষিতে মনোযোগ বাড়িয়েছেন তারাও। অন্যদিকে বাংলাদেশের কৃষিতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়েছে রাশিয়াও।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের তিনটি এবং শিল্প মন্ত্রণালয়ের চারটিসহ মোট সাতটি প্রস্তাবের বিপরীতে ২ লাখ ৩০ হাজার টন বিভিন্ন ধরনের সার আমদানি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ের মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থ উপদেষ্টা সালহউদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে কমিটির সভায় এই অনুমোদন দেওয়া হয়। এতে ব্যয় হবে ৯০০ কোটি ৮৬ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

সিঙ্গাপুর, রাশিয়া, কানাডা, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), কাতার এবং সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠান থেকে এই সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় রাশিয়া থেকে চতুর্থ লটে ৩০ হাজার টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দেশটির সঙ্গে সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে রাশিয়া থেকে এই সার আমদানিতে সারের বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ব্যয় হবে ৮৬ লাখ ৯২ হাজার ৫০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১০৪ কোটি ৩১ লাখ টাকা। প্রতি টন এমওপি সারের দাম পড়বে ২৮৯.৭৫ মার্কিন ডলার।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা থেকে সপ্তম লটে ৪০ হাজার টন মিউরেট-অব-পটাশ (এমওপি) সার আমদানির প্রস্তাব অনুমোদ দেওয়া হয়েছে। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে কানাডা থেকে এই সার আমদানিতে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ব্যয় হবে ১ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। প্রতি টন এমওপি সারের দাম পড়বে ২৮৯.৭৫ ডলার।

কৃষি মন্ত্রণালয়ের আরও এক প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির আওতায় কানাডা থেকে অষ্টম লটে ৪০ হাজার টন এমওপি সার আমদানির প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। সার আমদানি চুক্তিতে উল্লিখিত মূল্য নির্ধারণ পদ্ধতি অনুসারে কানাডা থেকে এই সার আমদানিতে বর্তমান আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যে ব্যয় হবে ১ কোটি ১৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩৯ কোটি ৮ লাখ টাকা। প্রতি টন এমওপি সারের দাম ধরা হয়েছে ২৮৯.৭৫ ডলার।

শিল্প মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে প্রথম লটে ৩০ হাজার টন (১০%) বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে চুক্তির মাধ্যমে ৩ লাখ ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানির চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি মোতাবেক সারের মূল্য নির্ধারণ করে প্রথম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৭ লাখ ৪৯ হাজার ৯০০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা। প্রতি টন ইউরিয়া সারের মূল্য ধরা হয়েছে ৩৫৮.৩৩ মার্কিন ডলার। সার আমদানির বাকি দুটি প্রস্তাবও শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়। এর মধ্যে একটি প্রস্তাবে সৌদি আরব থেকে অষ্টম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক প্রিল্ড ইউরিয়া সার আমদানির অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। সৌদি আরবের সঙ্গে চুক্তি অনুসারে সারের মূল্য নির্ধারণ করে ৩০ হাজার টন বাল্ক প্রিল্ড ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে। প্রতি টন ৩৬৫ মার্কিন ডলার হিসেবে মোট ব্যয় হবে ১ কোটি ৯ লাখ ৫০ হাজার ডলার।

বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১৩১ কোটি ৪০ লাখ টাকা। এছাড়া সৌদি আরব থেকে নবম লটে ৩০ হাজার টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার আমদানির আর একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রতি টন ৩৫৮.৩৩ মার্কিন ডলার হিসেবে ৩০ হাজার টন ইউরিয়া আমদানিতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৭ লাখ ৪৯ হাজার ৯০০ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২৮ কোটি ৯৯ লাখ ৮৮ হাজার টাকা।

এদিকে, বাংলাদেশে ডিএপি (ডাই অ্যামোনিয়াম ফসফেট) ও পটাশ (মিউরেট অব পটাশ) সার রপ্তানি করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে রাশিয়া। প্রাথমিকভাবে ৪০ হাজার টন ডিএপি ও ৩০ হাজার টন পর্যন্ত পটাশ সার রপ্তানির বিষয়ে আগ্রহের কথা জানিয়েছে দেশটি। কৃষি উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করে এ আগ্রহের কথা জানান ঢাকায় নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত আলেকজান্ডার ভি মন্টিটস্কি। বাংলাদেশের কৃষি খাতে অগ্রগতির প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূত বলেন, দেশের কৃষি খাতে রাশিয়ার সহযোগিতা বিশেষ করে সার রপ্তানির বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী রাশিয়া। জবাবে কৃষি উপদেষ্টা সার রপ্তানির এ প্রস্তাব স্বাগত জানান। উপদেষ্টা সাশ্রয়ী মূল্যে স্বল্প সময়ে উন্নতমানের সার সরবরাহকারী দেশের সঙ্গে জিটুজি পদ্ধতিতে আমদানির বিষয়ে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানান।

 

ভোরের আকাশ/মি

মন্তব্য

Beta version